রবিবার, ৩ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ ০০:০০ টা

নেশার পেশায় ওরা

মির্জা মেহেদী তমাল

নেশার পেশায় ওরা

একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমবিএ শেষ করেছেন দুই বন্ধু ইমরানুল হক ও তাইজুল খান। চাকরি খুঁজছেন। প্রতিদিন পত্রিকায় প্রকাশিত বিজ্ঞাপন দেখে চাকরির জন্য আবেদন করেন। কিন্তু তাদের চাকরি হয় না। হতাশায় পেয়ে বসে তাদের। নিজেদের খরচ চালাতেও তাদের হিমশিম খেতে হচ্ছে। এক সময় তারা বন্ধুদের পাল্লায় পড়ে ইয়াবায় আসক্ত হয়ে পড়ে। প্রতিদিন সময় মতো বন্ধুরা মিলে ঢাকার বিভিন্ন স্থানে যেয়ে ইয়াবা কিনে এনে ব্যবহার করতে থাকে। বেশ কিছুদিন যাওয়ার পর ইয়াবার খরচ মেটাতেও পারছিল না। এক সময় দুই বন্ধু ভাবে, নিজেরাই ইয়াবা ব্যবসায় জড়িয়ে পড়লে সমস্যা কোথায়? বন্ধুরাই তাদের কাছ থেকে কিনে খাবে। এতে করে তাদের নিজেদের খাওয়ার খরচও উঠে আসবে। এমন ভাবনায় তারা নেমে পড়ল ইয়াবা ব্যবসায়। অল্প দিনে সফলতাও তারা পেয়ে যায়। বন্ধুরা বাদেও ক্রেতার সংখ্যা বাড়ে। বিভিন্ন জেলাতেও তারা ইয়াবা দিয়ে আসত। জমিয়ে ফেলেছিল বেশ কিছু টাকা, কিনে ফেলে একটি গাড়ি। তবে তাদের এই সুখ বেশিদিন টিকেনি। বাধা হয়ে দাঁড়ায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর (ডিএনসি)। 

ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থেকে ব্রিফকেস ভর্তি ৬০ হাজার পিস ইয়াবা ট্যাবলেটসহ ওই দুই বন্ধুকে গ্রেফতার করে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর (ডিএনসি)। হাসনাবাদ এলাকার সি-ব্লকের ১৭/১৮ নম্বর বাড়ি থেকে ইয়াবাসহ তাদের গ্রেফতার করা হয়। জব্দ করা হয় তাদের ব্যবহৃত একটি প্রাইভেটকার (ঢাকা মেট্রো-গ-৩৯-০৩৮৩)। তারা বিভিন্ন কৌশলে রাজধানীতে ইয়াবা এনে দেশের বিভিন্ন এলাকায় সরবরাহ করত। ডিএনসির সহকারী পরিচালক (ঢাকা মেট্রো-উত্তর) খোরশিদ আলম জানান, বাবুবাজার ব্রিজের ঢালে অভিযান চালিয়ে দুজনকে গ্রেফতার করা হয়। তাইজুলের বাড়ি মাদারীপুরের হবিগঞ্জউত্তর দুধখালীতে। বাবা মোতালেব খান। ইমরানুলের বাড়ি কক্সবাজারের টেকনাফ সদরে। তার বাবার নাম এনামুল হক। তারা দুজন বন্ধু। নর্দার্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে বিবিএতে পড়াশোনা করতে গিয়েই পরিচয় ইমরানুল এবং তাইজুলের। পরবর্তীতে বন্ধুত্ব। ২০১৫ সালে তারা পড়াশোনা শেষ করেন। বিত্তশালী হওয়ার লোভে পড়ে এই দুই বন্ধু ইয়াবা ব্যবসায় জড়ায়। সংশ্লিষ্টরা বলছে, বেকারত্ব থেকে তারা হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়ে। তখনই তারা ইয়াবায় আসক্ত হয়। এরপর টাকার প্রয়োজনে তারা ইয়াবার ব্যবসায় ঝুঁকে পড়ে। পরে তারা ধরা পড়ে। এতে করে দুই মেধাবী শিক্ষার্থীর ভবিষ্যৎই এখন অনিশ্চিত।

 

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর