বুধবার, ৩ এপ্রিল, ২০১৯ ০০:০০ টা

সরকারকে ইউনিক ব্যবস্থা নিতে হবে

-মোবাশ্বের হোসেন

সরকারকে ইউনিক ব্যবস্থা নিতে হবে

বাংলাদেশের ফায়ার ব্রিগেডের পুরনো স্টেশনগুলোকে দুর্ঘটনার ঝুঁকিমুক্ত করতে রেট্রোফিটিং করে মজবুত করে গড়ে তুলতে হবে। একই সঙ্গে ভূমিকম্পের ঝুঁকিতে থাকা ঢাকা ও সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং সচিবালয়কেও দ্রুত রেট্রোফিটিং করতে হবে। নগরবিদ স্থপতি মোবাশ্বের হোসেন বাংলাদেশ প্রতিদিনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘আমাদের রাজনীতিবিদদের সন্তানরা সবাই দেশের বাইরে থাকেন। দেশে কোনো দুর্যোগের ঘটনা তাদের মোকাবিলা করতে হয় না। যদি এ দেশে থেকেই এই রাজনীতিবিদদের সন্তানদের বাধ্যতামূলকভাবে গ্র্যাজুয়েশনের ব্যবস্থা করা যেত তাহলে দুর্যোগে বাংলাদেশের যে করুণ পরিণতি হয় তার অনেকটাই কমে আসত। কেননা দুর্যোগ মোকাবিলা করার যে সিদ্ধান্ত তার বেশির ভাগই নেন রাজনীতিবিদরা।’ মোবাশ্বের হোসেন বলেন, ‘ঢাকাকে সুরক্ষিত শহর হিসেবে গড়ে তুলতে হলে সরকারকে ইউনিক ও জনবান্ধব পরিবহনব্যবস্থা, ফুটপাথ, গণপরিবহন ইত্যাদি নিশ্চিত করতে হবে। সুন্দর ঢাকা গড়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে আমাদের মন্ত্রীরা ফ্লাইওভারের মতো অবকাঠামো তৈরির প্রস্তাব দেন। অথচ ঢাকায় মাত্র ৬ শতাংশ মানুষ ফ্লাইওভার ব্যবহার করে। আর ৯০ শতাংশ মানুষ যারা ফ্লাইওভার ব্যবহার করেন না তাদের এ ধরনের স্থাপনা তৈরি করে বঞ্চিত করা হচ্ছে। আবার ফ্লাইওভারে যানজটও বেশি হয়। অর্থাৎ নগরের স্থাপনা তৈরিতে দায়িত্বপ্রাপ্তদের চিন্তাধারার মধ্যেই ভুল আছে। এ ধরনের অবাস্তব কা কারখানা বন্ধ করতে হবে। আর এমনটি করা হলে আগামী ছয় মাসের মধ্যে দেশের চেহারা পৃথিবীর মধ্যে শ্রেষ্ঠ হবে। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় থেকে যাদের প্রয়োজন নেই তাদেরও আন্তর্জাতিক প্রশিক্ষণের জন্য পাঠানো হয়। অথচ এসব প্রশিক্ষণে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের গিয়ে প্রশিক্ষণ নেওয়ার কথা। ফায়ার সার্ভিসকে দুর্যোগ মন্ত্রণালয়ের আওতায় থেকে কাজ করার কথা। কিন্তু এটি কাজ করছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নিয়ন্ত্রণে। ফলে ফায়ার সার্ভিস সংস্থাটি “ছাগলের তিন নম্বর বাচ্চ” হয়ে আছে। ফায়ার সার্ভিসে যারা কাজ করছেন তারা বিভিন্ন সময় জীবনের বাজি রেখে দুর্ঘটনার শিকার মানুষদের রক্ষা করেন। আমি অনুরোধ করব, ফায়ার সার্ভিসে কর্মরতদের ঘরবাড়ি মজবুত ও ভালোভাবে তৈরি করে দেওয়া হোক। এতে কোনো দুর্ঘটনা ঘটলেও তাদের পরিবারের সদস্যরা নিরাপদ থাকবেন এবং ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা নিশ্চিন্ত মনে কাজ করতে পারবেন।’

মোবাশ্বের হোসেন বলেন, ঢাকায় মাকড়সার জালের মতো মাটির নিচে গ্যাসের লাইন ছড়িয়ে আছে। পুরনো অনেক লাইনে আবার লিকেজ আছে। ভূমিকম্প হলে এসব লাইন থেকে কী যে ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটবে তা চিন্তা করা যায় না। আবার রাজধানীজুড়ে ঝুলতে থাকা বৈদ্যুতিক তারের জঞ্জাল থেকেও শর্টসার্কিট হয়ে যে কোনো মুহূর্তে দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা আছে।

 কোনো বড় ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ ঘটলে গ্যাসের লাইন ও বৈদ্যুতিক তারের জঞ্জালের জন্য পুরো ঢাকা অগ্নিকুন্ডে র মতো জ্বলবে। বেশ কয়েক বছর আগে একবার সিদ্ধান্ত হয়েছিল দুর্ঘটনা রোধে গ্যাসের লাইনে ‘অটো সেন্সর’ লাগানো হবে। এতে কখনো ভূমিকম্প হলে নির্ধারিত মাত্রায় কম্পন অনুভূত হবে এবং লাইনে সক্রিয়ভাবে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ হয়ে যাবে।

 

সর্বশেষ খবর