পাহাড় থেকে বাঘ নেমে এসেছিল চা বাগানে। এই বাঘের শিকার হচ্ছিল কৃষকের গরু। এমন সব খবরে মাইকে ঘোষণা দিয়ে ফাঁদ পেতে বাঘ ধরার চেষ্টা করা হয়েছে সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার লক্ষ্মীপ্রসাদ পশ্চিম ইউনিয়নের লোভাছড়া চা বাগানে। তবে গত বুধবার দিনভর চেষ্টার পর সন্ধ্যায় সে ফাঁদ টপকে পালিয়েছে বাঘ। এ সময় বাঘের হামলায় আহত হয়েছেন কয়েকজন। ভারতের পাহাড় থেকে প্রতিবছরই কানাইঘাটের সীমান্তবর্তী এলাকার লোকালয়ে বাঘ নেমে আসে। তাই বাঘের হামলা থেকে বাঁচতে স্থানীয়দের আগাম প্রস্তুতিও থাকে। শুধু প্রস্তুতি নয়, বাঘ ধরার জন্য কমিটিও রয়েছে স্থানীয়দের।
লোকালয়ে বাঘ নামার খবর পেলে অনেকটা উৎসব করে স্থানীয় গ্রামগুলোর লোকজন বাঘবন্দির চেষ্টা করেন। জাল দিয়ে বাঘ ধরার এই কৌশলকে স্থানীয়রা ‘বাঘ খেওড়’ বলে থাকেন। তবে ‘খেওড়’ দিয়ে ধরলেও বাঘকে পিটিয়ে হত্যা করেন না এলাকাবাসী। আটক বাঘকে তারা তুলে দেন বনবিভাগের কাছে। কয়েক দিন আগে কানাইঘাটের লোভাছড়া চা বাগানের বাঘটিলায় বাঘের সন্ধান পান লোকজন। ২২ এপ্রিল রাতে স্থানীয় সূত্রাবাবুর একটি গরু খেয়ে ফেলে বাঘ। এরপর বাঘ ধরতে প্রস্তুতি নিতে শুরু করেন এলাকাবাসী। গত বুধবার সকাল ৭টায় মাইকে ঘোষণা দিয়ে ‘বাঘ খেওড়’ (বাঘ ধরার ফাঁদ পাতেন) দেন তারা। ‘বাঘ খেওড়’র খবর পেয়ে এলাকার শত শত লোক ঢোল, তবলা নিয়ে লোভাছড়া চা বাগানের বাঘটিলায় জড়ো হন। জাল দিয়ে ঘেরাও করা হয় পুরো টিলার চারপাশ। এরপর শুরু হয় বাঘের সন্ধান। সন্ধ্যা ৭টায় দেখা মেলে বাঘের। বিশালাকার ডোরাকাটা বাঘ। কিন্তু ফাঁদে আটকানো যায়নি বাঘটিকে। জালের ফাঁদ টপকে পাশর্^বর্তী নুনছড়া টিলায় পালিয়ে যায় সেটি। পালানোর সময় বাঘের হামলায় আহত হন কয়েকজন। বাঘ ধরা কমিটির সভাপতি সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ফারুক আহমদ চৌধুরী জানান, ভারতের মেঘালয়ের পাহাড় থেকে বিভিন্ন সময় খাবারের সন্ধানে বাঘ লোকালয়ে চলে আসে। তখন ফাঁদ পেতে বাঘ ধরা হয়। তবে কখনো বাঘকে হত্যা করা হয় না। আটক বাঘকে সুস্থ অবস্থায় বনবিভাগের কাছে হস্তান্তর করা হয়।