শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০১৯ ০০:০০ টা

রমজানের আগে ভেজাল বিরোধী সাঁড়াশি অভিযান

আলী আজম

পবিত্র মাহে রমজান সমাসন্ন। এ উপলক্ষে রোজাদারদের ভেজালমুক্ত খাবার উপহার দিতে সাঁড়াশি অভিযান শুরু হয়েছে। প্রতিদিনই রাজধানীজুড়ে এ অভিযান চালানো হচ্ছে। আসছে সফলতাও। ডিএমপি, র‌্যাব, এপিবিএন, বিএসটিআই, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর, ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনসহ সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো এ অভিযান চালায়। তারা বলছেন, রমজানে ভেজালমুক্ত খাবার নিশ্চিত করতে কাজ শুরু করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। ভেজাল খাবারের সঙ্গে জড়িত কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। গত ২৩ এপ্রিল পুরান ঢাকার বাদামতলীর মৌসুমি ট্রেডার্স ও মনির এন্টারপ্রাইজে অভিযান চালিয়ে ৬ টন মেয়াদোত্তীর্ণ ও মানহীন খেজুর জব্দ করে র‌্যাব। প্রতিষ্ঠানগুলো এসব খেজুর ২ বছর মেয়াদ বাড়িয়ে নতুন প্যাকেটজাত করে বিক্রি করছিল। এ অভিযোগে ওই দুই প্রতিষ্ঠানকে ৬৬ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। ঘটনার সঙ্গে জড়িত  থাকার অপরাধে দুই প্রতিষ্ঠানের ৬ জনকে এক থেকে দুই বছর করে কারাদ- দেন র‌্যাব সদর দফতরের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারওয়ার আলম। সংশ্লিষ্টা বলছেন, রমজানে রোজাদাররা সচরাচর মুড়ি, কলা, খেজুর, আম, সফ্ট ড্রিংক পাউডার, কার্বোনেটেড বেভারেজ, ফ্রুট সিরাপ, ফ্রুট জুস, ফ্রুট ড্রিংকস, ভোজ্যতেল, সরিষার তেল, ঘি, পাস্তুরিত দুধ, নুডলস, ইনস্ট্যান্ট নুডলস, লাচ্ছা সেমাই, সেমাই, পানি, ডেক্সট্রোজ মনোহাইড্রেড এ জাতীয় খাদ্য ও পানীয় গ্রহণ করে থাকেন। ভেজালবিরোধী সংশ্লিষ্ট সংস্থা এসবের ওপর বিশেষভাবে নজর রাখবে। বাজারে কলা, আম, পেঁপে, পেয়ারা থেকে শুরু করে আপেল, আঙ্গুর, নাশপাতিসহ দেশি-বিদেশি প্রায় সব ফলেই মেশানো হচ্ছে বিষাক্ত কেমিক্যাল। কেমিক্যালযুক্ত খবারের পাশাপাশি এবার ভেজাল ইফতার সামগ্রীর লাগাম টানা হবে। রমজানে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের অবাধ সরবরাহ, ভেজাল খাদ্য রোধ এবং দ্রব্যমূল্য স্বাভাবিক ও স্থিতিশীল রাখতে আমরা সতর্ক রয়েছি। ভেজালের বিরুদ্ধে আমাদের অবস্থান কঠোর। ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার মো. আছাদুজ্জামান মিয়া জানান, পবিত্র রমজান মাসে ভেজালমুক্ত খাবার নিশ্চিত করতে ও খাবারে যে কোনো ভেজাল প্রতিরোধ করতে ভ্রাম্যমাণ আদালত কাজ করবে। ডিএমপির তত্ত্বাবধানে এ ভ্রাম্যমাণ আদালত সক্রিয় থাকবে। র‌্যাব সদর দফতরের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারওয়ার আলম জানান, সামনে পবিত্র রমজান মাস। এই মাসে দেশে বিপুল পরিমাণ ফলমূলসহ নানা ধরনের খাবারের চাহিদা থাকে। এ সুযোগটা কাজে লাগিয়ে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে অসাদু ব্যবসায়ীরা। ভেজালের বিরুদ্ধে আমরা নিয়মিত অভিযান চালাচ্ছি।

রমজানকে কেন্দ্র করে আলাদা পরিকল্পনা করা হয়েছে। কোনোভাবেই নিম্নমানের ও ভেজাল খাবারের সঙ্গে জড়িতদের ছাড় দেওয়া হবে না। এটা নিয়ন্ত্রণ করা হবে। চলবে মনিটরিংও। ব্যবসায়ীদের নৈতিকতা মেনে ব্যবসা করার অনুরোধ করেন র‌্যাবের এ কর্মকর্তা।

জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের ঢাকা বিভাগীয় কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক আবদুল জব্বার ম ল জানান, প্রতিদিন চারটি করে ভেজালবিরোধী অভিযান চলছে। মে মাসের শুরু থেকে রমজান মাসজুড়ে প্রতিদিন এ অভিযান চলবে। পুরান ঢাকার চকবাজার, মৌলভীবাজার, শ্যামবাজার, কারওয়ানবাজার, খিলগাঁও বাজারসহ গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন বাজারের ব্যবসায়ীদের নিয়ে ভেজালবিরোধী সচেতনতামূলক সভা করা হচ্ছে। দ্রব্যমূল্য সাধারণ ভোক্তাদের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে রাখতে এবং ভেজালমুক্ত পণ্যে উপহার দিতে ব্যবসায়ীদের আহ্বান করা হয়েছে। ব্যত্যয় হলে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর