শনিবার, ১৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ ০০:০০ টা

কোনো চিকিৎসক নেই বগুড়া বক্ষব্যাধি হাসপাতালে

তৃণমূলে স্বাস্থ্যসেবা

নিজস্ব প্রতিবেদক, বগুড়া

বগুড়ার একমাত্র বক্ষব্যাধি হাসপাতালে চিকিৎসক না থাকায় স্বাস্থ্যসেবা পাচ্ছেন না রোগীরা। পাশাপাশি নার্স ও বাবুর্চিসহ ২১ পদের মধ্যে পাঁচটিতে জনবল নেই। জনবল সংকটের কারণে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলছে বক্ষব্যাধি হাসপাতাল। মাসের পর মাস এমন কর্মহীন কাটলেও সরকারি সব সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছেন কর্মরতরা। জানা যায়, এক সময় বগুড়া বক্ষব্যাধি হাসপাতাল সুচিকিৎসার জন্য জেলায় পরিচিতি থাকলেও এখন নানা কারণে সেটি আর নেই। দিন দিন সেবার হার কমে যাচ্ছে। চিকিৎসক না থাকার কারণে ভালো সেবা না পেয়ে বাধ্য হয়ে রোগীরা চলে যাচ্ছেন বেসরকারি হাসপাতালে। সেখানে অধিক অর্থ খরচ করে চিকিৎসা নিতে হচ্ছে। অভিযোগ রয়েছে, চিকিৎসক না থাকায় বগুড়া ২০ শয্যাবিশিষ্ট বক্ষব্যাধি (যক্ষ্মা হাসপাতাল) হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা দিচ্ছেন নার্স ও ফার্মাসিস্ট। চিকিৎসক সংকটের কথা স্বীকার করলেও হাসপাতালের নার্স ও ফার্মাসিস্ট সেবা দিচ্ছেন না বলে জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের কর্মকর্তারা বলছেন। বগুড়া জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, বগুড়া শহরের নিশিন্দারায় ১৯৬১ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় যক্ষ্মা হাসপাতাল। বর্তমানে এর নামকরণ করা হয়েছে ‘বগুড়া বক্ষব্যাধি হাসপাতাল’। এক সময় যক্ষ্মা ছিল দুরারোগ্য ব্যাধি। এই ব্যাধি নির্মূলে তখন হাসপাতালটি স্বাস্থ্যসেবায় অগ্রণী ভূমিকা পালন করে। দুটি পদে চিকিৎসক না থাকায় বক্ষ রোগে আক্রান্ত হলে বক্ষব্যাধি হাসপাতালে মিলছে না কোনো কাক্সিক্ষত সেবা। হাসপাতালে বাবুর্চি না থাকায় অনেক সময় রোগীদের অভুক্ত থাকতে হচ্ছে। বাবুর্চির পরিবর্তে একজন মশালচি (অদক্ষ সহকারী বাবুর্চি) দিয়ে কোনো রকমে রোগীদের রান্নার কাজ চলছে। চিকিৎসক সংকটের কারণে হাসপাতালের বেশিরভাগ শয্যা ফাঁকা পড়ে থাকে। বগুড়া জেলা সিভিল সার্জন সামছুল হক জানান, বক্ষব্যাধি হাসপাতালে দুজন চিকিৎসকের মধ্যে ডা. এহসানুল কবীর ২০১৮ সালের ৭ নভেম্বর নওগাঁ মেডিকেলে বদলি হয়ে গেছেন। অপর চিকিৎসক ডা. তানজিলা সুলতানা ডেপুটেশনে ১৭ সালে কুয়েত-বাংলাদেশ মৈত্রী হাসপাতালে চলে যান। ২০১৮ সালের ৮ জুলাই তার ডেপুটেশন বাতিল হওয়ার পর রংপুর বিভাগীয় পরিচালক (স্বাস্থ্য) হিসেবে যোগ দেন। ফলে দুটি চিকিৎসক পদ ফাঁকা রয়েছে। এ ছাড়া অ্যাসিসট্যান্ট নার্সের তিনটি পদের মধ্যে একটি, তিনজন ওয়ার্ড বয়ের মধ্যে দুটি পদে লোক নেই। বাবুর্চি পদে কোনো লোক না থাকায় তার পরিবর্তে অদক্ষ মশালচি রোগীদের রান্নার কাজ করেন। বাইরে থেকে চিকিৎসক এনে  হাসপাতালে চিকিৎসা করেন। আর সহকারীরা সহযোগিতা করেন। এখন তো বক্ষব্যাধি হাসপাতালে কোনো চিকিৎসক নেই। বিষয়টি কেন্দ্রীয়ভাবে অবহিত করা হয়েছে। বক্ষব্যাধি হাসপাতালের ফার্মাসিস্ট মোয়াজ্জেম হোসেন জানান, চিকিৎসক না থাকায় রোগীদের সংখ্যা কমে গেছে। গত বুধবার ২০ শয্যার হাসপাতলে ৯ জন রোগী ভর্তি ছিল।

সর্বশেষ খবর