সোমবার, ২৫ মার্চ, ২০১৯ ০০:০০ টা
তৃণমূলে স্বাস্থ্যসেবা

তিন লাখ মানুষের চিকিৎসা সেবায় দুজন চিকিৎসক

নালিতাবাড়ী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স

নালিতাবাড়ী (শেরপুর) প্রতিনিধি

৪৯ জন চিকিৎসকের মধ্যে দুজন দিয়ে চলছে  শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলা ৫০ শয্যা বিশিষ্ট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। উদ্বোধনের চার বছরেও চিকিৎসক, কর্মচারী ও যন্ত্রপাতি দেওয়া হয়নি। একমাত্র অ্যাম্বুলেন্সটি নষ্ট দীর্ঘ দিন ধরে। ফলে এই উপজেলায় মুখ থুবড়ে পড়েছে চিকিৎসাব্যবস্থা। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার তিন লাখ মানুষের চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করতে ৩১ শয্যার হাসপাতালটিকে ৫০ শয্যায় উন্নীত করতে ২০০৭-২০০৮ অর্থবছরে দ্বিতল ভবন নির্মাণ করা হয়। পৌনে পাঁচ কোটি টাকা ব্যয়ে ১৯ শয্যার একটি ওয়ার্ড, তিনটি অত্যাধুনিক অপারেশন থিয়েটার, বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের চেম্বার নির্মাণ করা হয়। এ ছাড়া তৃতীয়-চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী কোয়ার্টার ও চিকিৎসকদের জন্য ১২টি আবাসিক কোয়ার্টার নির্মাণ করা হয়। নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার প্রায় সাড়ে তিন বছর পর ২০১৫ সালে এলাকার

সংসদ সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী তৎকালীন স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমকে নিয়ে ৫০ শয্যার নতুন ভবনটি উদ্বোধন করেন। দীর্ঘদিন ধরে চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত এলাকার মানুষ আশায় বুক বাঁধে। কিন্তু সে আশা আশাই থেকে যায়। উদ্বোধনের চার বছর পার হলেও, খাদ্য ও নার্স ছাড়া এখনো প্রশাসনিক অনুমোদন মিলেনি ৫০ শয্যা হাসপাতাল পরিচালনার জন্য। প্রয়োজনীয় সব যন্ত্রপাতি পেলেও ব্যবহার না করায় তা বস্তাবন্দী হয়ে পড়ে আছে।

সরেজমিনে হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, ৫০ শয্যা হাসপাতালের জন্য ৪৯ জন চিকিৎসক থাকার কথা। সেখানে কর্মরত রয়েছেন মাত্র ২ জন চিকিৎসক। এরমধ্যে দুজন মেডিকেল অফিসার ও একজন হোমিও মেডিকেল অফিসার। আর দুজন চিকিৎসক শেরপুর সদরে ডেপুটেশনে কাজ করছেন। একজন মাঝে-মধ্যে এসে কাজ করেন। এই ৫০ শয্যার হাসপাতালে কোনো অভিজ্ঞ চিকিৎসক নেই। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন চিকিৎসক জানান, ৩১ শয্যার হাসপাতালটিই চলছে জোড়াতালি দিয়ে। কাজেই ৫০ শয্যার হাসপাতালের কার্যক্রম কবে নাগাদ শুরু হবে, তা আমার জানা নেই। এই ৫০ শয্যা ঠিকমতো চালু হলে ছোটখাটো অপারেশন এখানেই করা সম্ভব হতো। মুমূর্ষু রোগীদের বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আনতে এবং গুরুতরদের উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা ও ময়মনসিংহ মেডিকেলে নিতে অ্যাম্বুলেন্সের প্রয়োজন হয়। গত ২৪ ফেব্রুয়ারি থেকে এটি বিকল হয়ে পড়ে রয়েছে। এটি মেরামত করতে  চার থেকে পাঁচ লাখ টাকার প্রয়োজন। হাসপাতালে অর্থ বরাদ্দ না থাকায় তা সম্ভব হচ্ছে না।

চিকিৎসা নিতে আসা কয়েকজন জানান, ক্লিনিকে গিয়ে চিকিৎসা করানোর সামর্থ্য নেই। তাই তারা বাধ্য হয়েই হাসপাতালে এসেও চিকিৎসা না পেয়ে ফিরতে হয়।

উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মাহমুদুল বাশার বলেন, ৫০ শয্যা হাসপাতাল পরিচালনার জন্য পর্যাপ্ত চিকিৎসক, লোকবল এবং অ্যাম্বুলেন্স প্রয়োজন। এ ব্যাপারে বহুবার আবেদন করা হয়েছে। খাদ্য, নার্স ও ওষুধের অনুমোদন মিলেছে। বাকিগুলোর খবর নেই।

সর্বশেষ খবর