মঙ্গলবার, ৫ মার্চ, ২০১৯ ০০:০০ টা
তৃণমূলে স্বাস্থ্যসেবা

ইমারজেন্সি চিকিৎসা মানেই ইনজেকশন

রাবি মেডিকেল

মর্তুজা নুর, রাবি

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) চিকিৎসা কেন্দ্রে কাক্সিক্ষত চিকিৎসা সেবা না পাওয়ার অভিযোগ দীর্ঘ দিনের। কেন্দ্রটিতে ইমার্জেন্সি চিকিৎসার নামে দেওয়া হচ্ছে শুধুই ইনজেকশন। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, চিকিৎসা কেন্দ্রটিতে নেই কোনো বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক। আবার চিকিৎসকদের দায়িত্বে অবহেলায় যথাযথ চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন তারা। কোনো কোনো চিকিৎসক ছুটি ছাড়াই মেডিকেল সেন্টারে অনুপস্থিত থাকেন। ফলে নির্ধারিত সময়ে চিকিৎসা সেবা নিতে এসে ফিরে যেতে হয় তাদের। সেই সঙ্গে সন্ধ্যার পরেই চিকিৎসা কেন্দ্রে কেবল ইমার্জেন্সি শাখাই খোলা থাকে। এখানে কোনো রোগী এলেই তার হাতে বা কোমরে শুধু ইনজেকশন দেওয়া হয়। চিকিৎসা নিতে আসা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ডাক্তারের সিরিয়াল পেতে ডিজিটাল পদ্ধতিতে কুপনের জন্য অনেক সময় প্রায় এক ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হচ্ছে। কুপনে চিকিৎসকের নাম থাকলেও নির্ধারিত কক্ষে গিয়ে দেখা যায় ডাক্তার নেই। ফলে চিকিৎসা না পেয়েই ফিরে যেতে হয়। এ ছাড়া চিকিৎসক থাকলেও সমস্যার কথা ঠিকমতো না শুনেই ওষুধ লিখে দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে। মেডিকেল সেন্টারে প্রায়ই এমন ঘটনা ঘটে। এক অনুসন্ধানে জানা গেছে, মেডিকেল সেন্টারে দুই শিফটে ভাগ করে চিকিৎসা সেবা দেওয়ায় সকালের শিফট মোটামুটি ভালো চলে। কিন্তু বিকালে মেলে না প্রাথমিক চিকিৎসাও। বিকালে দ্বিতীয় শিফটের চিকিৎসকরা বেশিরভাগ সময়ই থাকেন না। অফিশিয়ালি ছুটি না নিয়েও অনেক সময় চিকিৎসা কেন্দ্রে আসেন না চিকিৎসকরা। আবার তালিকায় নাম থাকলেও কোনো চিকিৎসক কখন চিকিৎসা কেন্দ্রে আসবেন সেই তথ্যও জানেন না কেউ। চিকিৎসা নিতে আসা রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী জালাল আহমেদ বলেন, ‘আমি এখানে গলা দেখাতে এসেছি। গলার টনসিলে ইনফেকশন হয়েছে। কিন্তু এখানে কোনো নাক, কান বা গলা বিশেষজ্ঞ নেই। বাধ্য হয়েই মেডিসিন বিশেষজ্ঞের থেকে ওষুধ নিচ্ছি।’ নাম প্রকাশ না করার শর্তে ফলিত রসায়ন ও রসায়ন প্রকৌশল বিভাগের এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘চিকিৎসা অনুযায়ী যেসব ওষুধ দেওয়ার নিয়ম রয়েছে সে ওষুধ না দিয়ে এখানে শুধু নাপা ও প্যারাসিটামল দেওয়া হয়। আর দামি ওষুধগুলোর জন্য প্রেসক্রিপশন করে দেয় বাইরে থেকে কিনে নেওয়ার জন্য।’ ভাষা বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী আবদুল আল মামুন বলেন, ‘আমার প্রেসারের সমস্যা হলে মেডিকেলে যাই চিকিৎসা নিতে। কিন্তু জরুরি বিভাগে থাকা চিকিৎসক বলেন, তিনি যার ইচ্ছে প্রেসার মাপেন- ইচ্ছে না হলে মাপেন না। সেখানে আমার সঙ্গে তিনি ভালো ব্যবহারও করেননি।’ এসব বিষয়ে মেডিকেল সেন্টারের প্রধান চিকিৎসক ডা. তবিবুর রহমান শেখ বলেন, ‘আমাদের এখানে কোনো বিশেষজ্ঞ নেই। যারা ডিগ্রি করেছেন তাদের দিয়ে চিকিৎসা কার্যক্রম চালানো হচ্ছে। তবে মেডিকেলে বিশেষজ্ঞদের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের কাছে নয়টি বিশেষজ্ঞ পদের নিয়োগ দেওয়ার জন্য আবেদন করেছি। কিন্তু এখনো এ বিষয়ে মঞ্জুরি কমিশন এ বিষয়ে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।’

সর্বশেষ খবর