শনিবার, ২ মার্চ, ২০১৯ ০০:০০ টা
কৃষি সংবাদ

বিলুপ্ত দেশি মাছ চাষ

কামরুজ্জামান সোহেল, ফরিদপুর

বিলুপ্ত দেশি মাছ চাষ

ফরিদপুরে বিলুপ্ত দেশি মাছ চাষে সাফল্য। পড়ালেখা শেষ করে ভাগ্য ফেরানোর আশা নিয়ে বিদেশ যান সদর উপজেলার কৈজুরী ইউনিয়নের মঙ্গলকোট গ্রামের টুটুল প্রামানিক। কিন্তু টুটুলের সেই আশা পূরণ হয়নি। অল্পকয়েক দিনের মধ্যে টুটুলের মন ছুটে যায় দেশে আসার জন্য। ধারদেনা করে বিদেশ যাওয়ার পর দেনা শোধ তো দূরের কথা আসার সময় প্লেন ভাড়ার টাকাও ধার করা হয়। শূন্য হাতে দেশে ফেরার পর বিভিন্ন জনের কাছে ধরনা দিয়েছেন একটি চাকরির আশায়। কিন্তু কেউই তাকে চাকরি দিতে পারেনি। এক সময় মনে জেদ চেপে যায় টুটুলের। কারও সাহায্য না নিয়ে নিজেই কিছু একটা করে দেখিয়ে দেবেন তিনিও কিছু করতে পারেন। নিজের পুকুরে প্রাথমিকভাবে চাষ শুরু করেন পাবদা মাছের। প্রথম বছরেই পাবদা চাষ করে বেশ সাফল্য পান তিনি। এরপর আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি টুটুলের। প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে শুরু করেন বিলুপ্ত হওয়া দেশি মাছ চাষ। বড় একটি পুকুরে চাষ করেন পাবদা, টেংরা, শিং, মাগুর, কই, তেলাপিয়া, রুই, কাতলাসহ দেশি বিভিন্ন প্রজাতির মাছ। টুটুল জানান, এ বছর দেশীয় বিভিন্ন প্রজাতির প্রায় দেড় লাখ মাছের পোনা ছাড়া হয়েছে পুকুরে। তেলাপিয়া মাছ কয়েকদফা বিক্রি করা হয়েছে। তার দুটি পুকুরে এসব মাছ চাষ করতে খরচ হয়েছে ৭ লাখ টাকা। সবকিছু ঠিক থাকলে খরচ বাদ দিয়ে মাছ বিক্রি করে তার লাভ হবে কমপক্ষে ৭ থেকে ৮ লাখ টাকা।

বিদেশ গিয়ে খালি হাতে দেশে এসেছি। দেশে কোনো চাকরি পাইনি। চাকরির জন্য বসে না থেকে মাছ চাষের উদ্যোগ নেই। এখন মাছ চাষ করেই বেশ ভালো আছি। আমার সাফল্য দেখে গ্রামের অনেকেই এখন মাছ চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছে। অনেক শিক্ষিত বেকার যুবক আমার কাছ থেকে মাছ চাষের বিষয়ে পরামর্শ নিচ্ছেন। আমার পুকুরে ৭/৮ জন লোক মাছ চাষের জন্য দেখাশোনা করে। সরকারের কাছে দাবি জানিয়ে টুটুল বলেন, দেশে শিক্ষিত ও অশিক্ষিত বেকারের সংখ্যা অনেক। মাছ চাষ একটি লাভজনক ব্যবসা। বেকারদের প্রশিক্ষণ ও স্বল্প সুদে ঋণ দিলে দেশের বেকার সমস্যার পাশাপাশি তারা নিজেরাই স্বাবলম্বী হতে পারবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর