সোমবার, ২৫ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ ০০:০০ টা
কৃষি সংবাদ

রাজবাড়ীতে মৌচাষ

কামরুজ্জামান সোহেল, ফরিদপুর

রাজবাড়ীতে মৌচাষ

মো. বাদশা, কামরুল ইসলাম, আবদুল হালিম ও মো. আশরাফুল ইসলাম। তাদের সবার বাড়ি রাজবাড়ী জেলার পাংশা উপজেলায়। বিভিন্ন সময় নানা ব্যবসা করে লোকসানের মুখে পড়ে অনেকটা সখের বসেই মধু সংগ্রহের কাজে নেমে পড়েন । এখন তারা মৌ চাষ ও মধু সংগ্রহ করছেন।  আগে নুন আনতে পান্তা ফুরাতো  এখন সেই দুঃখের দিন শেষ। মধু সংগ্রহকারী এ চার যুবকের সঙ্গে কথা হয় সদরপুর উপজেলার ভাষানচর ইউনিয়নের ভাষানচর গ্রামের একটি আম বাগানে। তারা জানালেন, তাদের উঠে আসার গল্প। বিভিন্ন ব্যবসা করে যখন লোকসান হচ্ছিল তখন আমরা ঠিক করি মধু সংগ্রহ করে বিক্রি করবো। সেই চার বছর আগের কথা। প্রথম দিকে বিভিন্ন গাছ, বাসার ব্যালকনির মৌচাক থেকে মধু সংগ্রহ করার কাজ শুরু করি। সেটি তেমন একটা লাভজনক হয়নি। চাক থেকে যে পরিমাণ মধু পাওয়া যেতো তা বিক্রি করে তেমন একটা লাভ হতো না। কেননা মধুর বেশির ভাগই দিয়ে দিতে হতো মৌচাক মালিককে। এরপর সিদ্ধান্ত নেই মৌমাছির মাধ্যমে বিভিন্ন ফুল থেকে মধু সংগ্রহ করব। শুরুতেই অল্পকিছু পুঁজি নিয়ে নেমে পড়ি কাজে।  মাত্র ৩০টি বাক্স নিয়ে বিভিন্ন স্থানে ঘুরে ঘুরে মধু সংগ্রহ করি। ধীরে ধীরে আমাদের বাক্সের সংখ্যা বাড়তে থাকে। এখন আমাদের মৌ বাক্সের সংখ্যা দু’শোর উপরে। আমরা এখন মৌ-চাষের পাশাপাশি বাক্স বানিয়েও বিক্রি করি। বিভিন্ন স্থানে গিয়ে বেকার যুবকদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছি। মৌ-চাষ এখন লাভজনক পেশা।

বছরের ৬ মাস তারা বিভিন্ন স্থানে ঘুরে বিভিন্ন ফসল ও ফলের গাছ থেকে মৌমাছির মাধ্যমে মধু সংগ্রহ করেন। শুরুতে মানিকগঞ্জ, রাজবাড়ি, সিরাজগঞ্জ জেলার সরিষা খেত থেকে মধু সংগ্রহ করেন। এরপর চলে আসেন ফরিদপুরে। এখানে ধনিয়া, কালিজিরা থেকে মধু সংগ্রহ করেন। তারপর চলে যাবেন পাবনা ও দিনাজপুরে। সেখানে আম বাগান ও লিচু বাগান থেকে মধু সংগ্রহ করবেন।  আশরাফুল ইসলাম জানান, ফরিদপুরে তারা ১ মাস থাকবেন। ধনিয়া ও কালিজিরা খেত থেকে তারা ১ মাসে প্রায় ২০ মণ মধু সংগ্রহ করবেন। প্রতিমণ মধু বিক্রি হয় ১০ হাজার থেকে ১৬ হাজার টাকায়। দেশের বিভিন্ন নামকরা প্রতিষ্ঠান প্রতি সপ্তাহে তাদের কাছ থেকে মধু কিনে নিয়ে যায়। অনেক কোম্পানি রয়েছে যারা অগ্রিম টাকা দিয়ে যায়। কোম্পানিগুলো তাদের কাছ থেকে কম দামে মধু কিনে বেশি দামে বিক্রি করে থাকেন। সরকার মৌ-চাষিদের দিকে নজর দিলে এ খাত থেকে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা সম্ভব। চার যুবকের সফলতা দেখে অনেকেই মৌ-চাষে আগ্রহ দেখাচ্ছেন।

 

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর