শনিবার, ১৩ এপ্রিল, ২০১৯ ০০:০০ টা
ঢাকায় কর্মব্যস্ত দিন

যদি বন্ধু হই, আসুন ব্যবসা বাড়াই

------ ভুটানের প্রধানমন্ত্রী

প্রতিদিন ডেস্ক

যদি বন্ধু হই, আসুন  ব্যবসা বাড়াই

ভুটানের প্রধানমন্ত্রী ডা. লোটে শেরিং গতকাল ঢাকায় পৌঁছলে স্বাগত জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা -বাসস

ভুটানের প্রধানমন্ত্রী ডা. লোটে শেরিং বলেছেন, যদি বন্ধু হই আসুন ব্যবসা বাড়াই। বাণিজ্য সম্পর্ক জোরদারের মাধ্যমে বাংলাদেশ-ভুটান সম্পর্ককে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাওয়া সম্ভব। আমার দেশ স্থলবেষ্টিত, তা সত্যি। কিন্তু বন্ধুরা, আমাদের হৃদয় বন্ধ নয়। ব্যবসার জন্য আমাদের দুয়ার উন্মুক্ত। বাংলাদেশ যদি মনে করে যে ভুটানিরা তাদের কাছের মানুষ, আমার মনে হয়, আপনাদের এগিয়ে আসা উচিত। খবর বিডিনিউজের। নিজের দেশে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নেওয়ার পর প্রথমবার বাংলাদেশ সফরে এসে গতকাল বিকালে ঢাকার একটি হোটেলে তিনি মুখোমুখি হয়েছিলেন বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের। ৩০ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল নিয়ে সকালে ঢাকা পৌঁছান ভুটানের প্রধানমন্ত্রী। ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের এই আয়োজনে অনুষ্ঠানে ভুটানের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন মূল বক্তা। অন্যদের মধ্যে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, এফবিসিসিআই সভাপতি মো. শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন, সহসভাপতি মো. মুনতাকিম আশরাফ, ভুটান চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের প্রেসিডেন্ট ফুব জাম অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন। আগামী দিনগুলোতে বাণিজ্য সম্পর্ক আর এগিয়ে নিতে এ অনুষ্ঠানে দুই দেশের শিল্প ও বণিক সমিতির মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়। লোটে শেরিং মনে করেন, সমঝোতার পর যদি কোনো উদ্যোগ না থাকে, আন্তরিকতা যদি না থাকে, তাহলে ওই সমঝোতা স্মারকও কোনো অর্থ বহন করবে না। তিনি বলেন, ভুটান সরকারের তরফ থেকে বলব, এই সমঝোতার ভিত্তিতে পরবর্তী পদক্ষেপ যাতে নেওয়া হয়, আমাদের দিক থেকে আমরা তা নিশ্চিত করব। এর আগে ঢাকার ইন্টারকন্টিনেন্টালে ভুটানের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করে এসে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন সাংবাদিকদের বলেন, নিয়ন্ত্রিতভাবে হলেও যাতে ওই চুক্তিতে ভুটান আসে, সেই অনুরোধ তিনি রেখেছেন। আজ বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে তার কার্যালয়ে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে বসবেন ভুটানের প্রধানমন্ত্রী লোটে শেরিং। আগামীকাল পয়লা বৈশাখের অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার কথা রয়েছে। ভোরে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে সুরের ধারার আয়োজনে পয়লা বৈশাখের অনুষ্ঠানে তিনি উপস্থিত থাকবেন। পরে যাবেন নিজের পুরনো শিক্ষায়তন ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজে। সেখানে বর্তমান শিক্ষার্থীদের মুখোমুখি হবেন তিনি। বিমসটেকের সদস্য দেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ঢাকায় এ জোটের সচিবালয়েও যাবেন লোটে শেরিং। চার দিনের সফর শেষ করে ১৫ এপ্রিল তার ঢাকা ত্যাগ করার কথা রয়েছে। ভুটানের প্রধানমন্ত্রী ডা. লোটে শেরিং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আমন্ত্রণে গতকাল সকালে চার দিনের সরকারি সফরে বাংলাদেশে এলে তাকে লাল গালিচা সংবর্ধনা প্রদান করা হয়। রয়্যাল ভুটান এয়ারলাইনসের একটি বিশেষ বিমান (ড্রুক এয়ার) ভুটানের প্রধানমন্ত্রী, তার স্ত্রী এবং সফরসঙ্গীদের নিয়ে সকাল ৮টা ৮ মিনিটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভুটানের প্রধানমন্ত্রীকে বিমানবন্দরের ভিভিআইপি লাউঞ্জে স্বাগত জানান। এ সময় ছোট্ট দুটি শিশু ভুটানের প্রধানমন্ত্রীকে ফুলের তোড়া উপহার দেন। পরে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী এবং বিমানবাহিনীর সদস্যদের নিয়ে গঠিত একটি সুসজ্জিত চৌকস দল ভুটানের প্রধানমন্ত্রীকে গার্ড অব অনার প্রদান করে। এ সময় দুই দেশের জাতীয় সংগীত বাজানো হয়। পরে প্রধানমন্ত্রী তার মন্ত্রিপরিষদের সদস্যবৃন্দ এবং উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের ভুটানের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন। এ সময় ভুটানের প্রধানমন্ত্রী তার সফরসঙ্গীদের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পরিচয় করান। মন্ত্রিপরিষদ সদস্যবৃন্দ, মন্ত্রিপরিষদ সচিব, সংশ্লিষ্ট সচিববৃন্দ, তিন বাহিনীর প্রধানগণ, কূটনৈতিক কোরের ডিন এবং পদস্থ সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তাবৃন্দ এ সময় উপস্থিত ছিলেন। বিমানবন্দরে উষ্ণ অভ্যর্থনা শেষে একটি সুশোভিত মোটর শোভাযাত্রা সহযোগে ভুটানের প্রধানমন্ত্রীকে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে নিয়ে যাওয়া হয়। সফরকালে তিনি সেখানেই অবস্থান করবেন। সকালে ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু জাদুঘরে গিয়ে জাতির জনক শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে তিনি শ্রদ্ধা জানিয়ে বেলা সোয়া ১১টার দিকে সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে পৌঁছান ভুটানের প্রধানমন্ত্রী। বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের পর স্মৃতিসৌধ প্রাঙ্গণে একটি ‘বকুল’ গাছের চারা রোপণ করেন তিনি। মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম, ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান, নবম পদাতিক ডিভিশনের জিওসি মেজর জেনারেল আকবর হোসাইন, ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার শাহ মিজান শাফিউর রহমানসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

সর্বশেষ খবর