মঙ্গলবার, ২৬ মার্চ, ২০১৯ ০০:০০ টা

মানুষের দোরগোড়ায় স্বাধীনতার সুফল : প্রধানমন্ত্রী

গণহত্যার স্বীকৃতির চেষ্টা, বাকশাল হলে কেউ ভোট নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে পারত না, স্বাধীনতা পদক ১৩ ব্যক্তি ১ প্রতিষ্ঠানকে

নিজস্ব প্রতিবেদক

মানুষের দোরগোড়ায় স্বাধীনতার সুফল : প্রধানমন্ত্রী

স্বাধীনতা পদকপ্রাপ্তদের সঙ্গে গতকাল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা -বাসস

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, স্বাধীনতার সুফলটা যেন বাংলার জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছায়, সাধারণ মানুষের আর্থ-সামাজিক অবস্থা উন্নত করতে পারি। উন্নত জাতি হিসেবে বিশে^ যেন একটা মর্যাদা ফিরে পেতে পারি সেটাই আমাদের লক্ষ্য। আর সেই লক্ষ্য নিয়েই আমরা কাজ করেছি। গতকাল বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে স্বাধীনতা পদক-২০১৯ প্রদান অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে দেশের ১৩ জন বিশিষ্ট ব্যক্তি ও একটি প্রতিষ্ঠানকে তাদের স্ব-স্ব ক্ষেত্রে গৌরবময় ও অসামান্য অবদান রাখার স্বীকৃতিস্বরূপ স্বাধীনতা পদকে ভূষিত করা হয়।     

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আজকের বাংলাদেশ আমাদের এক দশকের প্রচেষ্টার বাংলাদেশ। আজকের বাংলাদেশ বিশে^ উন্নয়নের রোল মডেল। বিশ^বাসী বাংলাদেশের কথা শুনলে সম্মানের চোখে দেখে। এইটুকুই আমার তৃপ্তি। তিনি বলেন,  ২৫শে মার্চ, গণহত্যা দিবস। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী নিরস্ত্র বাঙালির ওপর গণহত্যা চালিয়েছিল। আমরা লাখো মানুষ হারিয়েছি। কাজেই এ দিনটি গণহত্যা দিবস হিসেবে যেন আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পায় সেটার জন্য আমাদের প্রচেষ্টা চালাতে হবে। তিনি বলেন, বাংলাদেশের মানুষের একেবারে গ্রামের প্রতিটি মানুষের ঘরে যেন স্বাধীনতার সুফল পৌঁছায়, প্রতিটি মানুষ যেন উন্নত জীবন পায়। একটি মানুষও ক্ষুধার্ত থাকবে না, গৃহহারা থাকবে না। বিনা চিকিৎসায় কষ্ট পাবে না। তাদের জীবনটা অর্থবহ হবে, সুন্দর হবে, উন্নত হবেÑ সেটাই আমাদের লক্ষ্য।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজকে আমাদের সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রে মহান মুক্তিযুদ্ধ থেকে শুরু করে আমাদের শিল্প, কলা, সাহিত্য, গবেষণা বিভিন্ন ক্ষেত্রে যারা অবদান রেখেছেন তাদের আমরা স্বাধীনতা পুরস্কার দিতে পেরেছি, এটা আমি নিজেকে ধন্য মনে করি। গুণীজনকে আমরা সম্মান দিতে পেরেছি। তবে আমরা জানি এ রকম আরও অনেকজন রয়ে গেছেন, সবাইকে হয়তো আমরা দিতে পারছি না। তিনি বলেন, আমি নিজেকে ধন্য মনে করি যে গুণীজনদের আমরা সম্মান দিতে পেরেছি। তারপরও আমরা জানি, অনেকজন রয়ে গেছেন তাদেরকে আমরা দিতে পারছি না। যারা দেশের কল্যাণে, জনগণের কল্যাণে, মানুষের কল্যাণে কাজ করে তাদেরকে আমাদের খুঁজে খুঁজে বের করা প্রয়োজন। তারা যে মানব কল্যাণে অবদান রেখেছেন সেজন্য তারা পুরস্কারপ্রাপ্তির যোগ্য।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আজকের বাংলাদেশ অন্তত আমাদের এক দশকের প্রচেষ্টার ফলে এখন এই অর্থ বছরে প্রবৃদ্ধি ৮ ভাগ অর্জন করতে যাচ্ছি। আমাদের মাথাপিছু আয় যেখানে এক হাজার ৭১১ ডলার অর্জন করেছিলাম, সেটা আমরা ১৯০৯ মার্কিন ডলার অর্জন করতে যাচ্ছি। দেশের জনগণের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তারা আমাদের ওপর আস্থা রেখেছেন, বিশ^াস রেখেছেন। আমাদের ভোট দিয়ে আবার তাদের সেবা করার সুযোগ দিয়েছেন এবং সামনে আরও কিছুদিন আমরা সময় পাচ্ছি। এই দেশটাকে এগিয়ে নিয়ে যাবার।

পদক পেলেন যারা : স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধে অবদানের জন্য শহীদ বুদ্ধিজীবী মোফাজ্জল হায়দার চৌধুরী (মরণোত্তর), শহীদ এ টি এম জাফর আলম (মরণোত্তর), মুক্তিযোদ্ধা আবদুল খালেক (মরণোত্তর), অধ্যাপক মোহাম্মদ খালেদ (মরণোত্তর), সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির প্রাক্তন সভাপতি ব্যারিস্টার শওকত আলী খান (মরণোত্তর), মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, সাবেক গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন এবং ডা. কাজী মিসবাহুন নাহার স্বাধীনতা পুরস্কার পেয়েছেন।

চিকিৎসায় ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. নুরুন্নাহার ফাতেমা বেগম, সমাজসেবা/জনসেবায় অর্থনীতিবিদ ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ, সংস্কৃতিতে মুর্তজা বশীর, সাহিত্যে হাসান আজিজুল হক, গবেষণা ও  প্রশিক্ষণে অধ্যাপক হাসিনা খাঁনকে এ পুরস্কার দেওয়া হয়েছে। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব এগ্রিকালচারকে (বিআইএনএ) এ পুরস্কারে ভূষিত করা হয়।

সর্বশেষ খবর