সোমবার, ২৫ মার্চ, ২০১৯ ০০:০০ টা

ক্ষমতাচ্যুত হচ্ছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী!

প্রতিদিন ডেস্ক

আগামী ১০ দিনের মধ্যে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী তেরেসা মে ক্ষমতাচ্যুত হবেন বলে জানিয়েছে দেশটির প্রভাবশালী পত্রিকা ‘সানডে টাইমস’। গতকাল এ খবর প্রকাশ করা হয়। এছাড়াও দেশটির বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, প্রধানমন্ত্রী তেরেসা মে’র বিরুদ্ধে একটি ‘পূর্ণ মন্ত্রিপরিষদ ক্যু’ হতে যাচ্ছে। কেননা, সিনিয়র মন্ত্রীরা তাকে ক্ষমতাচ্যুত করার উদ্যোগ নিয়েছেন। প্রসঙ্গত,  ব্রেক্সিট নিয়ে অস্থিরতা বিরাজ করছে ব্রিটিশ পার্লামেন্টে। এরই মধ্যে সেই অস্থিরতা ছড়িয়ে পড়েছে রাজপথেও। আরও একবার গণভোটের দাবিতে লন্ডনে মিছিল করেছে লাখো মানুষ। ‘পুট ইট টু দ্য পিপল’ নামের একটি সমাবেশে দেশটির প্রায় ১০ লাখ মানুষ অংশ নিয়েছেন। ডাউনিং স্ট্রিটের একটি শীর্ষ সূত্র মেইল জানিয়েছে, ‘প্রধানমন্ত্রীর (মে) ভবিষ্যৎ নিয়ে এখনো আলোচনা চলছে।’ সানডে টাইমস জানিয়েছে, ‘এখনো পর্যন্ত মে তার পদত্যাগের বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত জানাননি। স্বামীর  প্রেরণায় এখনো তিনি লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন।’ তবে মন্ত্রীরা তাকে পদত্যাগে বাধ্য করতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়ার হুমকি দিচ্ছেন। প্রতিবেদনে বলা হয়, তাকে (মে) মন্ত্রিসভার সদস্যরা জানিয়ে দিয়েছেন ‘হয় গণপদত্যাগ নয়তো গণনিন্দার’ মুখে পড়তে যাচ্ছেন আপনি।

এদিকে ব্রেক্সিটপন্থি কয়েকজন মন্ত্রী তাকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন যে, তিনি যদি পদত্যাগ করেন কিংবা পদত্যাগের জন্য নির্দিষ্ট তারিখ ঘোষণা করেন তাহলে পার্লামেন্টে  ব্রেক্সিট বিষয়ে তাকে সমর্থন দেবেন তারা। এরই মধ্যে  মে’র স্থলাভিষিক্ত কে হবেন সে বিষয়ে জোর আলোচনা শুরু হয়েছে মন্ত্রিসভায়। এই আলোচনায় এগিয়ে আছেন  মে’র ডেপুটি লিডিংটন ও  ব্রেক্সিটপন্থি মাইকেল গোভ। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, থেরেসাকে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে সরানোর পাশাপাশি আগামী বছর নেতৃত্ব নির্বাচনের আগ পর্যন্ত তার জায়গায় ‘অন্তর্বর্তী নেতা’ নির্বাচনের কথাও ভাবছেন মন্ত্রিসভার সদস্যরা। তবে অন্তর্বর্তী নেতা হিসেবে বেছে নেওয়া হবে, তা নিয়ে ভিন্নমত রয়েছে দলের অভ্যন্তরে। দলের ব্রেক্সিটপন্থি এবং বিরোধীদের পছন্দ ভিন্ন ভিন্ন নেতাদের। দলটির আইন প্রণেতারা বিবিসিকে বলেছেন, ইউরোপের সঙ্গে পরবর্তী পর্যায়ের আলোচনার দায়িত্বে থেরেসা আর থাকবেন না, এমন নিশ্চয়তা পেলে অনিচ্ছা সত্ত্বেও তার চুক্তি অনুমোদন করতে পারেন তারা। এদিকে  থেরেসা মে-র ওপর পদত্যাগের চাপ বাড়া কিংবা সিনিয়র মন্ত্রীদের অতিরিক্ত দায়িত্ব দিয়ে কাজ ভাগাভাগির খবর অস্বীকার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়। তবে বিবিসির রাজনৈতিক সম্পাদক লরা কুয়েনসবার্গ বলেছেন, ‘মারাত্মক টানাপড়েন’ চলছে। ধারণা করা হচ্ছে, আগামী সপ্তাহে ব্রেক্সিট প্রক্রিয়ায় নিয়ন্ত্রণ হারাতে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে। তার চুক্তির বিকল্প নিয়ে আগামী বুধবার পার্লামেন্টে বিতর্কের আয়োজন করতে যাচ্ছেন বিভিন্ন দলের আইনপ্রণেতাদের একটি গ্রুপ। থেরেসার চুক্তির অন্তত ছয়টি বিকল্প নিয়ে আগামী কয়েক দিনে ভোটাভুটি অনুষ্ঠিত হতে পারে। এসব বিকল্পের মধ্যে রয়েছে : আর্টিকেল ৫০ বাতিল এবং  ব্রেক্সিট বাতিল, আরেকটি গণভোট, প্রধানমন্ত্রীর চুক্তির পাশাপাশি একটি শুল্কবিভাগ প্রতিষ্ঠা এবং একক বাজারে প্রবেশাধিকার, কানাডা স্টাইলে একটি মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি এবং চুক্তি ছাড়াই ব্রেক্সিট বাস্তবায়ন।

সর্বশেষ খবর