শুক্রবার, ৮ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ ০০:০০ টা
থামছে না অনুপ্রবেশ

রুমা সীমান্তে দুই শতাধিক রাখাইন রোহিঙ্গা

কবির হোসেন সিদ্দিকী, বান্দরবান

বান্দরবানের রুমা সীমান্ত দিয়ে মিয়ানমার নাগরিকদের অনুপ্রবেশ অব্যাহত আছে। গতকাল আরাকানে মিয়ানমার সেনা বাহিনীর গোলাবর্ষণ, আক্রমণ ও নির্যাতনের মুখে প্রাণ বাঁচাতে শতাধিক রাখাইন ও খুমি শরণার্থী রুমা উপজেলার রেমাক্রী প্রাংসা ইউনিয়নের দুর্গম সীমান্তবর্তী চাইক্ষ্যংপাড়ায় অনুপ্রবেশ করেছে। এর মধ্যে কান্তালিনপাড়া থেকে ১২টি পরিবারের ১২৪ জন মিয়ানমারের নাগরিক অনুপ্রবেশ করেছে। এদিকে এর আগে অনুপ্রবেশ করা মিয়ানমারের দুই শতাধিক উপজাতীয় জনগোষ্ঠী দুর্গম পাহাড়ে মানবেতর দিনযাপন করছে। গতকাল পর্যন্ত ওই সীমান্তে আশ্রয় নেওয়া শরণার্থীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২০৩ জনে। তারা কেউ রোহিঙ্গা বা মুসলিম নয়, খুমি ও রাখাইন, ধর্মে খ্রিস্টান ও বৌদ্ধ। বর্তমানে সীমান্তের চাইক্ষ্যংপাড়ায় খোলা জায়গায় ত্রিপল টেনে তাঁবুর নিচে দিনযাপন করছে। তীব্র শীতের মধ্যে শরণার্থীদের শিশু ও বৃদ্ধরা চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছে সেখানে। এদের মধ্যে শিশু রয়েছে ৫০ জনের বেশি। বিজিবি ও স্থানীয়রা জানান, মিয়ানমারের চীন রাজ্যের প্লাতোয়া জেলায় সম্প্রতি মিয়ানমারের বিচ্ছিন্নতাবাদী গ্রুপ আরাকান আর্মির সঙ্গে সে দেশের সেনাবাহিনীর ব্যাপক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সীমান্তের ওপারে খামংওয়া, তরোয়াইন, কান্তালিন, এলাকাগুলোর বিভিন্ন পাড়ায় ব্যাপক গোলাগুলি এবং হেলিকপ্টার থেকে বোমাবর্ষণ করছে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। ঘরে ঘরে তল্লাশি কওে লোকজনদের ধরে নিয়ে যাচ্ছে সেনারা। আতঙ্কে শরণার্থীরা মিয়ানমার সীমান্তবর্তী বান্দরবানের চাইক্ষ্যংপাড়া, নেপুপাড়াসহ কয়েকটি পাড়ায় অবস্থানের জন্য অনুপ্রবেশের চেষ্টা চালাচ্ছে। এদিকে সীমান্তের ওপারে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর সঙ্গে আরাকান আর্মির সদস্যদের যুদ্ধ অব্যাহত থাকায় সীমান্তে আরও মিয়ানমারের উপজাতীয় শরণার্থী প্রবেশ করতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা। এদিকে সীমান্তের শরণার্থীদের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষেণ করতে সেখানে সেনাবাহিনী ও বিজিবির সমন্বয়ে একটি পর্যবেক্ষণ টিম পাঠানো হয়েছে। পর্যবেক্ষণ টিমটি বুধবার ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে বলে জানা গেছে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদেরও ঘটনাস্থলে পাঠিয়েছে প্রশাসন। এ ছাড়া নিরাপত্তা বাহিনীর বেশ কয়েকটি টহল দল সীমান্তে নিরাপত্তা জোরদার করেছে। বৃহস্পতিবার হেলিকপ্টারে সদস্যদের মিয়ানমার সীমান্ত এলাকায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। বিজিবির কক্সবাজার রিজিয়নের রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জাহেদুর রহমান জানান, সীমান্ত এলাকায় শরণার্থীদের বর্তমান পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে সেখানে নিরাপত্তা বাহিনীর টিম পাঠানো হয়েছে। শরণার্থীদের মনোভাব জানার পর সরকারের উচ্চপর্যায়ের সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে তাদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

সর্বশেষ খবর