হবিগঞ্জের বাহুবল উপজেলা প্রকৌশলী গোলাম মহিউদ্দিন চৌধুরীকে হাতকড়া পরানোর ঘটনায় একই উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জসীম উদ্দিনের ক্ষমতার ব্যবহার নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে হাই কোর্ট। উপজেলা প্রকৌশলীকে হাতকড়া পরানোর ক্ষমতা ইউএনওর রয়েছে কিনা, তা জানতে চেয়েছে আদালত। এ সংক্রান্ত এক মামলায় ইউএনও ব্যাখ্যা দিতে গতকাল হাজির হলে বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কেএম কামরুল কাদেরের সমন্বয়ে গঠিত হাই কোর্ট বেঞ্চ এ প্রশ্ন তোলে। শুনানি শেষে আদালত আগামী ২৪ এপ্রিল ইউএনওকে আবারও হাজির হতে নির্দেশ দিয়েছে। আদালতে ইউএনওর পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার মাহবুব শফিক। অন্যদিকে প্রকৌশলী গোলাম মহিউদ্দিন চৌধুরীর পক্ষে ছিলেন আইনজীবী সাইফুদ্দিন আহমেদ। শুনানিতে ব্যারিস্টার মাহবুব শফিক আদালতকে বলেন, ‘ভুল বোঝাবুঝির পরিপ্রেক্ষিতে ওই ঘটনা ঘটেছিল।’ এ সময় আদালত বলে, ‘সরকারের এক বিভাগের কর্মচারীদের সঙ্গে আরেক বিভাগের কর্মচারীদের মধ্যে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক থাকতে হবে। যদি না থাকে তাহলে সরকারই ক্ষতিগ্রস্ত হবে। ভুল বোঝাবুঝি ঠিক আছে, কিন্তু ইউএনওর ক্ষমতা আছে কিনা প্রকৌশলীকে হাতকড়া পরানোর?’ এ পর্যায়ে প্রকৌশলীর আইনজীবী সাইফুদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘উনি (ইউএনও) পিয়ন হওয়ারও যোগ্য নন। তিনি কি জমিদার? তাকে শাস্তি পেতে হবে।’ আদালত তখন বলে, ‘তিনি (ইউএনও) তো হাতকড়া পরাতে পারেন না’।

‘বাহুবল উপজেলা প্রকৌশলীকে হাতকড়া পরানো, ইউএনওর বিরুদ্ধে অভিযোগ জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে’ শিরোনামে প্রতিবেদন একটি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত হয়। ওই প্রতিবেদন আমলে নিয়ে গত ১৩ মার্চ আইন অমান্য করে প্রকৌশলী গোলাম মহিউদ্দিন চৌধুরীকে হাতকড়া পরানোর অভিযোগে ইউএনও জসীম উদ্দিনকে তলব করে হাই কোর্ট। এ ছাড়াও ওই প্রকৌশলীকে হাতকড়া পরানো ও গ্রেফতার কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়েও রুল জারি করে আদালত। প্রতিবেদনে বলা হয়, সরকারি কর্মচারী আইন-২০১৮-এর ৪১(১) ধারা অনুযায়ী ফৌজদারি মামলায় আদালতে অভিযুক্ত হওয়ার আগে কোনো সরকারি কর্মকর্তাকে নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া গ্রেফতারের বিধান নেই বলে জানিয়েছেন নির্বাহী প্রকৌশলী শেখ মো. আবু জাকির সেকান্দার। অথচ আইন অমান্য করে ৬ মার্চ বাহুবল উপজেলা প্রকৌশলী গোলাম মহিউদ্দিন চৌধুরীকে হাতকড়া পরিয়েছিলেন ইউএনও জসীম উদ্দিন। ইউএনওর বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন স্থানীয় সরকার বিভাগের প্রকৌশলীরা।