শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০১৯ ০০:০০ টা
জব্বারের বলী খেলা

চ্যাম্পিয়ন কুমিল্লার বলী শাহজালাল

মুহাম্মদ সেলিম, চট্টগ্রাম

চ্যাম্পিয়ন কুমিল্লার বলী শাহজালাল

ঐতিহাসিক লালদীঘির ময়দান। রাজনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ ময়দানের মাঝখানেই তৈরি করা হয়েছে ২০ বর্গফুটের বলীর মঞ্চ, যাতে ৫ ফুট বালু দিয়ে আস্তরণ তৈরি করা হয়। এ মঞ্চ ঘিরেই হাজার হাজার দর্শকের আগ্রহ। তারা ঢাকঢোলের তালে তালে করতালি দিয়ে উৎসাহ দিচ্ছেন বিভিন্ন জায়গা থেকে আসা বলীদের। প্রথম ও চ্যালেঞ্জিং রাউন্ডের পর আসে কাক্সিক্ষত সেই ফাইনাল। এবারের ফাইনাল ছিল যেন গত ফাইনালের পুনর্মঞ্চায়ন। ফাইনালে মুখোমুখি হন গতবারের

দুই ফাইনালিস্ট শাহজালাল বলী ও জীবন বলী। হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ে দুজনই খেলেন সমান তালে। দুই বলীর লড়াইয়ে প্রায় ২৫ মিনিট অতিক্রম হওয়ার পর রেফারি ম্যাচ শেষ করতে পয়েন্ট পদ্ধতি চালু করেন। পরে পয়েন্টে বিজয়ী হয়ে নুতন চ্যাম্পিয়ন হন শাহজালাল বলী।

 চ্যাম্পিয়ন ও রানারআপ বলীকে ট্রফির পাশাপাশি দেওয়া হয় নগদ অর্থ। এ ছাড়া প্রথম রাউন্ডে বিজয়ী ২৫ জনকেও পুরস্কৃত করা হয়। এবার খেলা পরিচালনা করেন রেফারি সাবেক কাউন্সিলর আবদুল মালেক। তাকে সহযোগিতা করেন নূর মোহাম্মদ লেদু ও জাহাঙ্গীর আলম। এর আগে বিকাল সোয়া ৪টায় বেলুন উড়িয়ে বলী খেলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশ (সিএমপি) কমিশনার মো. মাহাবুবর রহমান। জব্বারের বলী খেলা ও মেলা ঘিরে নগরজুড়ে বিরাজ করছে উৎসবের আমেজ। বলী খেলাকে কেন্দ্র করে বসেছে কয়েক কিলোমিটার এলাকা জুড়ে মেলা। এ মেলা থেকেই সাংসারিক নিত্য ব্যবহার্য ও গৃহস্থালি পণ্যের চাহিদা মেটান গৃহিণীরা। কী নেই মেলায়- হাতপাখা, শীতলপাটি, ঝাড়ু, মাটির কলস, মাটির ব্যাংক, রঙিন চুড়ি, ফিতা, হাতের কাঁকন, বাচ্চাদের খেলনা, ঢাকঢোল, মাটি ও কাঠের পুতুল, বাঁশি, তৈজসপত্র, আসন, চৌকি, খাট, আলমারি, ফুলদানি, তালপাখা, টব, হাঁড়ি-পাতিল, দা-ছুরি, কুলা, চালন, টুকরি, বিভিন্ন প্রজাতির গাছের চারা, মুড়ি, মুড়কি, লাড্ডু, জিলাপি সবই পাওয়া যাচ্ছে মেলায়। ১৯০৯ সালে চট্টগ্রামের বদরপাতি এলাকার ধনাঢ্য ব্যবসায়ী আবদুল জব্বার সওদাগর ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে যুবসমাজকে ঐক্যবদ্ধ করতে এ প্রতিযোগিতার সূচনা করেন। তার মৃত্যুর পর এ প্রতিযোগিতা জব্বারের বলী খেলা নামে পরিচিতি লাভ করে। প্রতি বছর ১২ বৈশাখ নগরের লালদীঘি মাঠে এই বলী খেলা অনুষ্ঠিত হয়।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর