শনিবার, ৪ মে, ২০১৯ ০০:০০ টা

একবার উচ্ছেদ আবার দখল

সুরমা পাড়ের ওয়াকওয়ে প্রকল্পের খবর নেই

শাহ্ দিদার আলম নবেল, সিলেট

একবার উচ্ছেদ আবার দখল

নির্বাচনকেন্দ্রিক রাজনীতি থেকে অবসরে যাওয়ার আগে সিলেটের উন্নয়ন ও সৌন্দর্যবর্ধনের বেশ কয়েকটি প্রকল্প হাতে নিয়েছিলেন সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে কিছুটা তাড়াহুড়ো করেই এসব প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তরও স্থাপন করেছিলেন তিনি। এই প্রকল্পগুলোর মধ্যে একটি ছিল সিলেট সার্কিট হাউসের সামনে থেকে পূর্ব দিকে মেন্দিবাগ পর্যন্ত সুরমা নদীর পাড়ের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে সৌন্দর্যবর্ধন ও একটি প্রশস্ত ওয়াকওয়ে নির্মাণ। অর্থমন্ত্রী থাকাবস্থায়ই এ প্রকল্পের দরপত্র আহ্বান করে সিটি করপোরেশন। শেষ পর্যন্ত অর্থাভাবে অনিশ্চয়তায় পড়েছে সাবেক অর্থমন্ত্রীর গৃহীত প্রকল্পটি। তবে নগরভবন কর্তৃপক্ষ বলছে, মন্ত্রণালয় থেকে বরাদ্দ না পেলেও নিজস্ব তহবিল থেকে তারা এই প্রকল্পটি বাস্তবায়নের চেষ্টা চালাবে। সিলেটকে পর্যটনবান্ধব নগরী হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে ২০১৬ সালে ঢাকায় উচ্চ পর্যায়ের একটি বৈঠক ডাকেন তৎকালীন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। ওই বৈঠকে নগরীর ভিতর থেকে পুরাতন কারাগার স্থানান্তর করে সেখানে গ্রিনপার্ক নির্মাণ, নগরীর ভিতর গ্রিন সড়ক নির্মাণ, সুরমা নদীর পাড়ে দৃষ্টিনন্দন ওয়াকওয়ে নির্মাণ, পাঁচটি আধুনিক গোলচত্বর নির্মাণ করাসহ বেশ কয়েকটি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত লালফিতায় বন্দী হয়ে যায় ওই বৈঠকের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে নির্বাচনকেন্দ্রিক রাজনীতি থেকে অবসরে যাওয়ার ঘোষণা দেন মুহিত। তবে এর আগে তিনি সিলেট সার্কিট হাউসের সামনে থেকে কালিঘাট হয়ে মেন্দিবাগ পর্যন্ত সুরমার পাড়ের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে একটি বিকল্প সড়ক ও দৃষ্টিনন্দন ওয়াকওয়ে নির্মাণের উদ্যোগ নেন। ২০১৮ সালের শেষের দিকে ৮০ কোটি টাকার ওই প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তরও স্থাপন করেন তিনি। প্রকল্পটি বাস্তবায়নের দায়িত্ব দেওয়া হয় সিলেট সিটি করপোরেশনকে (সিসিক)। সিসিক সূত্র জানায়, ওই প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে সিলেটের প্রধান বাণিজ্যিক কেন্দ্র কালিঘাটের যানজট কমে আসার পাশাপাশি সুরমা নদীর পাড়ও দখলমুক্ত হবে। এ ছাড়া দৃষ্টিনন্দন ওয়াকওয়ে নির্মাণের ফলে বিকালে নগরবাসী সেখানে হাঁটাচলা করতে পারবেন। সুরমাপাড়ের সৌন্দর্য পর্যটকদেরও আকর্ষণ করবে। সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী নূর আজিজুর রহমান জানান, ওয়াকওয়ে নির্মাণের লক্ষ্যে গত বছরের অক্টোবরে দরপত্র আহ্বান করা হয়েছিল। নদীর পাড়ের অবৈধ স্থাপনাও উচ্ছেদ করা হয়েছে। এরপর প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য মন্ত্রণালয় থেকে বরাদ্দ না পাওয়ায় কাজ শুরু করা যায়নি। আগামী অর্থবছরে বরাদ্দ পেলে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের কাজ পুনরায় শুরু হবে। সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, ‘নদীর তীর থেকে ৩০ ফুট পর্যন্ত যেসব স্থাপনা ছিল তা আমরা এরই মধ্যে উচ্ছেদ করে ফেলেছি। এখন পানি উন্নয়ন বোর্ড দাবি করছে নদীর আরও জায়গা বেদখল রয়েছে। তারা ওই জায়গা উদ্ধারে জরিপ চালাচ্ছে। তাদের জরিপ শেষ হলে মন্ত্রণালয় থেকে বরাদ্দ না পেলেও সিটি করপোরেশনের নিজস্ব তহবিল থেকে ওয়াকওয়ে নির্মাণের কাজ শুরু করব।’

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর