শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০১৯ ০০:০০ টা

কোটি নাগরিকের হাতে এনআইডি নেই

বিভিন্ন কাজে ভোগান্তি অনেকেই সেবা নিতে পারছেন না

গোলাম রাব্বানী

কোটি নাগরিকের হাতে এনআইডি নেই

দেশের প্রায় এক কোটি নাগরিকের হাতে নেই জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি)। বিভিন্ন কাজে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে তাদের। অনেকেই বিভিন্ন সেবা নিতে পারছে না। এর আগে নির্বাচন কমিশন একাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে কার্ড দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিলেও সেই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করতে পারেনি তারা। জানা গেছে, একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে প্রায় এক কোটি নাগরিকের ল্যামিনেটেড এনআইডি মুদ্রণের কাজ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু প্রতিষ্ঠানটির মুদ্রিত কার্ড নিম্নমানের হওয়ায় তা গ্রহণ করেনি ইসি। এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী তাদের হাতে ল্যামিনেটেড জাতীয় পরিচয়পত্র তুলে দিতে ব্যর্থ হয় তারা।

নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারা বলেছেন, প্রায় কোটি নাগরিকের হাতে ল্যামিনেটেড জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) তুলে দিতে নতুন উদ্যোগ নিয়েছে ইসি। ২০১২ সালের পর যেসব নাগরিক ভোটার হয়েছেন তাদের হাতে আগামী ৩০ জুনের মধ্যে এনআইডি তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশন সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, জেলা-উপজেলায় জাতীয় পরিচয়পত্র বিতরণ চলছে। আগামী ৩০ জুনের মধ্যে বিতরণ শেষ হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি। এ ছাড়া হালনাগাদে যারা নতুন ভোটার হবে তাদের স্মার্ট জাতীয় পরিচয়পত্র দেওয়ার পরিকল্পনার কথাও জানান ইসি সচিব। তিনি বলেন, হালনাগাদে নতুন ভোটারদের ১০ আঙ্গুলের ছাপ ও চোখের আইরিশ নেওয়া হবে। তাদের স্মার্টকার্ড দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে।  সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, চলতি মাসে ইসির সমন্বয় সভায় আগামী ৩০ জুনের মধ্যে সবার হাতে জাতীয় পরিচয়পত্র দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এতে সভাপতিত্ব করেন ইসি সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ। সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী-উপজেলা/থানা নির্বাচন অফিসে থাকা লেমিনেটেড এনআইডি ক্রাশ প্রোগ্রামের মাধ্যমে বিতরণ করে ইসিতে প্রতিবেদন পাঠাতে বলা হয়েছে। আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তাকে তাদের আওতায় থাকা কর্মকর্তাদের এ বিষয়ে নির্দেশনা দিতে বলা হয়েছে। সূত্র জানায়, এরই মধ্যে যেসব উপজেলা/থানা নির্বাচন অফিসে স্মার্টকার্ড পাঠানো হয়েছে, সেগুলো আগামী ৩০ জুনের মধ্যে নাগরিকদের হাতে পৌঁছে দেওয়া নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া স্মার্টকার্ড মুদ্রণ ও বিতরণ সংক্রান্ত হালনাগাদ প্রতিবেদন পরবর্তী সভায় উপস্থাপন করতে বলা হয়েছে। বৈঠক সূত্র জানিয়েছে, আগামী ৩০ মে এর মধ্যে জাতীয় পরিচয়পত্র সংক্রান্ত যেসব পেন্ডিং আবেদন আছে, সেগুলো নিষ্পত্তি করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। এ ছাড়া এনআইডি সংক্রান্ত আবেদন গ্রহণ ও নিষ্পত্তি, মুদ্রণ ও বিতরণ সংক্রান্ত হালনাগাদ প্রতিবেদন পরবর্তী সভায় উপস্থাপন করতে বলা হয়। সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, হারানো এনআইডি সংক্রান্ত আবেদন গ্রহণ ও নিষ্পত্তি এবং বিতরণের হালনাগাদ প্রতিবেদন আগামী সমন্বয় সভায় উপস্থাপন করতে হবে। এ ছাড়া এনআইডি অনুবিভাগ থেকে যেসব আবেদনের বিষয়ে তদন্ত প্রতিবেদন এবং ডকুমেন্ট সংযোজনের নির্দেশনা রয়েছে তা ১৫ মের মধ্যে অবশ্যই সম্পন্ন করার জন্য নির্দেশনা দিতে হবে। ইসির কর্মকর্তারা বলেছেন, ২০০৭-২০০৮ সালে ছবিসহ ভোটার তালিকা প্রণয়নের পর নাগরিকদের ল্যামিনেটেড এনআইডি কার্ড দেওয়া হয়। ২০১৫ সালের জানুয়ারিতে ৯ কোটি ভোটারের হাতে স্মার্টকার্ড দেওয়ার চুক্তি করে ইসি। এ স্মার্টকার্ড পৌঁছে দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয় ২০১৬ সালের অক্টোবরে। এর পরে নানা জটিলতা সৃষ্টি হয়। তারা জানান, ২০১২ সাল থেকে যেসব ভোটার জাতীয় পরিচয়পত্র পাননি তাদেরও স্মার্টকার্ড দেওয়ার কথা ছিল। কয়েক বছর পর্যন্ত বিষয়টি ‘ঝুলে থাকার’ পর ২০১৭ সালের জুনে কোটি নাগরিককে ল্যামিনেটেড এনআইডি দেওয়ার প্রস্তাব দেয় এনআইডি উইং।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর