মঙ্গলবার, ২ এপ্রিল, ২০১৯ ০০:০০ টা
নদী বাঁচাও ৪৬

পলি কচুরিপানায় ভরাট কালাডুমুরের পেট

মহিউদ্দিন মোল্লা, কুমিল্লা

পলি কচুরিপানায় ভরাট কালাডুমুরের পেট

কালাডুমুর। কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলার একটি নদী। এই নদীর পানি দিয়ে ধান চাষ করছে কুমিল্লা ও চাঁদপুর জেলার চার উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়নের কৃষকরা। নদীটির উৎসমুখ গোমতী নদীর গৌরিপুর এলাকা। এটিকে গোমতীর শাখা নদীও বলা হয়। দীর্ঘদিন খনন না হওয়ায় নদীটি মরার উপক্রম হয়েছে। নদীর পেটে পলি জমে পানির ধারণ ক্ষমতা কমে গেছে। নদীটির পেট এখন পলি আর কচুরিপানায় ভরাট হয়ে আছে। নদীর পানি দিয়ে পর্যাপ্ত সেচ দিতে না পারায় ব্যাহত হচ্ছে চাষাবাদ। এ নদীর পানি দিয়ে চাষ হচ্ছে ৫০ হাজার বিঘা জমি। গৌরিপুর থেকে ইলিয়টগঞ্জ ব্রিজ পর্যন্ত ১৩ কিলোমিটার এলাকা খনন হলে হাসি ফুটবে ১০ সহস্রাধিক কৃষকের মুখে। সরেজমিন গিয়ে জানা যায়, নদীটির দুই পাড়ে কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলার গৌরিপুর, ঝিংলাতলী, ইলিয়টগঞ্জ উত্তর ও দক্ষিণ ইউনিয়নের রায়পুর, বানিয়াপাড়া, চান্দ্রা, আদমপুর, বিটমান, টামটা, সিংগুলা, বিটতলা ও নয়াকান্দি, মুরাদনগর উপজেলার বাবুটিপাড়া ইউনিয়ন, চান্দিনা উপজেলার সুহিলপুর ও বাতাঘাসী ইউনিয়ন, চাঁদপুরের কচুয়া উপজেলার সাচার এলাকাসহ বিভিন্ন গ্রামের ১০ সহস্রাধিক চাষি এ নদীর পানির ওপর নির্ভরশীল। বোরো মৌসুমে নদীটি থেকে পর্যাপ্ত পানি পাওয়া গেলে উৎপন্ন হতো ১২ লাখ মণ ধান। সিংগুলা গ্রামের কৃষক কামাল উদ্দিন জানান, কৃষি কাজে সেচ, গোসলসহ গৃহস্থালি কাজের জন্য পানির চরম সংকটে পড়েছেন নদী পাড়ে বসবাসকারীরা। এ ছাড়া পানি শুকিয়ে যাওয়ায় নদীতে মাছ ধরারও সুযোগ নেই জেলেদের। এতে নদী পাড়ের গ্রামের জেলেরাও পড়েছেন চরম বিপাকে। জরুরি ভিত্তিতে এই নদী খনন করা প্রয়োজন। স্থানীয় কৃষি উদ্যোক্তা মতিন সৈকত জানান, এই নদী দিয়ে এক সময় পাল তোলা নৌকা চলত। দেশীয় বিভিন্ন প্রজাতির মাছ পাওয়া যেত নদীতে। দীর্ঘদিন নদীটি খনন না হওয়ায় পলি জমে পানি নেই বললেই চলে। নদীর পেট পলি আর কচুরিপানা দখল করে নিয়েছে। কবে নদীটি খনন হয়েছে তা কারও মনে নেই। নদীটি খননের জন্য আমরা স্থানীয় কৃষকদের নিয়ে বিভিন্ন সময় বিক্ষোভ সমাবেশ করেছি। নদীটি খনন হলে এ এলাকায় প্রতি বোরো মৌসুমে ঘরে ঘরে ধান তোলার উৎসব লেগে থাকত। দাউদকান্দি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. সারোয়ার জামান বলেন, স্থানীয়রা কালাডুমুর নদীর পাড়ের জমিগুলোকে ফসলের গোলা (উৎপাদন অঞ্চল) বলেন। বোরো ফসল উৎপাদনে নদীটি খনন করা জরুরি। সেচ মৌসুমে পানি পাওয়া গেলে এখানের ফসল উৎপাদন দ্বিগুণ বেড়ে যাবে।

সর্বশেষ খবর