রবিবার, ২১ এপ্রিল, ২০১৯ ০০:০০ টা
কৃষি সংবাদ

রঙিন ধান নিয়ে আশাবাদী কৃষকরা

নালিতাবাড়ী (শেরপুর) প্রতিনিধি

রঙিন ধান নিয়ে আশাবাদী কৃষকরা

চারদিকে সবুজ ধানের সমারোহ। এর মধ্যে একখণ্ড  জমিতে বেগুনি ধান। সবুজের বুকে ব্যতিক্রম এই বেগুনি রঙের ধান খেতটি দেখে মানুষ থমকে দাঁড়ায়। এক নজর দেখতে প্রতিদিন বিভিন্ন এলাকা থেকে উৎসুক মানুষ ভিড় করছেন।

আর সেলফি তুলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট দিচ্ছেন। শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলায় প্রথমবারের মতো চাষ হয়েছে বেগুনি রঙের ধান। এ ধান চাষে কৃষকের মধ্যেও ব্যাপক আগ্রহ দেখা দিয়েছে। এ অবস্থায় এ ধান নিয়ে চাষিরা নতুন স্বপ্ন দেখছেন। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, কুমিল্লা মনাগ্রামের কৃষক মনজুর হোসেন ২০১৭ সালে সুন্দরবনে বেড়াতে যান। সে সময় তিনি সবুজ ধান খেতে বেগুনি রঙের কিছু বিরল জাতের ধান দেখতে পান। সেখান থেকে তিনি ওই বেগুনি ধানের বীজ সংগ্রহ করেন। বাড়ি ফিরে অন্যদের সঙ্গে এ ধান নিয়ে কথা বলেন। কিন্তু কেউ এ ধান সম্পর্কে ধারণা পাননি। পরে স্থানীয় কৃষি সম্প্রসারণ কার্যালয়ে যোগাযোগ করেন। সেখান থেকেও এ ধান সম্পর্কে সন্তোষজনক কোনো তথ্য না পেয়ে নিজেই কিছু করার সিদ্ধান্ত নেন। মনজুর ধানগুলো রোদে শুকিয়ে চারা উৎপাদনের চেষ্টা করেন। তার চেষ্টা সফল হয়। পরে ক্ষুদ্র পরিসরে এ ধান রোপণ করেন। এরপর দুই মৌসুমে বীজ সংগ্রহ করেন মনজুর হোসেন। বেগুনি রঙের এ বিরল জাতের ধানের তিনি নাম দিয়েছেন ‘বঙ্গবন্ধু ধান’।

নালিতাবাড়ীর সন্তান সারোয়ার আলম কুমিল্লার ব্যাংক কর্মকর্তা। তিনি মনজুরের সঙ্গে যোগাযোগ করে তার কাছ থেকে ৫ কেজি বীজ সংগ্রহ করে নালিতাবাড়ী উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তার কার্যালয়ে দেন। পরে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা শরিফ ইকবাল এ বীজ উপজেলার ভেদিকুড়া গ্রামের কৃষক শাহিনুর আলমের মাধ্যমে কাঁকরকান্দি-নালিতাবাড়ী সড়কের পাশে ২৫ শতাংশ জমিতে লাগান। শুরুতেই সবুজের মধ্যে ধূসর রঙের খেত দেখে অনেকেই মনে করতেন খেতটি অযতেœ মরে গেছে। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ধান গাছের পাতা গাঢ় বেগুনি রং ধারণ করে। প্রতিদিনই এ খেত দেখতে উৎসুক মানুষ ভিড় করছে। অনেক কৃষক আগামী মৌসুমে এ ধানের চাষ করতে কৃষক শাহিনুর ও কৃষি কার্যালয়ে যোগাযোগ করছেন। মনজুর হোসেন বলেন, একরে ৪০ থেকে ৪৫ মণ ধান পাওয়া যায়। এলাকাভেদে কমবেশি হতে পারে। নতুন এ ধানের নাম দেওয়া হয়েছে। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মো. শরিফ ইকবাল বলেন, ‘কাটার পর এ ধানের পুষ্টিগুণ জানতে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হবে। কৃষকের মধ্যে এ ধান চাষে ব্যাপক আগ্রহ রয়েছে। পর্যায়ক্রমে এ ধান এলাকায় সম্প্রসারণের উদ্যোগ নেওয়া হবে।’

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর