শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০১৯ ০০:০০ টা

আচরণবিধি লঙ্ঘনে ইসির নির্দেশ মানছেন না এমপিরা

আইনি জটিলতা ও অনিয়মে ৫ উপজেলার নির্বাচন স্থগিত

গোলাম রাব্বানী

আচরণবিধি লঙ্ঘনে ইসির নির্দেশ মানছেন না এমপিরা

উপজেলা পরিষদের ভোটে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) নির্দেশ আমলে নিচ্ছে না কেউ। বিগত তিন পর্বের মতো ৩১ মার্চ অনুষ্ঠেয় চতুর্থ পর্বের নির্বাচনেও আচরণবিধি লঙ্ঘনসহ নানা অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা, সংসদ সদস্য ও প্রশাসনের বিরুদ্ধে। ইসির নির্দেশনা উপেক্ষা করে স্থানীয় সরকার দলীয় সংসদ সদস্য, আওয়ামী লীগের প্রার্থী, নেতা-কর্মী ও দলের বিদ্রোহীরা আচরণবিধি লঙ্ঘন করছেন। চতুর্থ ধাপের নির্বাচনে ইতিমধ্যে ক্ষমতাসীন দলের সাতজন সংসদ সদস্যের বিরুদ্ধে আচরণবিধি লঙ্ঘন ও প্রভাব খাটানোর অভিযোগ উঠেছে। তবে নির্বাচন কমিশন তাদের নির্বাচনী এলাকা ছাড়ার নির্দেশনা দিয়েই দায় সারছে। বুধবারের মধ্যে তাদের এলাকা ছাড়ার নির্দেশনা দেওয়া হলেও অনেকেই নিজ নিজ এলাকায় অবস্থান করছেন বলে জানা গেছে। অনেকেই আবার জেলা সদরে বসে কলকাঠি নাড়ছেন, প্রশাসনকে প্রভাবিত করছেন। নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারা বলছেন, এমপিদের এলাকা ছাড়ার নির্দেশনা দেওয়া ছাড়া ইসির কিছুই করার নেই। যদিও এক এমপিকে হুমকি দেওয়া হয়েছিল এলাকা না ছাড়লে নির্বাচন বন্ধ ঘোষণা করা হবে। শেষ পর্যন্ত ওই এলাকার নির্বাচন বন্ধও হয়নি, ওই এমপিও এলাকা ছেড়ে যাননি।  বিগত তিনটি পর্বের মতো ৩১ মার্চের নির্বাচন নিয়ে ভোটারদের মধ্যে তেমন আগ্রহ লক্ষ করা না গেলেও চতুর্থ দফার ভোট নিয়ে অভিযোগের শেষ নেই। কোনো কোনো এলাকায় বিদ্রোহী ও স্বতন্ত্র প্রার্থীরা ভোটের আগের রাতে ব্যালটে সিল মারার ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন। আজ মধ্যরাতে ১১২ উপজেলায় নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা শেষ হবে। নির্বাচনী আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে আজ থেকে মাঠে নামছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। ভোটের পরেও দুই দিন মাঠে থাকবেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। চতুর্থ ধাপের নির্বাচকে সামনে রেখে টাঙ্গাইল-৪, ৫, ৮, বাগেরহাট ৪, খুলনা-৬, ময়মনসিংহ-১১ ও যশোর-২ এর সংসদ সদস্যকে স্ব স্ব নির্বাচনী এলাকা ত্যাগ করতে সংশ্লিষ্ট এমপিদের কাছে চিঠি পাঠানো হয়েছে বলে জানান ইসির যুগ্মসচিব ফরহাদ আহাম্মদ খান। এ কর্মকর্তা জানান, সংশ্লিষ্ট এমপিরা নিজ নির্বাচনী এলাকার উপজেলা ভোটে প্রার্থীর পক্ষে প্রচারণা চালাচ্ছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। তাই তাদের যত দ্রুত সম্ভব এলাকা ছাড়ার জন্য বলা হয়েছে। ইসির উপসচিব মো. আতিয়ার রহমান স্বাক্ষরিত এ সংক্রান্ত চিঠি পাঠানো হয় টাঙ্গাইল-৮ মো. জোয়াহেরুল ইসলাম, টাঙ্গাইল-৫ মো. ছানোয়ার হোসেন, টাঙ্গাইল-৪  মোহাম্মদ হাছান ইমাম খান, খুলনা-৬ মো. আক্তারুজ্জামান, বাগেরহাট-৪ মো. মোজাম্মেল হোসেন, ময়মনসিংহ-১১ কাজিম উদ্দিন আহম্মেদ ও যশোর-২ মো. নাসির উদ্দিনকে। তাদের অনতিবিলম্বে এলাকা ছাড়ার জন্য বলা হয়েছে।

আইনি জটিলতা-অনিয়মে ৫ উপজেলার নির্বাচন স্থগিত : আইনি জটিলতা, অনিয়ম ও সহিংসতার কারণে চতুর্থ ধাপে অনুষ্ঠেয় পাঁচটি উপজেলা পরিষদের ভোটগ্রহণ স্থগিত করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। ইসির যুগ্ম-সচিব ফরহাদ আহাম্মদ খান জানান, কুমিল্লার বড়ুরা, ময়মনসিংহের ত্রিশাল, ফেনীর ছাগলনাইয়া, পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া, খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার ভোটগ্রহণ স্থগিত করা হয়েছে। ৩১ মার্চ চতুর্থ ধাপে ১২৭ উপজেলায় ভোটগ্রহণের কথা ছিল। এ পাঁচটি স্থগিত ও ১৫টিতে সবাই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়ায় ১০৭ উপজেলায় ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে রবিবার।

এক এসপি ও ৪ ওসি প্রত্যাহার : এদিকে একজন এসপি ও দুইজন ওসিকে প্রত্যাহার ও দুই ওসিকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। গতকাল সন্ধ্যায় ইসির যুগ্ম-সচিব ফরহাদ আহাম্মদ খান এ তথ্য জানান। ইসির কর্মকর্তারা জানান, পিরোজপুরের এসপি সালাম কবির, মঠবাড়িয়ার ওসি শওকত আনোয়ার ইসলাম, বরগুনার আমতলীর ওসি আলাউদ্দিন মিলনকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। এছাড়া কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়ার ওসি মো. শাহাজাহান কবির ও ভোলার তজুমদ্দিনের ওসি ফারুখ আহমদকে নির্বাচনী দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে বলেও জানা গেছে।

সর্বশেষ খবর