শনিবার, ১৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ ০০:০০ টা
কৃষি সংবাদ

আখ চাষিদের মুখে হাসি

মহিউদ্দিন মোল্লা, কুমিল্লা

আখ চাষিদের মুখে হাসি

কুমিল্লায় আখ চাষিদের মুখে হাসি ফুটেছে। আখ চাষ করে কৃষকরা সাফল্যের দেখা পেয়েছেন। কুমিল্লায় সাধারণত চিবিয়ে খাওয়া আখ দেখা গেলেও সম্প্রতি গুড় তৈরির আখ চাষ হচ্ছে। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, আখ খেতের পাশে মেশিনে মাড়াই চলছে। পাশেই চুল্লিতে রস গরম           করা হচ্ছে। রস ঘন হয়ে হলুদ হলে তা মাটির পাতিলে রাখা হচ্ছে। আখের গুড়ের মিষ্টি সুবাস ছড়িয়ে পড়ছে চারদিকে। খাঁটি গুড় পেয়ে মানুষ মাঠ থেকেই ১২০ টাকা কেজি ধরে কিনে নিয়ে যাচ্ছে। নগদ টাকা পেয়ে কৃষকের মুখে দেখা যায় খুশির ঝিলিক। কুমিল্লা সদর উপজেলার গলিয়ারা ইউনিয়নসহ বিভিন্ন এলাকায় এক যুগ আগে ব্যাপক গুড় তৈরির আখ চাষ হতো। তবে কালের বিবর্তনে তা কমে যায়। গলিয়ারা ইউনিয়নের কালির বাজার গ্রামের আখ চাষি জামাল প্রধান বলেন, আখ থেকে গুড় তৈরি করে চাঁদপুর, নোয়াখালীসহ ভাটি এলাকায় নিয়ে যেত পূর্ব পুরুষরা।

তা এক সময় কমে আসে। তিনি পুনরায় চাষ শুরু করেছেন। ৬ বছর ধরে আখ চাষ করে গুড় উৎপাদন করেন। ভালো লাভও পাচ্ছেন। এবার তিনি দুই একর জমিতে আখ চাষ করেছেন, আগামীতে চার একরে চাষ করবেন। দুই একরে মাড়াইসহ খরচ পড়েছে এক লাখ টাকা। ১০০ মণ গুড় হবে, বিক্রি হবে প্রায় পাঁচ লাখ টাকা। বাজারে অনেকে গুড় কম দামে বিক্রি করে। তারা গুড়ের সঙ্গে চিনি, ময়দা ইত্যাদি মেশায়। আমরা কোনো ভেজাল দেই না। তাই চাহিদাও প্রচুর। গুড় তৈরির কারিগর মো. মিলন এসেছেন নাটোরের বাগাতিপাড়া উপজেলার ধোলাউড়ি গ্রাম থেকে। তিনি বলেন, আমরা দেশের বিভিন্ন স্থানে গিয়ে গুড় তৈরি করি। আমার চারজন সহকারী রয়েছে।

প্রতি টিন রস গরম করতে এক হাজার টাকা নিই। গুড় তৈরিতে কোনো ভেজাল মেশাই না।

কালির বাজার ব্লকের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা শাহিদা খানম বলেন, এই এলাকায় দুই হেক্টর জমিতে আখ চাষ হয়। এখানের উল্লেখযোগ্য জাতগুলো  হচ্ছে, রঙ বিলাস, লত বিলাস ও ঈশ্বরদী ২০৮। কৃষি বিভাগ থেকে চাষিদের বিভিন্ন পরামর্শ দেওয়া হয়। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর কুমিল্লার উপ-পরিচালক দিলীপ কুমার অধিকারী বলেন, আখ লাভজনক ফসল। এক বীজে পাঁচ বছর চাষ করা যায়। সার ও পানি কম লাগে। কুমিল্লা জেলায় ৩৫৯ হেক্টর জমিতে আখ চাষ হয়। বেশি চাষ হয় কুমিল্লার বরুড়া উপজেলায়।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর