রবিবার, ৩ মার্চ, ২০১৯ ০০:০০ টা
নদী বাঁচাও ২২

বালিয়াকান্দির পাঁচ নদীতে পানি নেই

কামরুজ্জামান সোহেল, ফরিদপুর

বালিয়াকান্দির পাঁচ নদীতে পানি নেই

রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দির একসময়ের প্রমত্ত গড়াই, চন্দনা, হড়াই, চিত্রা ও পুষস্বলী এখন শুধুই ধু-ধু বালুচর। উপজেলার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত এ পাঁচ নদী মানচিত্রে থাকলেও সেগুলো দেখে বোঝার উপায় নেই একসময় এ নদীগুলোর ভাঙনে দিশাহারা ছিল নদীতীরের মানুষ। এখন নদীগুলোতে নেই পানি, আছে শুধু বালু আর বালু। স্থানীয়রা জানান, দীর্ঘদিন ধরে ফারাক্কার প্রভাবে এই নদীগুলো এখন মরতে বসেছে। ভারতের একতরফা পানি প্রত্যাহার, জলবায়ুর বিরূপ প্রভাব আর দখলদারদের কারণে নদীগুলো তার ঐতিহ্য হারিয়ে এখন মরা খালে পরিণত হয়েছে। বালিয়াকান্দির ঐতিহ্যবাহী নদীগুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে গড়াই। একসময়ে উত্তাল এই নদীর কারণে ভিটেমাটি হারিয়েছেন অনেকেই। নদী ভাঙনের কবলে পড়ে নিঃস্ব হয়েছে বালিয়াকান্দির হাজারো মানুষ। বালিয়াকান্দিবাসীর একসময়ের দুঃখ গড়াই নদী নেই তার পুরনো রূপে। নদীতীরের মানুষ আর ভাঙন আতঙ্কে নেই। তবে আতঙ্কে আছে নদীটি হারিয়ে যাওয়ার ভয়ে। এখন দুই চোখ যতদূরে যায় শুধুই দেখা যায় বালুচর। মাইলের পর মাইলজুড়ে জেগে উঠেছে বালুচর। নদীতে অল্প পানি থাকলেও নেই কোনো স্রোত। অনেক জায়গায় নদী শুকিয়ে যাওয়ায় হেঁটেই পার হওয়া যায়। নদীর বুকে বিভিন্ন অংশে কৃষকরা ধানের চারা ও ফসলের আবাদ করছেন। বালিয়াকান্দির নদীগুলোর উৎসমুখ পদ্মা হওয়ায় আজ মানচিত্র থেকে পদ্মার শাখা নদী গড়াই, চন্দনা, হড়াই, চিত্রা ও পুষস্বলী নদী হারিয়ে যাচ্ছে। ফলে এ অঞ্চলের কৃষি অর্থনীতি মারাত্মক হুমকির মুখে পড়েছে। বর্ষাকালে এসব নদীতে কিছু দিনের জন্য পানি থাকলেও প্রায় সারা বছরই থাকে পানিশূন্য। আর এসব নদী মরে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে দুই পাশ দখল করে নিয়েছে প্রভাবশালী দখলবাজরা। বর্তমান সরকার চন্দনা-বারাশিয়া প্রকল্পের মাধ্যমে খনন কাজ সম্পন্ন করলেও এ নদীগুলোর পানির উৎসমুখ বন্ধ থাকায় এর সুফল পাচ্ছে না কৃষকরা। এ ছাড়া এক সময় চন্দনা নদী দিয়ে নৌকাযোগে এ অঞ্চলের মানুষ তাদের ব্যবসা-বাণিজ্য চালাতেন। কালের আবর্তে এখন সেই নদীপথের বাণিজ্য নেই। চন্দনা, হড়াই, পুষম্বলী, চিত্রা নদীর অবস্থা বেশ ভয়াবহ। এসব নদীর কোথাও কোথাও এমন অবস্থা হয়েছে, দেখলে বোঝার উপায় নেই এটি নদী নাকি খাল। দীর্ঘদিন ধরে নদীগুলোতে পলি পড়ার কারণে ভরাট হয়ে গেছে বিভিন্ন স্থান। খনন না করায় নদীগুলো এখন পানিশূন্য প্রায়। স্থানীয়রা জানান, বালিয়াকান্দির নদীগুলো রক্ষা এবং খননের জন্য বিভিন্ন সময় দাবি করা হলেও তার কোনো বাস্তবায়ন হয়নি।

সর্বশেষ খবর