বুধবার, ২৭ মার্চ, ২০১৯ ০০:০০ টা
অষ্টম কলাম

ইঁদুরের দেহে নতুন কৃমির সন্ধান

ওলী আহম্মেদ, শেকৃবি

বিভিন্নভাবে ইঁদুর থেকে ছড়িয়ে পড়া এক বিশেষ অন্তঃপরজীবী (কৃমি) থেকে মানবদেহে অন্ননালি প্রদাহ, অধিক লালা নিঃসরণ, দাঁতের ব্যথা, গলবিল প্রদাহ, গ্যাস্ট্রিক, আলসার, স্ট্রোক কিংবা স্নায়ুবিক বিকলতার মতো কঠিন অসুখ বাসা বাঁধতে পারে। সম্প্রতি রাজধানীর শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শেকৃবি) একদল গবেষক ইঁদুরের মধ্যে থাকা ‘গনজাইলোনেমা’ নামক এমন এক কৃমি শনাক্ত করেছেন, যা মানুষের শরীরে বিভিন্ন রোগ সৃষ্টির জন্য দায়ী। এক বছরের বেশি সময় নিয়ে শেকৃবি রিসার্চ সিস্টেম (সাউরেস) এর তত্ত্বাবধানে এনিম্যাল সায়েন্স অ্যান্ড ভেটেরিনারি মেডিসিন অনুষদের মাইক্রোবায়োলজি ও প্যারাসাইটোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান সহযোগী অধ্যাপক ড. উদয় কুমার মহন্তের নেতৃত্বে বিভাগের প্রভাষক এস এম আবদুল্লাহ এবং এম এস ফেলো অমৃত  বর্মণের প্রচেষ্টায় এ গবেষণা সম্পন্ন হয়। গবেষক দল জানায়, ‘ঢাকা শহরের বিভিন্ন ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা (তেজগাঁও, আগারগাঁও, তালতলা, মোহাম্মদপুর), কিছু বস্তি, মুদির দোকান, বাসাবাড়ি এবং ধানখেত থেকে ৭০টি ইঁদুর সংগ্রহ করা হয়। যার ৫০টি ইঁদুরই বিভিন্ন কৃমি দ্বারা আক্রান্ত। আক্রান্ত এসব ইঁদুরে ৫ ধরনের কৃমি বেশি পরিমাণে উপস্থিত। যার মধ্যে শতকরা ৮০ ভাগ কৃমিই মানুষের শরীরে বিভিন্ন রোগ সৃষ্টিতে সক্ষম। আর শনাক্তকৃত কৃমিগুলোর মধ্যে গনজাইলোনেমা নিওপ্লাস্টিকাম এর উপস্থিতি শতকরা ৩৫ ভাগ।’ গবেষকদের দাবি, তারাই সর্বপ্রথম বাংলাদেশে ইঁদুরের মধ্যে গনজাইলোনেমা কৃমি শনাক্ত করতে সক্ষম হয়েছেন। গবেষক অমৃত বর্মণ জানান, আক্রান্ত ইঁদুরের মলের মাধ্যমে কৃমিগুলোর ডিম পরিবেশে আসে। এই ডিম পরে পাখাবিহীন বা মাছিজাতীয় কীট (ফ্লি), গোবরে পোকা, আরশোলা ইত্যাদির মাধ্যমে মানবদেহে কৃমিরূপে সংক্রমিত হতে পারে। এ ব্যাপারে ড. উদয় পরামর্শ দিয়ে বলেন, ‘এরূপ সমস্যা সমাধানে প্রথমত স্বাস্থ্যকর স্যানিটেশন ব্যবস্থায় জোর দিতে হবে। খাবার সব সময় ঢেকে রাখার পাশাপাশি অন্যসব খাদ্যসামগ্রীও ইঁদুর থেকে দূরে রাখতে হবে।’ তিনি জানান, ‘এক্ষেত্রে জনসচেতনতা সৃষ্টিতে উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন উদ্যোগ নিলে আমরা প্রয়োজনীয় কারিগরি সহযোগিতা প্রদান করব।’

সর্বশেষ খবর