মজুরি কমিশন বাস্তবায়নসহ ৯ দফা দাবিতে গতকাল খুলনায় দ্বিতীয় দিনের মতো ধর্মঘট পালন করেছেন রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলের শ্রমিকরা। তারা এদিন চার ঘণ্টা রাজপথ-রেলপথ অবরোধ করে রাখায় এ সময় পর্যন্ত রাজপথে যানবাহন ও রেলপথে রেল চলেনি। আন্দোলনের মুখে বন্ধ রয়েছে খুলনা-যশোরের ৯টি পাটকলের উৎপাদন।
গতকাল সকাল ৮টা পথকে ১২টা পর্যন্ত চার ঘণ্টা রাজপথ ও রেলপথ অবরোধ করে রাখেন শ্রমিকরা। এ সময় তারা নগরীর খালিশপুর নতুন রাস্তা মোড়ে খুলনা-যশোর মহাসড়ক, বিআইডিসি রোড ও রেলপথ অবরোধ করে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন। তারা টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে সড়ক ও রেলপথে যান চলাচল বন্ধ করে দেন। এ কারণে খুলনায় সকাল ৬টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত খুলনা রেলস্টেশন থেকে কোনো ট্রেন ছাড়েনি। এতে দুর্ভোগে পড়েন ট্রেন যাত্রী। তবে ১২টার পর থেকে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়। খুলনা স্টেশন মাস্টার মানিক চন্দ্র সরকার বলেন, অবরোধ সকাল ৮টা থেকে শুরু হলেও শ্রমিকরা ভোর ৬টা থেকেই ট্রেন চলাচলে বাধা দিয়েছেন। এ কারণে সকার ৬টার কমিউটার, সাড়ে ৬টার কপোতাক্ষ এক্সপ্রেস, সোয়া ৭টায় রূপসা এক্সপ্রেস, ৮টা ৪০ এ চিত্র এক্সপ্রেস ও ৯টা ১০ এ রকেট ছাড়া সম্ভব হয়নি। উল্লেখ্য, রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলে চলমান ৯ দফা দাবিতে আন্দোলনের অংশ হিসেবে মঙ্গলবার ভোর ৬টা থেকে এ ধর্মঘট শুরু হয়। টানা ৭২ ঘণ্টার ধর্মঘট চলবে আগামীকাল শুক্রবার সকাল ৬টা পর্যন্ত। বাংলাদেশ পাটকল শ্রমিক লীগ ও সিবিএ-ননসিবিএ পরিষদের ডাকে খুলনার ক্রিসেন্ট, প্লাটিনাম, খালিশপুর, দৌলতপুর, স্টার, ইস্টার্ন, আলিম এবং যশোরের জেজেআই ও কার্পেটিং জুট মিলের শ্রমিকেরা এ আন্দোলন কর্মসূচি পালন করছেন। পাটকল শ্রমিক নেতা খলিলুর রহমান বলেন, বিগত চার বছর ধরে সরকার ও বিজেএমসি মজুরি কমিশন বাস্তবায়নসহ শ্রমিকদের দাবি পূরণের কথা বললেও তা বাস্তবায়িত হয়নি। এ ছাড়া বকেয়া মজুরি, গ্রাচ্যুইটি, পিএফ’র টাকা প্রদান ও বদলি শ্রমিকদের স্থায়ীকরণের বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। এদিকে গত মঙ্গলবার ২০১৫ সালের ১ জুলাই থেকে রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলগুলোতে জাতীয় মজুরি স্কেল-২০১৫ অনুসারে শ্রমিকদের মজুরি নির্ধারণের প্রক্রিয়া শুরুর জন্য বিজেএমসি চিঠি দিলেও শ্রমিকরা তা প্রত্যাখ্যান করেছে। তাদের মতে, ওই চিঠিতে শ্রমিকদের ৯ দফা দাবি বাস্তবায়নের কোনো কথা বলা হয়নি। এ ছাড়া মজুরি কমিশন বাস্তবায়নের সুনির্দিষ্ট কোনো নির্দেশনাও চিঠিতে নেই। শ্রমিকরা জানান, দাবি মানা হলে আগামী ৭ তারিখ ঢাকায় বৈঠকের পর লাগাতার ধর্মঘটের কর্মসূচি দেওয়া হবে।
