সোমবার, ২৫ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ ০০:০০ টা

এক নয় একাধিক পরিচয়

মির্জা মেহেদী তমাল

এক নয় একাধিক পরিচয়

কখনো জাতিসংঘের বড় কর্মকর্তা। কখনো বা বিভিন্ন বড় সংস্থার কর্মকর্তা। এমন সব পদবি দিয়ে ফেসবুকে অ্যাকাউন্ট খোলে। পাঠানো হয় ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট। যারা একসেপ্ট করেন তাদের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলেন। একপর্যায়ে ভালো ভালো গিফট (উপহার) পাঠাচ্ছি বলে তাদের প্রলোভন দেখায়।

এরপর তাদের নির্ধারিত এজেন্টদের বিভিন্ন ব্যাংক খোলা একাউন্টের মাধ্যমে টাকা নেয়। পাঠানো হয় গিফটের ছবি। এরপর প্রতারকরা বলে ট্যাক্সের টাকা দিতে হবে অথবা বলে আপনার মালগুলো অবৈধ অতিরিক্ত টাকা প্রয়োজন আপনারা টাকা পাঠান। এভাবে বিভিন্ন খাত দেখিয়ে টাকা নেয়। সম্প্রতি এমনই একটি প্রতারক চক্রের ১৪ জনকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব। যারা নিজেদের বিভিন্ন আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের কর্মী পরিচয় দিয়ে অনলাইনে সাধারণ মানুষকে প্রতারিত করে টাকা হাতিয়ে নিয়ে আসছিল। গ্রেফতারকৃতরা আফ্রিকার বিভিন্ন দেশের নাগরিক।

র‌্যাব-১ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল সারওয়ার-বিন-কাশেম জানান, গ্রেফতারকৃতরা পর্যটন ভিসায় বাংলাদেশে প্রবেশ করে। ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার পর অবৈধভাবে অবস্থান করে। পরে ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে অর্থ আত্মসাৎ করে। ঢাকার ভাটারা থেকে গ্রেফতারকৃত ১৪ জনের মধ্যে নাইজেরিয়ার নাগরিক ৭ জন, উগান্ডার নাগরিক দুজন, ক্যামেরুনের নাগরিক একজন, কঙ্গোর নাগরিক একজন, লাইব্রেরিয়ার নাগরিক একজন, তানজানিয়ার নাগরিক একজন এবং মোজাম্বিকের একজন নাগরিক রয়েছেন। র‌্যাব কর্মকর্তা বলেন, খেলোয়াড় ভিসায়, ব্যবসায়ী ভিসায় ও ট্যুরিস্ট ভিসায় আফ্রিকার বিভিন্ন দেশের নাগরিকরা বাংলাদেশে আসছে। ভিসার মেয়াদ শেষ হলেও একেকজন বছরের পর বছর ধরে বাংলাদেশেই অবস্থান করছে। আর নিজেদের মধ্যে বিভিন্ন গ্রুপ তৈরি করে দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন অপকর্ম চালিয়ে আসছে। দীর্ঘদিন ধরে তারা প্রতারণার মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ অর্থ হাতিয়ে নিয়েছে। এরা ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভুয়া আইডি খোলে। নিজেদের আফগানিস্তানে যুদ্ধরত সৈনিক বা জাতিসংঘের কর্মকর্তা হিসেবে পরিচয় দিয়ে বন্ধুত্ব গড়ে। একপর্যায়ে বন্ধুর জন্য দামি উপহার পাঠাবে বলে জানায়। কয়েকদিন পর এ চক্রেরই বাংলাদেশি সদস্যরা ভুক্তভোগী ব্যক্তিকে ফোন দিয়ে কাস্টমস বা ডাক বিভাগের কর্মকর্তা পরিচয় দেয়। ট্যাক্স ফি বা অবৈধ জিনিসের কথা বলে উপহার ছড়ানোর জন্য বলে। একপর্যায়ে প্রতারণার ফাঁদে ফেলে টাকা হাতিয়ে নেয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামিরা জানায়, সাদা কাগজে রাসায়নিক মিশিয়ে ডলার তৈরির প্রলোভন দেখিয়ে অনেকের কাছ থেকেও বিপুল পরিমাণ অর্থ হাতিয়ে নিয়েছে। এ চক্রটি প্রতিমাসে ৩০-৩৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। আর এদের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট করে কয়েকজন বাংলাদেশি সহায়তা করে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর