পটুয়াখালীতে যাত্রীবাহী বাসে যাত্রী ওঠানোকে কেন্দ্র করে র্যাবের সঙ্গে বাস-মিনিবাস মালিক-শ্রমিকদের সংঘর্ষের ঘটনায় র্যাবের তিন সদস্যসহ অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন। গতকাল দুপুর আড়াইটার দিকে পটুয়াখালী-কুয়াকাটা মহাসড়কের বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন পল্লী বিদ্যুতের সামনের সড়কে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। আহতদের মধ্যে র্যাব সদস্য জসিম উদ্দিনকে গুরুতর অবস্থায় পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। র্যাব সদস্য সুজন মিয়া (২৬) ও মো. হাবিব (২৮) প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন। বাকি আহতরা শহরের বিভিন্ন ক্লিনিকে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন বলে জানা গেছে। ঘটনার জেরে বাস শ্রমিকরা বরিশাল-কুয়াকাটা মহাসড়কের পটুয়াখালী বাসস্ট্যান্ড এলাকার সড়কে বাস আড়াআড়ি রেখে যান চলাচল বন্ধ করে দেয়। বিষয়টি মীমাংসার জন্য প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং বাস মালিক সমিতি-শ্রমিকদের মধ্যে দফায় দফায় বৈঠক চলে। দেড় ঘণ্টা মহাসড়কে যান চলচল বন্ধ থাকায় চরম ভোগান্তিতে পড়ে কুয়াকাটায় আগত পর্যটকসহ যাত্রীরা।
সংঘর্ষে আহত সুলতান পরিবহনের হেলপার রুবেল, বাস মালিক রিপন মিয়া ও বাদশা মৃধা জানান, পটুয়াখালী পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির সামনে তাদের বাসটি পৌঁছলে কিছু যাত্রী ওঠানামার জন্য বাসটিকে দাঁড় করানো হয়। এ সময় বাসের গেটে দাঁড়িয়ে থাকা সাদা পোশাকে দুই র্যাব সদস্য যাত্রী ওঠা নিয়ে আপত্তি করে। এ নিয়ে বাকবিত ার একপর্যায়ে হেলপার রুবেলকে চড়-থাপ্পর দিলে উভয়ের মধ্যে হাতাহাতি শুরু হয়। এ সময় র্যাব সদস্যরা বাসচালক বাদলকে মারধর করে। খবর পেয়ে বাস মালিক ও শ্রমিকরা এগিয়ে এলে র্যাব সদস্যরা ক্যাম্পে তাদের সদস্যদের খবর দেন। অতিরিক্ত র্যাব সদস্যরা ঘটনাস্থলে এসে বাস মালিক ও শ্রমিকদের ওপর লাঠিচার্জ করেন। এ সময় শ্রমিকরা পাল্টা হামলা চালায়। এতে র্যাবের কয়েকজন সদস্য আহত হয়। এদিকে র্যাবের হামলায় আহত হয়েছেন বাস-মিনিবাস মালিক রিপন মিয়া, মো. শামীম মৃধা, মো. জুয়েল, বাদশা মৃধা, নাসির উদ্দিনসহ বেশ কয়েকজন। পটুয়াখালী র্যাব-৮ এর কোম্পানি কমান্ডার সিনিয়র এএসপি সোয়েব আহমেদ সাংবাদিকদের জানান, বাস মালিক ও শ্রমিকদের সঙ্গে একটু ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে। তা সমাধান হয়েছে। এখন কোনো ঝামেলা নেই।
পটুয়াখালী বাস মালিক সমিতির সভাপতি রিয়াজ উদ্দিন মৃধা জানান, সামান্য ঘটনায় র্যাব সদস্যরা শ্রমিকদের ওপর হামলা চালিয়েছে। এতে বাসচালক বাদল গুরুতর আহত হয়েছে। বেশ কয়েকজন মালিক আহত হয়েছেন। এর প্রতিবাদে শ্রমিকরা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে। পটুয়াখালী র্যাব-৮ এর কোম্পানি কমান্ডার এসে মীমাংসা করে দিয়েছে। দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিলে বিকাল পৌনে ৪টার দিকে শ্রমিকরা তাদের আন্দোলন প্রত্যাহার করে নেয়।পটুয়াখালীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. জসিম উদ্দিন বলেন, সড়ক অবরোধের কথা শুনে আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে র্যাবের অফিসার ও বাস মালিকদের সঙ্গে বসে বিষয়টি মীমাংসা করি। এখন আর কোনো ঝামেলা নেই। সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।