বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০১৯ ০০:০০ টা

জাহালম প্রশ্নে হাই কোর্টের রুলসহ সব কার্যক্রম স্থগিত

নিজস্ব প্রতিবেদক

জাহালম প্রশ্নে হাই কোর্টের রুলসহ সব কার্যক্রম স্থগিত

দুদকের মামলায় বিনা অপরাধে জাহালমের তিন বছর জেল খাটার বিষয়ে হাই কোর্টের জারি করা রুলের শুনানিসহ সব কার্যক্রম স্থগিত করেছে আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত। বিচারপতি নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের হাই কোর্ট বেঞ্চের এখতিয়ার চ্যালেঞ্জ করে দুদকের করা একটি আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে চেম্বার বিচারপতি মো. নুরুজ্জামান গতকাল এ আদেশ দেন।

আদেশের পর দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান সাংবাদিকদের বলেন, চেম্বার আদালত জাহালমের ঘটনায় হাই কোর্টের জারি করা রুলসহ এ মামলার সব কার্যক্রম ১৩ মে পর্যন্ত স্থগিত করেছে। ওই দিন আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে বিষয়টি শুনানির জন্য রাখা হয়েছে। দুদক সংক্রান্ত মামলা নিষ্পত্তির জন্য হাই কোর্টে স্পেশাল বেঞ্চ আছে। এ সংক্রান্ত বিশেষ মামলা নিষ্পত্তির জন্য বিশেষ বেঞ্চও নির্ধারণ করা থাকে। নির্ধারিত এসব বেঞ্চের বাইরে অন্য কোনো বেঞ্চ এ সংক্রান্ত মামলা নিষ্পত্তি করতে পারে না। এ বিষয়ে আপিল বিভাগের একটি রায়ও আছে। এসব বিষয় বিবেচনা করেই চেম্বার আদালত আদেশ দিয়েছে।

 সোনালী ব্যাংকের প্রায় সাড়ে ১৮ কোটি টাকা জালিয়াতির অভিযোগে আবু সালেক নামের এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে ৩৩টি মামলা করে দুদক। কিন্তু তদন্ত কর্মকর্তাদের ভুলে সালেকের বদলে তিন বছর ধরে কারাগারে কাটাতে হয় টাঙ্গাইলের জাহালমকে। এ বিষয়ে জানুয়ারির শেষ দিকে একটি জাতীয় দৈনিকে ‘স্যার, আমি জাহালম, সালেক না’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। সেটি সেদিন বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহসান ও বিচারপতি কামরুল কাদেরের হাই কোর্ট বেঞ্চের নজরে আনেন আইনজীবী অমিত দাশ গুপ্ত। এরপর ২৮ জানুয়ারি হাই কোর্ট বেঞ্চ এ বিষয়ে দুদকের ব্যাখ্যা জানতে কমিশনের চেয়ারম্যানের মনোনীত প্রতিনিধিসহ চারজনকে তলব করে। কারাগারে থাকা ‘ভুল’ আসামি জাহালমকে কেন অব্যাহতি দেওয়া হবে না এবং তাকে মুক্তি দিতে কেন ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে স্বতঃপ্রণোদিত একটি রুলও জারি করা হয়। এরপর দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ দুঃখ প্রকাশ করে ভুলের জন্য দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। আদালতের আদেশে ৩ ফেব্রুয়ারি রাতে গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগার থেকে মুক্তি পান জাহালম। পাটকল শ্রমিক জাহালমের তিন বছর কারাগারে থাকার ঘটনায় তদন্ত কর্মকর্তাদের গাফিলতি ছিল কি না- তা খতিয়ে দেখতে একটি কমিটি করে দুদক। তবে হাই কোর্টে দুদকের পক্ষ থেকে যে ব্যাখ্যা দেওয়া হয়, সেখানে বাংলাদেশ ব্যাংকসহ অন্যান্য ব্যাংকের ওপর দায় চাপিয়ে বলা হয়, ব্যাংকগুলোর অনুসন্ধান প্রতিবেদনের তথ্য-উপাত্তের ওপর ভিত্তি করেই দুদকের তদন্ত কর্মকর্তারা অভিযোগপত্র দিয়েছিলেন। কিন্তু দুদকের ব্যাখ্যায় সন্তুষ্ট না হয়ে ৩৩টি মামলার প্রাথমিক তথ্য বিবরণী (এফআইআর), অভিযোগপত্র (সিএস)সহ যাবতীয় নথি তলব করে হাই কোর্ট।

 

সর্বশেষ খবর