বর্ণাঢ্য আয়োজনের মধ্য দিয়ে নববর্ষ উদযাপন করল র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। কুঁড়েঘর সঙ্গে বাবুই পাখির বাসা, চৌবাচ্চায় হাঁসের বাচ্চা, নাগরদোলা, সাপখেলা, বানর নাচ, বায়োস্কোপ, জাদু, পুতুল নাচ, রাজধানীর কুর্মিটোলায় র্যাব সদর দফতর এক দিনের জন্য যেন হয়ে উঠেছিল আবহমান বাংলার এক প্রতিচ্ছবি। বিভিন্ন ব্যাটালিয়নের স্বকীয় আয়োজনে উপস্থিত দর্শনার্থীরা কিছু সময়ের জন্য হারিয়ে গিয়েছিলেন তাদের শৈশবে। হারিয়ে যেতে বসা ঐতিহ্যের সম্মিলনে দর্শনার্থীরা খুঁজে ফিরছিলেন তাদের হারানো সুখস্মৃতি। আমন্ত্রিত অতিথিদের মধ্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানের চোখে-মুখে ছিল তৃপ্তির ছাপ। আরও উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর সামরিক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারেক আহমেদ সিদ্দিকী, এয়ার চিফ মার্শাল মাসিহুজ্জামান সেরনিয়াবাতসহ প্রশাসন ও পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। গতকাল দুপুর ১২টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত এই আয়োজনে ছিল জমজমাট ও মনোমুগ্ধকর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। র্যাবের মহাপরিচালক (ডিজি) বেনজীর আহমেদ বলেন, পয়লা বৈশাখে মানুষকে নিরাপত্তা দিতে হয়। প্রায় এক মাস আগে থেকেই সারা দেশে র্যাবের সব ব্যাটালিয়নকে নিরাপত্তা রক্ষায় কাজ করতে হয়। এ কারণে পয়লা বৈশাখে আমাদের বৈশাখ পালন করা হয়ে ওঠে না। তাই র্যাবের পক্ষ থেকে কয়েক দিন পরে হলেও বৈশাখী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এবারেও এর ব্যতিক্রম নয়। আয়োজন ঘুরে দেখা যায়, র্যাবের প্রত্যেকটি ব্যাটালিয়ন আলাদাভাবে স্টল সাজিয়েছে। আয়োজনের স্বকীয়তার ছাপ ছিল স্পষ্ট। র্যাব-১, র্যাব-৩ আর র্যাব-৪ এর পক্ষ থেকে অভ্যর্থনা, অতিথি আপ্যায়ন, মিষ্টি দেওয়া আর স্পেশাল পান বিতরণ করা হয়। র্যাব-১১ এর পক্ষ থেকে বিশাল বড় স্টলে ছিল মুড়ি, খই, মোয়া, জিলাপি, বাতাসা, তিলের খাজা, নাড়ু আর কদমা। র্যাব-১০ এর পক্ষ থেকে দুপুরে তৃষ্ণা মেটানোর জন্য ছিল আখের রস। এ ছাড়া আরেকটি স্টলে ছিল লাচ্ছি, ফালুদা, গুড় আর রুটি। র্যাব-২ এর পক্ষ থেকে গ্রামীণ আবহের একটি স্টল সাজানো হয়েছে। র্যাব-১২ এর স্টল সাজানো হয়েছে সিরাজগঞ্জের তাঁত শিল্প দিয়ে। সেখানে তাঁতের পোশাকসহ নানা প্রকার উপাদান স্থান পেয়েছে। বৈশাখের আয়োজনে বেড়াতে এসে অনেকে এই স্টল থেকে কেনাকাটাও সেরে নিয়েছেন। কেউ গামছা, কেউ লুঙ্গি, কেউ শাড়ি আবার কেউ নানান রংয়ের ফতুয়া কিনেছেন। র্যাব-১৪ এর স্টলে ছিল পাহাড়ি আসবাবপত্র, উপজাতীয় হস্তশিল্প, মনিপুরি ও বার্মিজ পণ্যের সমাহার। অল্প দামে অনেকে মেয়েদের পার্টস, শাড়ি, ফতুয়া, সালোয়ার, কামিজ, শার্টসহ নানা পণ্য কিনেছেন। র্যাব-৫ এর পক্ষ থেকে আয়োজন করা হয় বানর ও পুতুল নাচের। র্যাব-১৩ এর স্টল ছিল রংপুরের ঐতিহ্যবাহী শতরঞ্জি নিয়ে। শহীদ লেফটেন্যান্ট কর্নেল আবুল কালাম আজাদ মিলনায়তনে জমজমাট সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান দর্শনার্থীদের মাতিয়ে রেখেছিল। দেশের নামকরা শিল্পীরা গান ও নাচ পরিবেশন করেন সেখানে।