শিরোনাম
বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০১৯ ০০:০০ টা
সংকট চলছেই শিক্ষাঙ্গনে

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে আন্দোলনে শিক্ষার্থীরা

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) ভর্তিসহ বিভিন্ন ফি কমানোর দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন বন্ধে ক্যাম্পাসে সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। গতকাল থেকে অনির্দিষ্ট কালের জন্য সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এদিকে মঙ্গলবার ভোররাতে আন্দোলনরত ২২ শিক্ষার্থীকে আটক করেছে পুলিশ। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নির্দেশে তাদের আটক করে পুলিশ। এরপরেও কর্তৃপক্ষের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে আন্দোলন অব্যাহত রাখে শিক্ষার্থীরা। অপরদিকে বেতন ও ভর্তি ফিসহ বিভিন্ন খাতে ফি কমানোর দাবিতে টানা দ্বিতীয় দিনের মতো ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনসহ ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল করেছে প্রথম ও ২য় বর্ষের শিক্ষার্থীরা। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে ক্যাম্পাসে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। প্রত্যক্ষদর্শীদের সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার সকাল ১১টা থেকে ক্লাস পরীক্ষা বর্জন করে ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়া বিজ্ঞান ভবনের সামনে অনশনে নামে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদভুক্ত পাঁচ বিভাগের প্রায় দুই শতাধিক শিক্ষার্থী। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তারা এ অনশন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেয় তারা। অনশনে কয়েকজন শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়লেও প্রশাসনের কেউ না আসায় দুপুর ২টায় অনুষদের ডিন অফিসে তালা ঝুলিয়ে দেয় তারা। এ সময় অফিসে অবস্থানরত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা আটকা পড়েন। রাত ৯টায় অবরুদ্ধ কর্মকর্তা-কর্মচারীদেরকে উদ্ধার করতে আসেন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মমতাজুল ইসলাম ও ছাত্র-উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. পরেশ চন্দ্র বর্র্মণ। তারা ভবনের ভিতরে ঢুকলে তাদেরকেও অবরুদ্ধ করে রাখে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। পরে রাত ১২টার দিকে তাদের উদ্ধার করতে আসেন সাবেক প্রক্টর অধ্যাপক ড. মাহবুবর রহমান, প্রক্টর (দায়িত্বপ্রাপ্ত) ড. আনিছুর রহমান ও অধ্যাপক ড. আহসান উল আম্বিয়া। এর আগে রাত ১০টা থেকেই গেটের সামনে অবস্থান নেয় পুলিশ। তারা রাত ৪টা পর্যন্ত সমঝোতার চেষ্টা চালালেও ব্যর্থ হন। এরপর রাত সাড়ে ৪টায় ভিতরে ঢুকে ডিন ও ছাত্র উপদেষ্টাকে উদ্ধার করতে চাইলে ছাত্ররা বাধা দেয় এবং স্লোগান দিতে থাকে। এ সময় পুলিশ গেটের তালা ভেঙে ভিতরে ঢুকে আন্দোলনকারীদের ছত্রভঙ্গ করে তাদের উদ্ধার করেছে। কয়েক দফা অভিযান চালিয়ে আন্দোলনস্থল থেকে ২২ শিক্ষার্থীকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এ সময় কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোস্তাফিজুর রহমান, মিরপুর সার্কেলের এএসপি ফারজানা ইসলাম উপস্থিত ছিলেন। এদিকে গতকাল সকাল ৯টার দিকে মাইকিং করে ক্যাম্পাসে সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ করে কর্তৃপক্ষ। একই সঙ্গে শিক্ষার্থীদের পরিচয়পত্র সঙ্গে রাখতে নির্দেশ দেওয়া হয়। এ ছাড়া কোনো বিভাগে ক্লাস-পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়নি। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে ক্যাম্পাসে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। অপরদিকে সকাল ১০টা থেকে আটক শিক্ষার্থীদের মুক্তি ও দাবি আদায়ের লক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছে আন্দোলনকারীরা। একই সঙ্গে বেতন ও ভর্তিসহ বিভিন্ন ফি কমানোর দাবিতে প্রথম ও দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীরা আন্দোলন অব্যাহত রেখেছে। দুপুর ১২টা থেকে টানা দিনেরমতো ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনসহ ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল করছে তারা। ইবি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রতন শেখ জানান, গ্রেফতারকৃত শিক্ষার্থীরা পুলিশি হেফাজতে আছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা শেষে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। উপাচার্য অধ্যাপক ড. হারুন-উর-রশিদ আসকারী বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের পেছনে ভিন্ন কোনো কারণ রয়েছে। গোয়েন্দারা আন্দোলনের আসল ঘটনা উদঘাটনে কাজ করছে।’

সর্বশেষ খবর