বুধবার, ১৭ এপ্রিল, ২০১৯ ০০:০০ টা

দ্বিতীয় দফা ভোট কাল তুঙ্গে রাজনৈতিক উত্তাপ

বিতর্ক ও শঙ্কা দেখামাত্র ছবিসহ ভোটার স্লিপের সিদ্ধান্ত বাতিল

নয়াদিল্লি ও কলকাতা প্রতিনিধি

দ্বিতীয় দফা ভোট কাল তুঙ্গে রাজনৈতিক উত্তাপ

রাজনৈতিক মহলে বিতর্ক ও শঙ্কা দেখায় ভোট দেওয়ার ক্ষেত্রে একটি নিয়ম দ্রুত সিদ্ধান্ত নিয়ে পরিবর্তন করেছে ভারতের নির্বাচন কমিশন। নতুন সিদ্ধান্তে কমিশনের দেওয়া ছবিসহ ভোটার স্লিপ দেখিয়ে আর ভোট দেওয়া যাবে না। লোকসভা নির্বাচনে আগামীকাল দ্বিতীয় দফায় ভোটগ্রহণ হবে ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে। এ উপলক্ষে শেষ মুহূর্তের নির্বাচনী প্রস্তুতি খতিয়ে দেখেছে ভারতের নির্বাচন কমিশন। বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী ত্রিপুরা পূর্ব কেন্দ্রের নির্বাচনী প্রস্তুতিও খতিয়ে দেখা হয়েছে। দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি এবং রায়গঞ্জ লোকসভা কেন্দ্রেও ভোট এদিন।

এর আগে প্রার্থীদের হয়ে প্রচার করতে গিয়ে বিতর্ক তৈরি করেছেন গুজরাটের বিজেপি বিধায়ক রমেশ কাতরা। দাহোদ কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী যশোবন্ত শাহর হয়ে প্রচার করতে গিয়ে রমেশ বলেন, ‘আপনারা ইভিএমে বিজেপি প্রার্থীর ছবি দেখবেন। আর বোতাম টিপবেন। ভুল হওয়ার কোনো জায়গা নেই। মনে রাখবেন মোদি সাহেব বুথে সিসিটিভি বসিয়েছেন। তা থেকেই দেখা যাবে কে কংগ্রেসকে ভোট দিচ্ছে আর কে বিজেপিকে ভোট দিচ্ছে। আপনাদের বুথ থেকে কম ভোট পড়লেই মোদিজি বুঝতে পেরে যাবেন কার ভোট কোথায় গিয়েছে। আর কম ভোট পড়লে চাকরি পাবেন না। উত্তরপ্রদেশে সুলতানপুরে নির্বাচনী জনসভায় বক্তব্য পেশ করতে গিয়ে বিতর্কে জড়িয়ে ছিলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী মানেকা গান্ধী। মুসলমান সম্প্রদায়ের ভোটারদের উদ্দেশ করে তিনি বলেন, তাকে ভোট না দিলে তিনি হয়তো তাদের অনুরোধ রাখতে পারবেন না। তার কথায়, ‘আমি ইতিমধ্যেই নির্বাচনে জিতে গিয়েছি, এখন আপনারা কী করবেন সেটা আপনাদের ব্যাপার।’ মন্ত্রীর মিনিট তিনেকের ভাষণ সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। তিনি বলেছেন, ‘আমি জিততে চলেছি এটা গুরুত্বপূর্ণ। মানুষের ভালোবাসা আর আশীর্বাদেই আমি জিতছি। কিন্তু যদি আমায় মুসলিমদের সমর্থন ছাড়া জিততে হয় তাহলে আমার খারাপ লাগবে। তখন মুসলমান ধর্মের কোনো মানুষ আমার কাছে এলে আমার মনে হবে কাজ করে কী হবে? আমরা তো মহাত্মা গান্ধীর সন্তান নই। আপনারা ভোট না দিলে আমার জেতা আটকাবে না। আপনাদের ভোট না পেলেও আমরা জিতব।’

এমন মন্তব্যে রাজনৈতিক মহলে চাঞ্চল্য ছড়ায়। রাষ্ট্রীয় জনতা দলের তরফে টুইট করে বলা হয়েছে, এ ধরনের হুমকিকে সহজভাবে নেওয়ার কোনো যুক্তি নেই। বিহারের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী লালু প্রসাদ যাদবের টুইটার হ্যান্ডেল থেকে লেখা হয়েছে, অসহায় নাগরিকদের এভাবে বিজেপিকে ভোট দিতে প্রভাবিত করা হচ্ছে।

ভারতীয় গণমাধ্যমের খবর, ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে কয়েকটি লোকসভা কেন্দ্রের ভোট প্রস্তুতি খতিয়ে দেখেছে কমিশন। ভারতের অন্যান্য অংশের মতো দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি এবং রায়গঞ্জ লোকসভা কেন্দ্রকে বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে কমিশন। তাই এ তিনটি কেন্দ্র নির্বাচনের জন্য কতটা তৈরি তা খতিয়ে দেখেছে কমিশন। মুখ্য নির্বাচন কমিশনার সুনীল আরোরা থেকে শুরু করে আরও কয়েকজন বৈঠকে  উপস্থিত ছিলেন। ১৮ তারিখ দ্বিতীয় দফার ভোট মেটার চার দিন পর ২৩ তারিখ তৃতীয় দফার ভোট। সেদিন এ রাজ্যের যেসব কেন্দ্রে ভোট হবে সেখানকার প্রস্তুতিও খতিয়ে দেখেছে কমিশন। অবশ্য নির্বাচনের প্রস্তুতি চলছে দীর্ঘদিন ধরেই। নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারা প্রতিটি রাজ্য ঘুরে দেখে ভোটের দিন ঠিক করেছেন।  পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি কেমন আছে তা দেখে নিয়ে নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েনের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হয়েছে। এরপর ভোটপর্ব শুরু হয়ে গেলে দিল্লি থেকে ভিডিও কনফারেন্স করে প্রস্তুতি খতিয়ে দেখা হয়। এদিন সে মতেই ভোটগ্রহণ কেন্দ্রগুলোতে কী ধরনের সুবিধা আছে তা জেনে নেন কমিশনের কর্মকর্তারা। পুলিশ আধিকারিকরাও কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন নিয়ে তথ্য দিয়েছেন বলে  কমিশন সূত্রে জানা গেছে। কোন কেন্দ্রের কোথায় কত পরিমাণ বাহিনী মোতায়েন করা হচ্ছে সেটিও জানিয়ে দেওয়া হয়।

সর্বশেষ খবর