মঙ্গলবার, ৫ মার্চ, ২০১৯ ০০:০০ টা

দিনে চাকরি রাতে ডাকাতি

নিজস্ব প্রতিবেদক

সামনে রাস্তার কাজ চলছে। বিকল্প পথে যাতায়াত করুন। এমন কৌশলে নির্জন স্থানে নিয়ে গিয়ে গাড়িসহ সর্বস্ব হাতিয়ে নেয় ওরা। মাঝে মাঝে গাড়ির সামনের গ্লাসে ডিম ছুড়ে মেরে ঝাপসা করে দেয়। যখন পরিষ্কার করার জন্য চালক গাড়ি থেকে নামেন তখন চারদিক থেকে ওরা ঘিরে ধরে। একপর্যায়ে চালকসহ অন্যদের আঘাত করে সবকিছু নিয়ে নেয় ডাকাত দলটি। এভাবেই গ্রেফতার সংঘবদ্ধ ডাকাত চক্রের ডাকাতির বর্ণনা দেন র‌্যাব-১-এর অধিনায়ক লে. কর্নেল সারওয়ার বিন কাশেম। তিনি বলেন, রবিবার রাতে তুরাগ থানার ১৫/ডি, প্লট নম্বর ৩৯, রোড নম্বর ১/এ-এর সামনে অভিযান চালিয়ে ডাকাত দলের সদস্যদের গ্রেফতার করা হয়। এরা স্বল্পশিক্ষিত। তারা দিনের বেলায় বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করত। অতিরিক্ত উপার্জনের আশায় রাতে ডাকাতি করত। এ দলের নেতা স্বাধীন ২০১৮ সালের জুনে ইয়াবাসহ আটক হয়। ৪৭ দিন জেল খেটে জামিনে বেরিয়ে আবারও ইয়াবা ব্যবসা শুরু করে। পাশাপাশি ডাকাত দলেরও নেতৃত্ব দিত। গ্রেফতারকৃতরা হলো আসলাম আলম স্বাধীন, আশরাফুল ইসলাম, শামীম ইসলাম, নাজমুল হাসান, নিজাম উদ্দিন, মিজানুর রহমান, শিমুল ইসলাম, মামুন ও তাইমুল ইসলাম। এ সময় তাদের কাছে থেকে একটি দেশে তৈরি বন্দুক, দুই রাউন্ড কার্তুজ, দুটি চাপাতি, ১৭টি সিম কার্ড, ১০টি মোবাইল ফোন সেট ও নগদ ২ হাজার ৩৭০ টাকা উদ্ধার করা হয় বলে জানান তিনি। গত রবিবার রাতে রাজধানীর দিয়াবাড়ী থেকে সংঘবদ্ধ এই ডাকাত দলের নয় সদস্যকে গ্রেফতারের পর গতকাল রাজধানীর কারওয়ান বাজারের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র‌্যাব-১-এর অধিনায়ক।

গ্রেফতারকৃতদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের বরাত দিয়ে র‌্যাব-১ অধিনায়ক বলেন, তুরাগের দিয়াবাড়ী এলাকায় বেড়াতে আসা সাধারণ লোকজনকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে মোবাইল, টাকা-পয়সা, স্বর্ণালঙ্কার, মূল্যবান সামগ্রীসহ সর্বস্ব ডাকাতি করে নিয়ে যায়। উত্তরা থেকে মিরপুর যাতায়াতকারী প্রাইভেট গাড়িও তাদের অন্যতম একটি টার্গেট। বিভিন্ন স্থানে ওত পেতে থেকে রাস্তায় গাড়ি দেখা মাত্রই তাদের গতি রোধ করে। সামনে রাস্তার কাজ চলছে বলে বিকল্প নির্জন কোনো পথ দেখিয়ে হাতিয়ে নেয় সর্বস্ব।

সারওয়ার বিন কাশেম বলেন, এরা চলন্ত গাড়িতে পেছন থেকে পাথর দিয়ে ঢিল ছোড়ে, আবার কখনো রাস্তার ওপর দামি মোবাইল ফোন সেট ফেলে রেখে চালককে গাড়ি থামাতে প্রলুব্ধ করে। এর পরও গাড়ি থামাতে ব্যর্থ হলে তারা গাড়ির উইন্ডশিল্ড লক্ষ্য করে ডিম ছুড়তে থাকে, এতে গাড়ির উইন্ডশিল্ডে ডিমের আবরণ পড়ে গেলে চালক গাড়ি থামাতে বাধ্য হন এবং সেই সুযোগে টার্গেট হাসিল করে ডাকাতরা।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর