মঙ্গলবার, ৯ এপ্রিল, ২০১৯ ০০:০০ টা

মোদির ‘সংকল্পপত্রে’ ৭৫ প্রতিশ্রুতি

নয়াদিল্লি ও কলকাতা প্রতিনিধি

মোদির ‘সংকল্পপত্রে’ ৭৫ প্রতিশ্রুতি

‘সংকল্পপত্র’ নামে ইশতেহার ঘোষণা করেছে বিজেপি। ভারতের ৭৫তম স্বাধীনতা দিবসে ৭৫টি প্রতিশ্রুতি পূরণ করবে পদ্মবাহিনী। গতকাল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও বিজেপি সভাপতি অমিত শাহসহ বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্বের উপস্থিতিতে প্রকাশ করা হয় ইশতেহার। রাম মন্দির, শবরীমালা ইস্যু, তিন তালাকের মতো ইস্যুর পাশাপাশি বিজেপির ইশতেহারে কৃষকের আয় দ্বিগুণ করার প্রতিশ্রুতির কথাও বলা রয়েছে। ইশতেহার প্রকাশ করতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেন, ‘৭৫টি প্রতিশ্রুতি নিয়েছি আমাদের ইশতেহারে। সময়মতো সব প্রতিশ্রুতি পূরণ করব।’ বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ বলেন, ‘২০১৪-১৯ সাল দেশের উন্নয়নের ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে। দুর্নীতি ও কালো টাকার বিরুদ্ধে মোদি সরকার গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিয়েছে।’ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং বলেন, ‘আমাদের সব প্রতিশ্রুতির কথা বলা রয়েছে ইশতেহারে। আমরা নতুন ভারত গড়ার দিকে এগোচ্ছি।’ ইশতেহার সব দিক মাথায় রেখে নিখুঁতভাবে করা হয়েছে বলেও উল্লেখ করেন রাজনাথ। কিষাণ সম্মান নিধির আওতায় সব কৃষককে বছরে ৬ হাজার টাকা করে দেওয়া হবে। ছোট ও মাঝারি ব্যবসায়ীদের ৬০ বছরের পর বিশেষ পেনশন দেওয়ার কথাও ঘোষণা করা হয়েছে। বিজেপির ইশতেহার প্রকাশ করতে গিয়ে রাজনাথ সিং বলেছেন, ‘দ্রুত রাম মন্দির নির্মাণ করা হবে।’ একইসঙ্গে শবরীমালা ইস্যুর কথাও বলা রয়েছে বিজেপির ইশতেহারে। ২০২২ সালের মধ্যে কৃষকের আয় দ্বিগুণ করার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে বিজেপির ইশতেহারে। পাশাপাশি ২০২২ সালের মধ্যে সবার জন্য বাড়ি তৈরি করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে। ২০২২ সালের মধ্যে জাতীয় সড়ক চওড়া করার প্রতিশ্রুতিও দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে, নাগরিকত্ব বিল, অনুচ্ছেদ ৩৭০, অনুচ্ছেদ ৩৫ ও তিন তালাক নিয়েও কথা বলা হয়েছে বিজেপির ইশতেহারে। এদিকে, সোমবার কোচবিহারের রাসমেলার মাঠে নির্বাচনী জনসভা থেকে মোদিকে কখনো মিথ্যাবাদী, ফ্যাসিবাদী, ধান্দাবাজ বলে কটাক্ষ করে তৃণমূল নেত্রী মমতা ব্যানার্জি বলেছেন, ‘এই নির্বাচনে মানুষ ওঁর মুখে লিউকোপ্লাস্ট লাগিয়ে দেবে যাতে মিথ্যা কথা না বলতে পারেন। দেশের স্বার্থে তাকে কেবল গদি থেকেই নয়, রাজনীতি থেকেও ছুড়ে ফেলে দিতে হবে।’ তৃণমূল সরকার আমলে রাজ্যে উন্নয়নের লম্বা তালিকা তুলে ধরে মমতা বলেন, ‘নির্বাচনের আগে বা পরে এখানে একটা বৈঠক হবে... আমি যদি মিথ্যা কথা বলি তবে জনগণের সামনে হামাগুড়ি দিয়ে ক্ষমা চাইব আর তুমি যদি মিথ্যা কথা বল তোমাকে হামাগুড়ি দিয়ে ক্ষমা চাইতে হবে। গত পাঁচ বছরে একবারও দেখা নেই, কেবল বিদেশ ঘুরে বেড়িয়েছে। আর জামা-কাপড়ে ফ্যাশন করেছ।’

প্রধানমন্ত্রীকে লক্ষ্য করে মমতার জবাব- ‘তোমাকে পাঁচ বছরের জন্য প্রধানমন্ত্রী করা হয়েছে আর তুমি নোট বাতিলের নামে কোটি কোটি রুপি কেলেঙ্কারি করেছ। ১২ হাজার কৃষক মরে গেছে। ওরা বলছে ২০২২ সালে কৃষকের আয় দ্বিগুণ করব, আরে আমরা ইতিমধ্যেই তিন গুণ করে দিয়েছি। বাংলার মানুষের পায়ে পড়ে তোর শিক্ষা নেওয়া উচিত। জানিস বাংলা কী করে?’ দাদাকে (মোদি) ইঞ্চিতে ইঞ্চিতে বদলা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়ে মমতা বলেন, ‘আমরা ভাঙি তবু মচকাই না। আমরা লড়াই করি আমরা মাথা নত করি না। লড়াই করে বেঁচেছিলাম আর লড়াই করেই বেঁচে থাকব। আর বেঁচে যদি থাকি মোদিবাবু তবে ইঞ্চিতে ইঞ্চিতে কড়ায় গ ায় হিসাব নিয়ে ছাড়ব। মনে রেখো, যত খুন করেছ তার ইঞ্চিতে ইঞ্চিতে বিচার হবে।’ মোদিকে রাবণের সঙ্গে তুলনা টেনে মমতা বলেন, ‘৫৬ ইঞ্চি আর দেখিও না। রাবণেরও তো এত বড় ছাতি ছিল। রাবণেরও পরাজয় হয়েছিল। এই দুর্যোধনের শাসনকে একেবারে স্তব্ধ করে দিন।’ মোদি-অমিত শাহ জুটিকে দুর্যোধন ও দুঃশাসন বলে আখ্যায়িত করে মমতা বলেন, ‘এ দুজন মিলে দেশটাকে খেয়ে নিয়েছে। এখন বলছে ভোট দাও, বাংলায় এনআরসি করবে। হাতি করবে... এনআরসি করতে এসো... মজা দেখাব। ভোট কেন, বাংলার মানুষ একটা কাঁচকলাও তোমায় দেবে না।’

সর্বশেষ খবর