সোমবার, ১ এপ্রিল, ২০১৯ ০০:০০ টা

কঠোর নিয়মে লেবাননের শ্রমবাজার

খুনোখুনি, অপকর্ম ও প্রতারণা কমাতে দূতাবাসের হুঁশিয়ারি

কূটনৈতিক প্রতিবেদক

লেবাননে যেতে ইচ্ছুক পুরুষ কর্মীদের অভিবাসনের জন্য ১ লাখ ১৭ হাজার ৭৮০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে নারীদের কাজের জন্য যেতে কোনো খরচ বা অর্থ ব্যয়ের প্রয়োজন হবে না। নারী কর্মীদের অভিবাসনে যাবতীয় খরচ বহন করবে লেবাননের নিয়োগকর্তা বা স্পন্সর। লেবাননে বাংলাদেশ দূতাবাসের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। অভিবাসন ব্যয় নির্ধারণের পাশাপাশি দালাল ও রিক্রুটিং এজেন্সিগুলোর প্রতিও হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছে দূতাবাস।

দূতাবাসের শ্রম সচিব স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, যদি কোনো রিক্রুটিং এজেন্সি বা দালাল নির্ধারিত অভিবাসন ব্যয়ের চেয়ে বেশি টাকা নেয় বা নিয়মের ব্যত্যয় ঘটায় তাহলে তার লাইসেন্স বাতিল করা হবে। ওই এজেন্সির বিরুদ্ধে বৈদেশিক কর্মসংস্থান ও অভিবাসন আইন-২০১৩ এর সংশ্লিষ্ট ধারা অনুযায়ী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে সতর্ক করে দেওয়া হয়। এ বিষয়ে কোনো রিক্রুটিং এজেন্সি উল্লিখিত অর্থের চেয়ে বেশি দাবি করলে তা প্রবাসীকল্যাণ ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়, দূতাবাস, জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর জেলা অফিস বা নিকটস্থ থানায় জানানোর অনুরোধ করেছে দূতাবাস। ইউরোপ, এশিয়া ও আফ্রিকার মিলনস্থল পশ্চিম এশিয়ার দেশ লেবাননে প্রায় এক লাখ ৫০ হাজার বাংলাদেশি বিভিন্ন পেশায় কাজ করছেন। এর মধ্যে নারী শ্রমিকই আছেন প্রায় ৮০ হাজার। তবে লেবাননে কাজ করতে গিয়ে প্রবাসী বাংলাদেশিদের বিরুদ্ধে নানা অপকর্মের অভিযোগ উঠেছে বেশ জোরের সঙ্গেই। প্রবাসীদের অপকর্ম ও বাংলাদেশি দালালদের প্রতারণা মাত্রা ছেড়ে যাওয়ায় গত বছরের শেষের দিকে লেবানন বাংলাদেশ থেকে কর্মী নেওয়া প্রায় বন্ধ করে দেয়। তখন লেবাননে বাংলাদেশের একটি প্রতিনিধি দল সফরে গেলে সেখানকার সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়, যারা বাংলাদেশ থেকে লেবাননে যান তারা অনেক ক্ষেত্রে বিতর্কিত কর্মকান্ডে  জড়িয়ে পড়েন। পরে গত আগস্টে লেবাননে কর্মী পাঠানো সাময়িক স্থগিত রাখে বাংলাদেশ সরকার। তবে অনিয়ম ও অপকর্ম নিয়ন্ত্রণে আনতে কঠোরভাবে অভিবাসন আইন মানার প্রতিশ্রুতিতে ফের চালু হয় শ্রমবাজার। দূতাবাস কর্মকর্তারা জানান, নতুন পদ্ধতিতে যেসব রিক্রুটিং এজেন্সি কর্মী নেবে তাদের প্রথমে দূতাবাসে আবেদন করতে হবে। দূতাবাস যাচাই-বাছাই করে যদি দেখে ওই কোম্পানির কর্মী আনার সামর্থ্য রয়েছে, তবেই তাদের অনুমতি দেওয়া হবে।

অপকর্মের পাশাপাশি খুনোখুনি : কর্মস্থান থেকে পালিয়ে গিয়ে নানান অনৈতিক ব্যবসায় জড়ানোর পাশাপাশি খুনোখুনিতেও লিপ্ত হয়েছেন বাংলাদেশি প্রবাসীরা। গত অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহে শাহীনা বেগম নামে এক নারী খুন হন। তাকে খুন করার অপরাধে চার বাংলাদেশি নারী কর্মী বর্তমানে লেবাননে কারাবন্দী। পরের মাস নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে রাজধানী বৈরুতে পরকীয়ার জেরে স্বামীকে হত্যার উদ্দেশ্যে গলায় ছুরি চালান আরেক বাংলাদেশি নারী। পরে নিজের গলায়ও ছুরি চালান তিনি। এর আগে এপ্রিলে বৈরুতের আলবস্তা নামক এলাকায় গলায় ছুরি চালিয়ে স্ত্রীকে হত্যা করেন এক বাংলাদেশি।

সর্বশেষ খবর