বুধবার, ৩ এপ্রিল, ২০১৯ ০০:০০ টা

কমপ্লায়েন্স অডিট চালু করুন

-ইকবাল হাবিব

কমপ্লায়েন্স অডিট চালু করুন

ভবনের নিরাপত্তার জন্য কমপ্লায়েন্স অডিট চালু করার দাবি জানিয়েছেন বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের যুগ্মসম্পাদক স্থপতি ইকবাল হাবিব। তিনি বলেন, অন্ন, বস্ত্র ছাড়া শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বাণিজ্য, অ্যাডমিনিস্ট্রেশন সবকিছু ঢাকাকেন্দ্রিক। ঢাকা সমস্ত সক্ষমতা নিয়ে এত চাপ আর বহন করতে পারছে না। আর অতিরিক্ত এ চাপ ঢাকাকে করেছে ঝুঁকিপূর্ণ। দুর্যোগ মোকাবিলা প্রসঙ্গে বাংলাদেশ প্রতিদিনকে তিনি এসব কথা বলেন। ইকবাল হাবিব বলেন, ব্যক্তিগতভাবে নগরায়ণে প্রত্যেক নাগরিকের যে অতিরিক্ত দায়িত্ববোধ থাকার কথা সে বিষয়ে সচেতন করার ক্ষেত্রে আমরা কখনই উদ্যোগী হইনি। অর্থাৎ যে হারে যেসব মানুষ ঢাকামুখী হচ্ছে এতে তারা রাজধানীতে এসে কীভাবে আচরণ করবেন বা তাদের কী করা উচিত আর কী করা অনুচিত এ বিষয়ে যে নীতিগত শিক্ষা তা দিন দিন কমে যাচ্ছে। তিনি বলেন, ‘এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে জবাবদিহিহীন ও সুশাসনহীন বিভিন্ন সংস্থা। দিনের পর দিন এসব সংস্থা দায়মুক্তি নিয়ে নিয়েছে যে তাদের এ নগর রক্ষায় কোনো দায় নেই। যদিও আমরা মনে করছি, জানমালের নিরাপত্তার তাগিদে তারা (বিভিন্ন সংস্থা) প্রতিটি ক্ষেত্রে আইন ও শাসন প্রতিপালনের দায়িত্বে রয়েছে। কিন্তু তারাই কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে বলে এটি “অননুমোদিত” ছিল। এগুলো বলে তারা দায়িত্ব এড়ানোর চেষ্টা করছে। ফলে দীর্ঘদিন ধরে আমরা জবাবদিহিহীন ও সুশাসনহীন একটা কর্মতৎপরতার মধ্য দিয়ে গিয়েছি। আর এ কারণে গত এক যুগে ফায়ার সার্ভিস কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যে, ঢাকায় লক্ষাধিক অগ্নিকা  ঘটেছে। কিন্তু এ লক্ষাধিক অগ্নিকান্ডে  দায়ের করা মামলার একটিরও বিচার হয়নি। মানুষ বুঝে নিয়েছে, ভবন নির্মাণ বিধিমালা না মেনেও ভবন নির্মাণ করা যায়। এতে ঢাকার ঝুঁকি আরও জেঁকে বসেছে।’

এই স্থপতি বলেন, ‘সারা পৃথিবীতে এই যে অনুশাসন, আইন ও বিধিবিধানগুলো রয়েছে প্রতি বছর প্রতিটি ভবন, প্রতিটি শিল্পকারখানা, প্রতিটি স্থাপনা কমপ্লায়েন্স কমিশনের মাধ্যমে নবায়নযোগ্য কমপ্লায়েন্স সার্টিফিকেশন নেয়। যদি কেউ তা নিতে ব্যর্থ হয় তবে তিনি তার ব্যবহারযোগ্যতা হারাবেন অর্থাৎ সেখানে থাকার অনুমতি পাবেন না। এতে কোনো ব্যবহারকারী যদি নিয়ম মেনে ভবন তৈরি না করেন তবে সংশ্লিষ্ট দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থা সেই ব্যবহারকারীর বিদ্যুৎ/গ্যাসের লাইন কেটে দেবে। এর ফলে মানুষের মধ্যে এক ধরনের ভয় তৈরি হবে। আমাদেরও এ ধরনের ব্যবস্থা চালু করা উচিত। এটি বাস্তবায়ন করার আগে একটি কমপ্লায়েন্স অডিট শুরু করা হোক। এতে যে ভবনগুলোর স্থাপনা খুব বেশি খারাপ তাদের এখনই ভবনের ত্রুটিপূর্ণ কাজগুলো সারার জন্য কিছুটা সময় দিয়ে নোটিস দেওয়া হোক। যাদের কম ত্রুটি আছে তাদের মেরামতের জন্য অল্প সময় দেওয়া হোক। আর যেগুলোর কোনো সংষ্কার করা যাবেই না সেগুলো ভেঙে ফেলা হোক। এ প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে আগে বসবাসযোগ্যতা নিশ্চিত হোক। তারপর ধীরে ধীরে প্রতি বছর ভবনের নিরাপত্তা জন্য মেরামত কাজ তদারকি করা হোক। এতে আমরা একটি বসবাসযোগ্য নগরীতে ফেরত যেতে পারব।’

সর্বশেষ খবর