শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০১৯ ০০:০০ টা

নিরাপত্তা সরঞ্জামের আন্তর্জাতিক প্রদর্শনী শুরু বসুন্ধরায়

নিজস্ব প্রতিবেদক

নিরাপত্তা সরঞ্জামের আন্তর্জাতিক প্রদর্শনী শুরু বসুন্ধরায়

রাজধানীর ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় (আইসিসিবি) শুরু হয়েছে পেশাগত স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা বিষয়ক সরঞ্জামের আন্তর্জাতিক প্রদর্শনী। এতে ভবন-যানবাহন-কল-কারখানা, নির্মাণাধীন প্রকল্প ও বিভিন্ন স্থাপনার নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং অগ্নিকা সহ নানা দুর্ঘটনা মোকাবিলার জন্য অত্যাধুনিক সরঞ্জাম ও সেবা প্রদর্শন করা হচ্ছে। গতকাল এ প্রদর্শনীর উদ্বোধন হয়েছে। এতে অংশ নিয়েছে ৩০টি দেশের ৬০টির অধিক প্রতিষ্ঠান। তিন দিনব্যাপী আয়োজিত প্রদর্শনী চলবে ২০ এপ্রিল পর্যন্ত। প্রদর্শনীতে পেশাগত স্বাস্থ্য এবং নিরাপত্তা সংশ্লিষ্ট আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান, পরামর্শদাতা, বিশেষজ্ঞ ও নীতিনির্ধারকরা অংশ নিচ্ছেন। প্রদর্শনীতে নিরাপত্তা পণ্যের পাশাপাশি রয়েছে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে সেমিনার। ওএসএইচ বাংলাদেশ ও আইএফএসইসি বাংলাদেশ নামের এই প্রদর্শনী দুটির আয়োজন করেছে ইউবিএম ইন্ডিয়া।

প্রধান অতিথি হিসেবে প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন কল-কারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদফতরের মহাপরিচালক শিব নাথ রায়। এ সময় শিল্প, নিরাপত্তা ও নির্মাণ খাতের বিভিন্ন সংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন। বক্তৃতায় শিব নাথ রায় বলেন, শ্রমিকদের স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা সবার আগে। সারা বিশ্বে এটি এখন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু। সরকার কারখানা শ্রমিকদের নিরাপত্তায় কাজ করছে। এ ধরনের প্রদর্শনী নিরাপত্তার গুরুত্ব তুলে ধরার পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট প্রযুক্তি ও পণ্যগুলো সম্পর্কে ধারণা দেবে। অনুষ্ঠানে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) প্রধান প্রযুক্তি উপদেষ্টা জর্জ ফলার বলেন, বাংলাদেশের গার্মেন্টস সেক্টরে শ্রম পরিবেশের অনেক উন্নতি হয়েছে। তবে এখনো অনেক দূর যেতে হবে। কারখানায় অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র ও শ্রমিকদের প্রশিক্ষণ দিতে হবে। বিকেএমইএর সহসভাপতি মনসুর আহমেদ বলেন, আমরা গার্মেন্ট ফ্যাক্টরিগুলোর কমপ্লায়েন্স নিশ্চিত করেছি। সাড়ে তিন লাখ শ্রমিককে আইএলওর মাধ্যমে প্রশিক্ষণ দিয়েছি। এ কারণে এখনো তৈরি পোশাক রপ্তানিতে বিশ্বে আমরা দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছি। জাতীয় রপ্তানির ৪১ ভাগের বেশি আসছে এই খাত থেকে। বিশ্বের ২০টি গ্রিন কারখানার মধ্যে আটটিই বাংলাদেশে- এটা গর্বের বিষয়। এর মধ্যেও কিছু কারখানা মুখ থুবড়ে পড়ছে। মনে রাখতে হবে, কারখানার নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত না করলে কম মূল্যে পোশাক দিলেও বিদেশিরা কিনবে না। এ ছাড়া টেকশই উন্নয়নের লক্ষ্য পূরণে শুধু পোশাক কারখানা নয়, সব ক্ষেত্রে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব কনস্ট্রাকশন ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি প্রকৌশলী খোরশেদ আলম বলেন, নির্মাণ খাতে বছরে ১৫০-এরও বেশি প্রাণ ঝরে যাচ্ছে নানা দুর্ঘটনায়। এগুলোকে শুধুই দুর্ঘটনা বলার সুযোগ নেই। সব দুর্ঘটনার পেছনে কারণ থাকে। আমরা কর্মক্ষেত্রে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা নিশ্চিত করছি না। মিলিয়ন মানুষের আরামের জন্য একটি জীবন নেওয়ার অধিকার আমাদের নেই। উন্নয়ন ও নিরাপত্তা পাশাপাশি থাকতে হবে। এডিবি, জাইকার মতো বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠানের অর্থায়নের অন্যতম শর্ত নিরাপত্তা। সেটা আমরা পূরণ করতে পারছি না। শুধু ব্যবসা নয়, শ্রমিকের জীবনকে গুরুত্ব দিতে হবে। অনুষ্ঠানে ইলেকট্রনিক্স সেফটি অ্যান্ড সিকিউরিটি অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সভাপতি মোতাহার হোসেন খান, ওশি ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক এ আর চৌধুরী রিপন, ইউবিএম ইন্ডিয়ার গ্রুপ ডিরেক্টর পঙ্কজ জইন বক্তব্য রাখেন।

সর্বশেষ খবর