মঙ্গলবার, ২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ ০০:০০ টা
তৃণমূলে স্বাস্থ্যসেবা

ডাক্তাররা ব্যস্ত ক্লিনিক, কলিংয়ে

নেত্রকোনা সদর হাসপাতাল

আলপনা বেগম, নেত্রকোনা

ডাক্তার শূন্যতায় বেহাল নেত্রকোনার স্বাস্থ্যসেবা। ২৫৬ পদের বিপরীতে ১৫৬টিই শূন্য। এর ওপর রয়েছে ওষুধসহ স্থান সংকুলান। আরও রয়েছে স্থানীয় ডায়াগনস্টিক সেন্টারের দালালদের দৌরাত্ম্য। যে কজন ডাক্তার আছেন তাদের অধিকাংশই ক্লিনিক ব্যবসায় জড়িত। কোনো রকমে হাসপাতালে সময় দিয়ে দায় এড়ান। স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন নিজস্ব ক্লিনিক বা কলিং ব্যবসায়। এমন অবস্থা জেলার ১০ উপজেলায়। যত সমস্যা গরিব এবং মধ্যবিত্তদের। তারা সরকারি সেবার ওপরই নির্ভরশীল। যে কারণে চিকিৎসা নিতে গিয়ে হয়রানির শিকার হন প্রতিনিয়ত। নেত্রকোনা সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, জেলায় মোট ডাক্তারের পদ রয়েছে ২৫৬টি। তার মধ্যে গত জানুয়ারি মাস পর্যন্ত ১০০টি পদ পূর্ণ হয়েছে। খালি রয়েছে ১৫৬টি। তার মধ্যে জেলা সদরের আধুনিক সদর হাসপাতাল ১০০ বেডের স্থলে চলছে ৫০ বেডের জনবল দিয়ে। ৫০ বেডের হিসাব মতে ২২ জন ডাক্তারের মঞ্জুরিকৃত পদে সদ্য পরিপূর্ণ হওয়ার পরও একটি পদ খালিই থাকছে। পরিবার পরিকল্পনা সদর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ১৫টি পদের মধ্যে শূন্য ১১টি, পূর্বধলায় ৩১টির মধ্যে শূন্য ২২টি, দুর্গাপুরে ১৭টির মধ্যে শূন্য ১০টি, কলমাকান্দায় ২৯টির মধ্যে শূন্য ২০টি, বারহাট্টায় ১৭টির মধ্যে শূন্য ৯টি, মোহনগঞ্জে ২৭টির মধ্যে শূন্য ১৪টি, খালিয়াজুরীতে ১৪টির মধ্যে শূন্য ৯টি, মদনে ২৯টির মধ্যে শূন্য ২১টি, আটপাড়ায় ১৭টির মধ্যে শূন্য ১১টি এবং কেন্দুয়ায় ৩৫টির মধ্যে শূন্য ২৭টি। জনবল সংকট ছাড়াও সরকারি স্বাস্থ্যসেবায় পরীক্ষা-নিরীক্ষায় রয়েছে নানা প্রতিবন্ধকতা। নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপাতালে আলট্রাসনোগ্রাম মেশিন থাকলেও রেডিওলজিস্টের অভাবে বাইরে থেকেই করতে হয় পরীক্ষা। রোগীর সঙ্গে ডাক্তার-নার্সদের উদ্দেশ্যপ্রণোদিত খারাপ ব্যবহারের বিস্তর অভিযোগ। অন্যদিকে উপজেলাগুলোতে আরও ভয়াবহ অবস্থা। কোনো রকমে রোগীদের প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে চলে আসতে হয় নেত্রকোনা সদরে। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স শুধু মামলার সার্টিফিকেট হসপিটাল হিসেবেই বিবেচ্য।  মোদ্দাকথা, স্বাস্থ্যসেবার চরম অব্যবস্থাপনা বিরাজ করছে নেত্রকোনায়। জেলাজুড়ে এমন ভয়াবহ সংকটের মুখে ক্লিনিক ব্যবসার জমজমাট অবস্থা। সদর হাসপাতাল গেটে গড়ে ওঠা বিভিন্ন ডায়াগনস্টিকের দালালদের দৌরাত্ম্য হাসপাতালজুড়ে। চরম অসহায়ত্বের মুখে সহজেই তাদের খপ্পরে পড়ে যান গ্রামের সহজ সরল মানুষ।

এ ব্যাপারে নেত্রকোনা জেলা সিভিল সার্জন ডা. তাজুল ইসলাম নানা সমস্যার কথা স্বীকার করে বলেন, ডাক্তার সংকটে কিছুটা বেগ পেতে হচ্ছে। তবে একটা নিয়োগ হওয়ার কথা রয়েছে। তাহলে আর চিকিৎসা দেওয়া নিয়ে হিমশিম খেতে হবে না। পরীক্ষা-নিরীক্ষায়ও কিছু সংকটের কথা তিনি স্বীকার করেন। তিনি বলেন, গর্ভবতী মায়েদের অনেক বিষয় আমি নিজেই সমাধান করে ফেলি।

সর্বশেষ খবর