শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০১৯ ০০:০০ টা
তৃণমূলে স্বাস্থ্যসেবা

হাজিরা দিয়েই চিকিৎসকরা লাপাত্তা

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতাল

মোশাররফ হোসেন বেলাল, ব্রাহ্মণবাড়িয়া

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতাল, ২৪ মার্চ সকাল পৌনে ৮টা। সব চিকিৎসক, অফিস স্টাফ এবং নার্সরা সকাল ৮টায় এসে ফিঙ্গারপ্রিন্ট নিশ্চিত করার কথা। তবে এ ফিঙ্গারপ্রিন্ট সকাল ১০টা পর্যন্ত করতে দেখা যায়। যিনি বিষয়টি তদারকি করার দায়িত্বপ্রাপ্ত (হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. শওকত হোসেন) খোদ তিনিই আসেন পৌনে ৯টার দিকে। সকাল ৭টা থেকেই পুরুষ ও মহিলা কাউন্টারে রোগীদের উপচেপড়া ভিড়। ৮টায় পুরুষদের কাউন্টার খোলা হলেও মহিলাদের কাউন্ডারে টিকিট দেওয়া শুরু হয় সকাল ৯টায়। এরপর শুরু হয় রোগীদের টিকিট নিয়ে চিকিৎসকদের কক্ষের বাইরে অপেক্ষার পালা। ৯টা পর্যন্ত প্রায় সব কর্তব্যরত চিকিৎসকের কক্ষ তালাবদ্ধ থাকে। অন্যদিকে একজন সিনিয়র নার্স নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জানান, নার্সরা সকাল ৮টার মধ্যে এলেও চিকিৎসকরা আসেন মন মতো। ফিঙ্গারপ্রিন্ট করেই তারা এদিক-ওদিন চলে যান। দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত রোগী দেখার নিয়ম থাকলেও বেশিরভাগ চিকিৎসক তা মানেননি বলে চোখে পড়ে। সকাল ১০টার পর  কোনো কোনো চিকিৎসককে ওষুধ কোম্পানির বিক্রয় প্রতিনিধিদের মোটরবাইকে করে হাসপাতালে আসতে দেখা যায়। তবে নির্ধারিত সময় আড়াইটার আগেই অনেককে চলে যেতে দেখা যায়। দুপুর ১২টার দিকে দেখা যায়, হাসপাতালের আউটডোরে পুুরুষ ও মহিলাদের দীর্ঘ লাইন। চিকিৎসকের কক্ষে রোগীদের সিরিয়াল দিচ্ছেন বিভিন্ন ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিরা। চিকিৎসক রোগীর ব্যবস্থাপত্র লিখার সময় ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিরা তাদের বিভিন্ন প্রোডাক্টের পরিচিতি দিচ্ছেন। ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালে চিকিৎসকদের নিয়ম না মানার এ চিত্র প্রায় প্রতিদিনের। তবে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. শওকত হোসেন বলেন, চিকিৎসকরা ফিঙ্গারপ্রিন্ট দিয়ে রাউন্ডে চলে যান। কেউ কেউ নাশতার জন্য বাইরে যান বলেও তিনি জানান। অভিযোগ রয়েছে, চিকিৎসকরা ফিঙ্গারপ্রিন্ট দিয়ে তত্ত্বাবধায়কের কক্ষে আড্ডায় মশগুল হয়ে পড়েন। অনেকেই প্রাইভেট প্র্যাকটিস করার জন্য বিভিন্ন ক্লিনিকে চলে যান। অধিকাংশ চিকিৎসক জেলার বিভিন্ন ক্লিনিক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। অনেক চিকিৎসক নিজ সংশ্লিষ্ট প্রাইভেট ক্লিনিকে রোগীকে পাঠিয়ে দেন। এ ছাড়া হাসপাতালে লোকবল ঘাটতির কথাও জানান সংশ্লিষ্টরা।

সর্বশেষ খবর