বৃহস্পতিবার, ১১ এপ্রিল, ২০১৯ ০০:০০ টা

কৃষ্ণগহ্বরের প্রথম ছবিতে তোলপাড়

প্রতিদিন ডেস্ক

কৃষ্ণগহ্বরের প্রথম ছবিতে তোলপাড়

মহাকাশে প্রথমবারের মতো কৃষ্ণগহ্বরের ছবি তুলতে সমর্থ হয়েছেন নভোচারীরা। ফলে ইতিহাসে প্রথমবারের মতো এই রহস্যময় ‘দানব’র ছবি দেখল মানব জাতি। এটি আকারে চার হাজার কোটি কিলোমিটার, পৃথিবীর আয়তনের তুলনায় প্রায় ৩০ লাখ গুণ। বিজ্ঞানীরা একে ‘দানব’ বা ‘রাক্ষস’ বলে অভিহিত করছেন। এবার দেখা গেল, তার সর্বনাশা খিদে মেটাতে মহাকাশে কীভাবে বিশাল বিশাল নক্ষত্রের সদস্যদের গিলে খাচ্ছে। যেমন করে রাক্ষস কারও হাড়-মাংস-অস্থি-মজ্জা গিলে খায়। আশপাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কোনো খাবারই ফেলে রাখছে না সেই রাক্ষস। বহু চেষ্টাচরিত্র করে দুই বছর ধরে তার ছবি তোলা হয়েছে। যে ছবি প্রকাশ করা হলো গতকাল। দুটি ব্লাক হোলের ছবি তোলা হলেও এদিন প্রকাশ করা হয়েছে প্রায় সাড়ে পাঁচ কোটি আলোকবর্ষ দূরে ‘এম-৮৭’ গ্যালাক্সিও কেন্দ্রে থাকা ব্লাক হোলটির। এটির অবস্থান এই ব্রহ্মাে  আমাদের ঠিকানা মিল্কি ওয়ে গ্যালাক্সির ঠিক মাঝখানে। আমাদের থেকে ২৬ হাজার আলোকবর্ষ দূরে। রাক্ষসটার নাম- ‘স্যাজিটেরিয়াস এ*’। যাকে দেখার আগ্রহ আমাদের প্রায় এক শতাব্দী ধরেই! এমন ভয়ঙ্কর  দৈত্যাকার রাক্ষসের ছবি তোলার মতো অসাধ্যসাধনটা করেছে ইভেন্ট হরাইজন টেলিস্কোপ (ইএইচটি)। যা বানানো হয় পৃথিবীর ৮টি মহাদেশে বসানো অত্যন্ত শক্তিশালী ৮টি রেডিও টেলিস্কোপের নেটওয়ার্ক দিয়ে। কাজ শুরু করেছিল ২০১৭ সালে। মহাকাশের এক অনন্ত বিস্ময় এই ব্লাকহোল। ব্লাকহোলকে কৃষ্ণবিবর, কৃষ্ণগহ্বর ইত্যাদি বলা হয়। জেনারেল থিওরি অব রিলেটিভিটি অনুসারে, কৃষ্ণগহ্বর মহাকাশের এমন একটি বিশেষ স্থান, যেখান থেকে কোনো কিছু, এমনকি আলো পর্যন্ত বের হয়ে আসতে পারে না। এটি এমন একটি জিনিস, যেখানে খুবই অল্প জায়গায় অনেক অনেক ভর ঘনীভূত হয়ে রয়েছে। এটা এতই বেশি যে কোনো কিছুই এর কাছ থেকে রক্ষা পায় না, এমনকি সর্বোচ্চ গতিসম্পন্ন আলোও। বিজ্ঞানীরা জানান, পৃথিবীর আটটি স্থান থেকে খুবই উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন টেলিস্কোপ দিয়ে এর ছবি তোলা হয়। পৃথিবী থেকে এর দূরত্ব ৫০০ মিলিয়ন ট্রিলিয়ন কিলোমিটার। গতকাল অ্যাস্ট্রোফিজিক্যাল জার্নাল লেটার নামে এক জার্নালে বিস্তারিত প্রকাশ করা হয়।

সর্বশেষ খবর