বুধবার, ২০ মার্চ, ২০১৯ ০০:০০ টা

মাদক যায় মধ্যপ্রাচ্যে, বাহন বিমান

বিদেশে ক্ষুণ্ণ হচ্ছে দেশের সুনাম

মুহাম্মদ সেলিম, চট্টগ্রাম

মাদক পাচারের নিরাপদ বাহনে পরিণত হয়েছে বিমান। কখনো দাঁতের মাজন, রান্না করা খাবার, কখনো বা তোশক কিংবা কাপড়ের মধ্যে মাদক পাচার হচ্ছে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে। গত এক বছরে চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পাচারের সময় আটটি চালান আটক করা হয়। এর মধ্যে ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে আটক করা হয় মাদকের দুটি চালান। চালানগুলোর বেশিরভাগেরই গন্তব্য ছিল মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশ। শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ম্যানেজার সরোয়ার ই জাহান বিমানে মাদক পাচারের কথা স্বীকার করে বলেন, ‘আন্তর্জাতিক মাদক চক্রের সদস্যরা এর সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা আছে বলে জানতে পেরেছি।’ চট্টগ্রাম সমিতি ওমানের সভাপতি ইয়াছিন চৌধুরী সিআইপি বলেন, মাদকের চালান নিয়ে দেশের বিমানবন্দরকে ফাঁকি দিতে পারলেও অনেক সময় ওমানে গিয়ে ধরা পড়েন পাচারকারীরা। গ্রেফতার হওয়ার পর ওমানের গণমাধ্যমগুলো ফলাও করে প্রচার করে আটক হওয়া ড্রাম ও ব্যক্তির নাম। এতে করে বিদেশের মাটিতে দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে। তাই বিদেশে মাদক পাচারের হোতাদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনতে হবে।

জানা যায়, মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে বসবাসকারী বাংলাদেশিদের মধ্যে ইয়াবা ও গাঁজার ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। তাই মাদক পাচারকারীরা দেশের বাইরে নজর দিয়েছে। মাদক পাচারের বহনকারী হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে বিদেশ যাওয়া শ্রমিকদের। তাদের মোটা অঙ্কের টাকার লোভ দেখিয়ে মাদকের বাহক হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। মাদক পরিবহনের ক্ষেত্রে তারা অভিনব কায়দা অবলম্বন করছে। তোশক, রান্না করা খাবারে, জুতা, মলদ্বার, পেটে বিশেষ কায়দায় পাচার করা হচ্ছে ইয়াবা ও গাঁজা। গত মঙ্গলবার ইয়াবা ও গাঁজার চালানসহ গ্রেফতার হওয়া জমির উদ্দিন প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে বিমানবন্দর কর্মকর্তাদের জানান, ‘অপরিচিত একজন লোক ৫০ হাজার টাকার লোভ দেখিয়ে জুতা জোড়া দুটি পায়ে দিয়ে দুবাই নিয়ে যাওয়ার কথা বলেন। ওই টাকার লোভে জুতা দুটি পায়ে দিয়ে দুবাই নিয়ে যাচ্ছি।’ শাহ আমানত বিমানবন্দরের ম্যানেজার সরোয়ার ই জাহান বলেন, ‘বিমানবন্দরে মাদক স্ক্যানিং করার মতো কোনো বিশেষ মেশিন নেই। মূলত অভিজ্ঞতার ওপর ভিত্তি করেই এ চালানগুলো আটক করা হয়।’

গত মঙ্গলবার সকালে জুতার মধ্যে বিশেষ কায়দায় ৪৫২ পিস ইয়াবা ও ২০০ গ্রাম গাঁজা পাচারের সময় জমির উদ্দিন নামে আবুধাবিগামী এক যাত্রীকে গ্রেফতার করে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ। ১৮ মার্চ তোশকে ভরে অভিনব কায়দায় ওমানে গাঁজা পাচারকালে  রুবেল নামে এক বিমানযাত্রীকে গ্রেফতার করে চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ। এ সময় তার কাছ থেকে ছয় কেজি গাঁজা জব্দ করা হয়। শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের দেওয়া তথ্য মতে, গত এক বছরে আটটি মাদকের চালানে ১৪ হাজার পিস ইয়াবা এবং সাড়ে ছয় কেজি গাঁজা উদ্ধার করা হয়।

সর্বশেষ খবর