সোমবার, ৮ এপ্রিল, ২০১৯ ০০:০০ টা

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে হামলার তালিকা করতে হবে

-এলিনা খান

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে হামলার তালিকা করতে হবে

ফেনীর মাদ্রাসাছাত্রীর গায়ে দেওয়া আগুনের ঘটনার মতো অপরাধগুলো জরুরি আইনের আওতায় এনে সেই মামলার বিচার দ্রুত কার্যকর করতে হবে। একই সঙ্গে সেই মামলার দ্রুত চার্জশিটও প্রস্তুত করতে হবে। সারা দেশে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে ফেনীর ঘটনাটির মতো অন্য যে ছাত্রীদের ওপর বর্বর হামলা হয়েছে এর একটি তালিকা তৈরি করে দ্রুত বিচার করতে হবে। গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বাংলাদেশ হিউম্যান রাইটস ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক অ্যাডভোকেট এলিনা খান এসব কথা বলেন। এই মানবাধিকারকর্মী বলেন, এর আগে দেশে অ্যাসিড-সন্ত্রাসের ঘটনাগুলো মহামারী আকার ধারণ করলে তা দ্রুত বিচারের আওতায় এনে অপরাধীদের শাস্তি প্রদানের ব্যবস্থা করা হয়। এতে সে সময় অ্যাসিড-সন্ত্রাসের ঘটনা অনেকাংশে কমে আসে। একইভাবে এ ধরনের নৃশংস ঘটনাগুলোর বিচারও দ্রুত বিচারের আওতায় আনতে হবে। এ ক্ষেত্রে কোনো ধরনের গাফিলতি করা যাবে না। বিশেষ করে এসব ঘটনায় বিচার পাওয়া নিয়ে সাধারণের মধ্যে এক ধরনের অনাস্থা তৈরি হয়েছে। এটি দূর করতে হবে। একই সঙ্গে এ ধরনের মামলাগুলোর বিচার পেতে কেন দেরি হচ্ছে তার কারণও বের করতে হবে। আর এ জন্য প্রয়োজন কেবল সংশ্লিষ্টদের সদিচ্ছা। তিনি বলেন, ‘আসামিদের সাজা না হওয়া এবং বিচারহীনতার কারণে অপরাধের মাত্রা ক্রমেই বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ অবস্থায় আসামিরা একের পর এক অপরাধ ঘটিয়ে পার পেয়ে যাচ্ছে। বিচারাধীন মামলাগুলোও দীর্ঘদিন ধরে আলোর মুখ দেখছে না। ফেনীর মাদ্রাসাছাত্রীর গায়ে আগুন দেওয়ার ঘটনায় অভিযুক্ত সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজউদ্দৌলাকে গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে ঠিকই। কিন্তু অভিযুক্ত ব্যক্তি কারাগারে থেকেও তার পরিচিতজনদের সহযোগিতায় নানা রকম অপকর্ম ঘটাতে পারেন বলে আশঙ্কা করছি। সেই অধ্যক্ষ কারাগার থেকেই উসকানি দিচ্ছেন। এই ব্যক্তির সঙ্গে জেলখানায় কারা দেখা করতে আসছেন তা সিসি টিভি ক্যামেরা ফুটেজ দেখে শনাক্ত করতে হবে। আবার বোরকা পরে কারা সেই ছাত্রীর গায়ে আগুন দেওয়ার চেষ্টা করেছিল, সে বিষয়টি খতিয়ে দেখতে হবে। আইন অনুযায়ী, পরীক্ষা চলাকালে একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছাদে কারও ওঠার কথা নয়। তাহলে কীভাবে ভুক্তভোগীকে অপরাধীরা ছাদে নিয়ে গিয়েছিল সে বিষয়টিও তদন্ত করে দেখতে হবে। এর মাধ্যমে এ ঘটনায় যারা জড়িত তাদের চিহ্নিত করা যাবে। আর এটি বের করা খুব একটা কঠিনও হবে না।’

এলিনা খান বলেন, সাধারণত ৪৯ শতাংশের ওপর কারও শরীর পুড়ে গেলে তার মৃত্যুঝুঁকি বেড়ে যায়। এ ক্ষেত্রে ভুক্তভোগী মেয়েটির দেহ ৮০ শতাংশই পুড়ে গেছে। এরপরও মেয়েটি তার ভাইকে জানিয়েছে, কারা তার গায়ে আগুন দিয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী আগুন কারা লাগিয়েছে সেই বক্তব্য মেয়েটির জবানবন্দি হিসেবে ব্যবহার করতে পারে। এ ক্ষেত্রে মেয়েটির ভাই এ মামলার বড় সাক্ষী। দুঃখজনক যে, এর আগে মেয়েটির জন্য নিরাপত্তা চাওয়া হলেও তা দেওয়া হয়নি।

সর্বশেষ খবর