রবিবার, ২১ এপ্রিল, ২০১৯ ০০:০০ টা

করেন সরকারি চাকরি, হতে চান ব্যবসায়ী নেতা!

রুহুল আমিন রাসেল

সরকারি চাকরিজীবী হয়েও পরিচয় গোপন রেখে ব্যবসা করছেন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পরিদর্শক আসাদুজ্জামান পান্না। তিনিই আবার বাংলাদেশ স্বাস্থ্য বিভাগীয় মাঠ কর্মচারী অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি। এই স্বাস্থ্য পরিদর্শক কেবল ব্যবসাই করছেন না, তিনি এখন ফটোগ্রাফিক ব্যবসায়ীদেরও নেতা। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ নিয়ে তদন্ত চলছে বলে জানিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।

জানা গেছে, পরিচয় গোপন করে ট্রেড লাইসেন্স নিয়ে দীর্ঘদিন যাবৎ ব্যবসা করছেন সরকারি চাকরিজীবী আসাদুজ্জামান পান্না। তিনি বাংলাদেশ ফটোগ্রাফিক অ্যাসোসিয়েশনেরও একজন পরিচালক। সংগঠনটির ২০১৯-২১ মেয়াদের নির্বাচনে প্রার্থীও হয়েছেন আসাদুজ্জামান পান্না। বিষয়টি আইনসম্মত নয় বলে মনে করেন ফটোগ্রাফিক অ্যাসোসিয়েশনের ভোটাররা। এ নিয়ে ১৮ এপ্রিল বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে অভিযোগ করেছেন ফটোগ্রাফিক অ্যাসোসিয়েশনের ভোটার (নম্বর-৩৭) মো. নজরুল ইসলাম। তিনি গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘আমাদের জানা মতে কোনো সরকারি চাকরিজীবী ব্যবসা করতে পারেন না। সেখানে তিনি পরিচয় গোপন রেখে ট্রেড লাইসেন্স নিয়ে ব্যবসা করছেন।’

এ প্রসঙ্গে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উপসচিব (বাণিজ্য সংগঠন) নাহিদা হাবিবা বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘প্রচলিত আইনে এ বিষয়ে স্পষ্ট বক্তব্য নেই। কিন্তু যেহেতু তিনি সরকারি চাকরিজীবী, তাই তিনি কিছু বাধ্যবাধকতা মেনেই চাকরি করছেন। অভিযোগের বিষয়টি তদন্ত করে খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’

এদিকে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে দেওয়া অভিযোগে বলা হয়, বাংলাদেশ ফটোগ্রাফিক অ্যাসোসিয়েশনের ২০১৯-২১ মেয়াদের নির্বাচনের চূড়ান্ত ভোটার তালিকায় জনৈক আসাদুজ্জামান পান্নার নাম রয়েছে। তিনি একজন সরকারি চাকরিজীবী। সরকারি চাকরিবিধি অনুযায়ী তার ট্রেড লাইসেন্স গ্রহণপূর্বক ব্যবসা পরিচালনা করা আইনসম্মত নয়। বিষয়টি সংশ্লিষ্টদের গোচরীভূত করা সত্ত্বেও, তা উপেক্ষা করা হয়েছে। এরপর আসাদুজ্জামান পান্না এ নির্বাচনে প্রার্থীও হয়েছেন। নির্বাচন বোর্ডের কাছে অনিয়মের বিরুদ্ধে ভোটাররা লিখিত দিয়ে পান্নার প্রার্থিতা বাতিল দাবি করেছেন।

তবে অভিযোগ প্রসঙ্গে আসাদুজ্জামান পান্না বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘সরকারি চাকরিবিধি অনুযায়ী আমি ব্যবসা করতে পারি এবং যে কোনো অলাভজনক সংগঠনের সঙ্গে জড়িত থাকতেও পারি।’

ফটোগ্রাফিক অ্যাসোসিয়েশনের নির্বাচন বোর্ডের চেয়ারম্যান আবদুর রাজ্জাক বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘বাণিজ্য সংগঠন আইনে বাধা নেই। যেহেতু তার ট্রেড লাইসেন্স আছে, তাই তিনি ব্যবসায়ী। তার পরও আসাদুজ্জামান পান্নাকে বলেছি আপনি যেহেতু সরকারি চাকরিজীবী, তাই নির্বাচন থেকে বিরত থাকাই ভালো। তিনি কথা শোনেননি।’

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর