শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০১৯ ০০:০০ টা
প্রকৃতি

পৃথিবীর সবচেয়ে দ্রুতগতির প্রাণী পেরেগ্রিন ফেলকন

শ্রীমঙ্গল প্রতিনিধি

পৃথিবীর সবচেয়ে দ্রুতগতির প্রাণী পেরেগ্রিন ফেলকন

পেরেগ্রিন ফেলকন (Peregrine Falcon) একটি পাখির নাম। এটিই এখন পৃথিবীর সবচেয়ে দ্রুতগতির প্রাণী। এরা জল, স্থল আর বায়ুর মধ্যে সবচেয়ে দ্রুতগামী। এদের যেমন রয়েছে অবিশ্বাস্য গতি, তেমনি শিকার ধরার ব্যতিক্রমী কৌশল। শিকারকে ধরার জন্য এরা মাধ্যাকর্ষণ শক্তিকে ব্যবহার করে। অর্থাৎ তখন তার ডানা দুটো শরীরের সঙ্গে লেপ্টে রেখে ঘণ্টায় ৩২০ কিলোমিটার বেগে উড়তে থাকে। গতির দিক দিয়ে এরা চিতাবাঘকেও হার মানিয়েছে। বাংলায় এদের ডাকা হয় পেরেগ্রিন শাহিন নামে। এদের বৈজ্ঞানিক নাম Falco Peregrinus. শীতের সময় পরিযায়ী হয়ে এরা আমাদের দেশে আসে। তখন সারা দেশেই তাদের দেখা মেলে। উত্তর ও দক্ষিণ আমেরিকা, ইউরেশিয়া, অস্ট্রেলিয়া, চীন, ইন্দোনেশিয়া, ভারতসহ এশিয়ার দেশগুলোতে এদের বিস্তৃতি রয়েছে। এ পখিটি বিশ্বে বিপদমুক্ত বলে বিবেচিত। তবে আমাদের দেশে বন্যপ্রাণী আইনে এরা সংরক্ষিত। বন্যপ্রাণী গবেষক সীমান্ত দিপু গত জানুয়ারি মাসে রাজশাহীর সোনারচর থেকে এই পাখিটির ছবি ক্যামেরাবন্দী করেছেন। বন্যপ্রাণী বিশারদরা জানান, পৃথিবীতে পেরেগ্রিন  ফেলকনের মোট ১৯টি উপপ্রজাতি রয়েছে। এদের ওজন ৩০০ গ্রাম থেকে ১ কেজি। শরীরের দৈর্ঘ্য ৩৪ সে.মি. থেকে ৫৮ সে.মি.। প্রাপ্তবয়স্ক পাখির পিঠের দিকটা কালচে ধূসর। দেহের নিচে লালচে। মাথা কালো। পেট ও পায়ে কালো ডোরা রয়েছে। চোখ গাঢ় বাদামি। পায়ের পাতা হলুদ। এদের বাঁকানো ধারালো দাঁত ও তীক্ষè নখ দিয়ে এরা শিকারকে মুহূর্তেই ছিন্নভিন্ন করে ফেলে। এদের শিকারের তালিকায় রয়েছে কবুতর, জলজ পাখি, এমনকি স্তন্যপায়ী বাদুড়ও। ভোর ও গোধূলি বেলা এরা বেশি কর্মচঞ্চল থাকে। মার্চ-মে এদের প্রজননকাল। এ সময় এরা জোড়া বেঁধে আকাশে ওড়ে। খাড়া পর্বতের গায়ে অথবা উঁচু গাছের শক্ত ডালে এরা মাচার মতো বাসা বাঁধে। ডিম দেয় ৩ থেকে ৪টি। স্ত্রীপাখি একাই ডিমে তা দেয়। ডিম ফুটে ছানা বের হতে সময় লাগে ২৫ থেকে ২৭ দিন ।

বন্যপ্রাণী গবেষক সীমান্ত দিপু বলেন, ‘চিতাবাঘকে আগে আমরা পৃথিবীর সবচেয়ে দ্রুতগতির প্রাণী বলে জানতাম। কিন্তু এখন পৃথিবীর সবচেয়ে দ্রুতগতির প্রাণী হচ্ছে  পেরেগ্রিন ফেলকন। বাংলায় যাকে পেরেগ্রিন শাহিন বলে। গতির দিক দিয়ে পেরেগ্রিন ফেলকন চিতাবাঘকেও ক্রস করেছে।

 

সর্বশেষ খবর