শনিবার, ৪ মে, ২০১৯ ০০:০০ টা

সৌদিতে নিহত ১০ বাংলাদেশির পরিচয় মিলেছে

সৌদি আরব প্রতিনিধি

সৌদি আরবের সাকরা এলাকায় গত বুধবার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে মর্মান্তিক এক সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ১০ বাংলাদেশির পরিচয় পাওয়া গেছে।

নিহত বাংলাদেশি নাগরিকরা হলেন- বাহাদুর (পিতা হাবেজ উদ্দিন, মাতা মালেকা, ঠিকানা ঝগরমান, কালিহাতী, টাঙ্গাইল), পাসপোর্ট নম্বর : BW 0337299। রফিকুল ইসলাম (পিতা আনোয়ার হোসেন, মাতা হীরা খাতুন, ঠিকানা মাধবপুর, বাহাদুরপুর, ভেড়ামারা, কুষ্টিয়া), পাসপোর্ট নম্বর : BW0798074। ইউনুস আলী (পিতা আবদুল খালেক, মাতা আমেনা খাতুন, ঠিকানা রঘুনাথপুর, আলিপুর, ফুলবাড়িয়া, ময়মনসিংহ), পাসপোর্ট নম্বর : BY 0525493। জামাল উদ্দিন মাঝি (পিতা মান্নান মাঝি, মাতা নুরজাহান, ঠিকানা তারাকান্দি, মনোহরদী, নরসিংদী), পাসপোর্ট নম্বর : BN 0571736। গিয়াস উদ্দিন মৃধা (পিতা তফিজ উদ্দিন মৃধা, মাতা মোসা. হামিদা, ঠিকানা তেগরা, মান্দা, নওগাঁ), পাসপোর্ট নম্বর : BL 0177817। মো. জুয়েল (পিতা গিয়াস উদ্দিন, মাতা আমেনা খাতুন, ঠিকানা বাহাদিয়া, পাকুন্দিয়া, কিশোরগঞ্জ), পাসপোর্ট নম্বর : BE 0245406। ইমদাদুল, (পিতা রশিদ, মাতা কাজলী বেগম, ঠিকানা তাতারদী, শেখেরগাঁ, মনোহরদী, নরসিংদী), পাসপোর্ট নম্বর : BX 0400348। মো. মানিক (পিতা রমজান আলী, মাতা মানিকজান, ঠিকানা তুরুকবাড়িয়া, মান্দা, নওগাঁ), পাসপোর্ট নম্বর : BX 0505953। আল আমিন (পিতা আবদুল মান্নান শেখ, মাতা পদেনা বেগম, ঠিকানা দমনমারা, খিদিরপুর, মনোহরদী, নরসিংদী), পাসপোর্ট নম্বর : BP 0049523। মনির  হোসেন (পিতা শামসুল হক, মাতা মমতাজ বেগম, ঠিকানা কস্তূরীপাড়া, কালিহাতী, টাঙ্গাইল), পাসপোর্ট নম্বর : BX 0564818।

মর্মান্তিক এ দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হন আরও চারজন। তাদের বাংলাদেশ দূতাবাস থেকে সুচিকিৎসার বিষয় নিশ্চিত করা হবে বলে জানিয়েছেন রাষ্ট্রদূত গোলাম মসীহ। এ ছাড়া যাবতীয় আইনি প্রক্রিয়া শেষে নিহতদের লাশ দেশে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হবে বলেও জানান তিনি। এদিকে বিভিন্ন স্থান থেকে নিহতদের পরিবারে মাতম সম্পর্কে আমাদের প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর-

নরসিংদী : মনোহরদী উপজেলার তারাকান্দি গ্রামের মান্নান মাঝির ছেলে জামাল উদ্দিন মাঝি, শেখেরগাঁ গ্রামের রশিদ মিয়ার ছেলে ইমদাদুল ও খিদিরপুর গ্রামের আবদুল মান্নান শেখের ছেলে মো. আল আমিনের বাড়িতে চলছে মাতম। নিহত জামালের ভাই মো. কামাল বলেন, ‘৪ লাখ টাকা ঋণ করে মাত্র ২৯ দিন আগে জামাল সৌদি আরব যান। তার চার ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। এখানে তরকারি বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। সংসারে সচ্ছলতা ফেরাতে বিদেশে পাড়ি জমান। কিন্তু ভাগ্য সহায় হলো না।’ সবার ছোট ভাইকে হারিয়ে ইমদাদুলের ভাই মো. মোশাররফ বলেন, ‘৩৬ দিন আগে তাকে বিদেশে পাঠিয়েছিলাম। এক মাস যেতে না যেতেই ভাইয়ের মৃত্যুর খবর! তা মানতে পারছি না। সরকারের কাছে একটাই দাবি- দ্রুত যেন লাশ দেশে আনার ব্যাবস্থা করা হয়।’

নওগাঁ : মান্দা উপজেলার কশব ইউনিয়নের তেগাড়া গ্রামের তফিজ উদ্দিন মৃধার ছেলে গিয়াস উদ্দিন মৃধা ওরফে তোতা (৩৫) ও তুড়ুকবাড়িয়া গ্রামের রমজান আলীর ছেলে মানিকের বাড়িতেও চলছে মাতম। পরিবার ও স্থানীয়সূত্রে জানা গেছে, এক মাস আগে ভাগ্যের চাকা বদলের আশা নিয়ে সৌদি আরব পাড়ি জমান গিয়াস উদ্দিন মৃধা তোতা। সংসারে স্ত্রী শামীমা আক্তার, এক ছেলে সোয়াইদ মৃধা সাফি (১১) ও এক মেয়ে তানিশা আক্তারকে (৩) রেখে গিয়েছিলেন। মাথার ওপর ছিল সাড়ে ৩ লাখ টাকার ঋণের বোঝা।

কুষ্টিয়া : নিহত রফিকুল ইসলামের বাড়ি ভেড়ামারা উপজেলায়। তার ১৫ ও ১০ বছরের দুটি মেয়ে ও ৪ বছরের একটি ছেলে রয়েছে। মৃত্যুর সংবাদ শোনার পর বাড়িতে চলছে মাতম। রফিকের স্ত্রী হীরা খাতুন জানান, চলতি বছরের ২৪ মার্চ রফিক সৌদি আরবে যান। মৃত্যুর ১ ঘণ্টা আগেও পরিবারের সঙ্গে ভিডিওকলের মাধ্যমে কথা হয় তার। বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার দিকে সৌদি আরবে একই গাড়িতে থাকা সহকর্মী রাশিদুলের স্ত্রীর মাধ্যমে তারা জানতে পারেন রফিক সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন। এ দুর্ঘটনায় রাশিদুলও গুরুতর আহত হন। রাশিদুলের বাড়ি ভেড়ামারা উপজেলার জুনিয়াদহ ইউনিয়নে।

 

সর্বশেষ খবর