বৃহস্পতিবার, ৭ মার্চ, ২০১৯ ০০:০০ টা
প্রকৃতি

শামুকখোল গ্রামে পাখির অভয়াশ্রম

নীলফামারী প্রতিনিধি

শামুকখোল গ্রামে পাখির অভয়াশ্রম

সচেতনতার অভাব ও আবাসস্থল গড়ে না ওঠায় বিলুপ্ত হচ্ছে দেশের বিভিন্ন প্রজাতির পাখি। এর মধ্যে রয়েছে সারস জাতীয় শামুকখোল পাখি। নীলফামারীর সৈয়দপুরের প্রত্যন্ত একটি গ্রামে বসবাস করছে বিপন্ন প্রজাতির এই পাখি। গ্রামবাসীরা করছে পাখিগুলোর পরিচর্যা। উপজেলা প্রশাসন ইতিমধ্যে পাখির অভয়াশ্রম ঘোষণা করেছে গ্রামটিকে। স্থানীয় সেচ্ছাসেবী সংগঠন সেতুবন্ধনের সদস্যরা করছে নজরদারি। পৃথিবীতে দুই প্রজাতির শামুকখোল পাখি রয়েছে। বাংলাদেশ, ভারত, শ্রীলঙ্কাসহ দক্ষিণ এশিয়ার অধিকাংশ অঞ্চল এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার স্থায়ী সাদা বর্ণের পাখি শামুকখোল। শুধু পিঠ ও ডানায় রয়েছে কালো অংশ। অপর প্রজাতিটি আফ্রিকার বেশির ভাগ অঞ্চলের স্থায়ী পাখি। এরা পুরো কালো বর্ণের। মূলত শামুকখোল বড় আকারের জলচর পাখি।

এদের ঠোঁট বড় ও পাশ থেকে খানিকটা চাপা। ঠোঁটের নিচের অংশ ওপরের দিকে বাঁকানো। বাংলাদেশের বন্যপ্রাণী আইনে শামুকখোল পাখির এ প্রজাতিটি সংরক্ষিত হলেও বর্তমানে এদের সংখ্যা ক্রমেই কমছে। আবাসস্থল, খাবার ও নিরাপত্তা থাকলে এরা স্থায়ীভাবে বসবাস করে। নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলার সোনাখুলী গ্রামের বট-পাকুড় গাছে বাসা বেঁধেছে দুই শতাধিক শামুকখোল পাখি। শহর থেকে পাখিপ্রেমিক ও স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা আসে শামুকখোল পাখি দেখতে। সৈয়দপুর সরকারি কলেজের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক মো. মতিউর রহমান বলেন, বড় শামুখোলরা বেশি খাদ্য খায়। পাশাপাশি বসবাসের জন্য বেশ পুরাতন লম্বা গাছ এদের প্রথম পছন্দ। তাই প্রাচীন গাছগুলোতে এরা বাসা বাঁধে। তবে পাখিটি অনেকটা দুর্লভ। এক সময় বাংলাদেশের সব জায়গায় শামুকখোল দেখা গেলেও এখন নেই। আর শামুকের প্রতি আসক্তির কারণেই এই পাখি এখানে শামুকভাঙ্গা, শামুকখোর, শামুকখোল কিংবা শামখোল নামে পরিচিতি পেয়েছে। সেতুবন্ধন সংগঠনের সভাপতি আলমগীর হোসেন বলেন, এটি প্রায় বিলুপ্ত। খুবই কম দেখা মেলে পাখিটির। তাই এ পাখিটির যত্নসহ সার্বিক বিষয় দেখাশোনা করার জন্য আমরা সচেতনতাসহ স্থানীয় প্রশাসনের সহযোগিতা নিয়ে কাজ করছি। সৈয়দপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার গোলাম কিবরিয়া বলেন, যে কোনো পাখি প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষাসহ মানুষের সব ক্ষেত্রে উপকার করে। তাই শুধু শামুকখোলই নয়, সবুজ প্রকৃতিতে বিচরণকারী সব পাখিরই অভয়ারণ্য থাকা উচিত। সৈয়দপুরে পাখির অভয়াশ্রম গড়ে তোলা হবে। যাতে প্রাণিসম্পদের প্রাচুর্যতা আমাদের সমাজের মধ্যে বিরাজ করে আর সে লক্ষ্যে উপজেলা প্রশাসন সার্বক্ষণিক সচেষ্ট রয়েছে। পাখি শিকারিদের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত থাকবে এবং সব পাখির অভয়াশ্রমের পরিবেশ দেওয়ার কথা জানালেন তিনি।

সর্বশেষ খবর