রবিবার, ৫ মে, ২০১৯ ০০:০০ টা

চট্টগ্রামে পাহাড়ধসের আশঙ্কা

সরিয়ে নিতে প্রশাসনের অভিযান, অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগ, পিডিবির কর্মীদের ওপর হামলা

সাইদুল ইসলাম, চট্টগ্রাম

ঘূর্ণিঝড় ফণীর বড় ধরনের কোনো ঘটনা না ঘটলেও নগরজুড়ে ঝোড়ো হাওয়া ও বৃষ্টি ছিল লক্ষণীয়। এ বৃষ্টি এবং প্রচ- বাতাসের কারণে চট্টগ্রামে পাহাড়ধসের আশঙ্কা করা হচ্ছে। অনেকেই সরকারি ও বেসরকারি মোট ১৭টি পাহাড়ে ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাস করছেন। চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসন এসব পাহাড় থেকে বসবাসরত বাসিন্দাদের অন্যত্র সরিয়ে নিতে ইতিমধ্যে কাজও শুরু করেছে। এতে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের একাধিক টিম নগরীর বিভিন্ন পাহাড়ে অভিযান শুরু করেছে। তাদের সরিয়ে জেলা প্রশাসনের বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্রে নেওয়া হচ্ছে। এর আগে আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে বিভিন্ন স্থানে মাইকিংও করা হয়েছে। সহযোগিতায় মাঠে রয়েছে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন ও রেড ক্রিসেন্টের টিম। চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের স্টাফ অফিসার (জনসংযোগ) মো. রাজীব হোসেন বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ঘূর্ণিঝড় ফণীকে কেন্দ্র করে চট্টগ্রাম নগরীর ৭২টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রয়েছে। এসব আশ্রয়কেন্দ্রে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা থেকে বাসিন্দাদের সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। তাদের শুকনো খাবার ও বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ করা হচ্ছে। যে কোনো সময় পাহাড়ধসের মতো ঘটনার শঙ্কা রয়েছে। তাই আগাম সতর্কতার অংশ হিসেবে ১৭টি ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড়ের বাসিন্দাদের সরিয়ে নিতে অভিযান পরিচালনা করছে জেলা প্রশাসন। চট্টগ্রাম অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. কামাল হোসেন বলেন, মহানগরীর বিভিন্ন সার্কেলের সহকারী কমিশনারদের নেতৃত্বে পরিচালিত এ অভিযানে পাহাড়ের পাদদেশে ঝুঁকিপূর্ণভাবে বাস করা লোকজনকে আশ্রয়কেন্দ্রে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। একই সঙ্গে এসব পাহাড়ে গ্যাস, বিদ্যুৎ ও পানির অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হচ্ছে। চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, চট্টগ্রাম নগরীতে ব্যক্তিমালিকানাধীন ১০টি ও সরকারি মালিকানাধীন সাতটিসহ ১৭টি ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড় রয়েছে। এসব পাহাড়ে ‘মৃত্যুঝুঁকি’ নিয়ে বাস করছে ৮৩৫ পরিবার। ১৬ এপ্রিল চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে পাহাড় ব্যবস্থাপনা কমিটির ১৯তম সভায় এসব পরিবারের লোকজনকে সরিয়ে পাহাড় খালি করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সভায় ৩০ এপ্রিলের মধ্যে এসব পাহাড়ে ইউটিলিটি সার্ভিস (সেবা সংযোগ) বিচ্ছিন্ন এবং ১৫ মের মধ্যে পাহাড় খালি করার নির্দেশ দেন পাহাড় ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি ও বিভাগীয় কমিশনার মো. আবদুল মান্নান।

অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগ, পিডিবির কর্মীদের ওপর হামলা : চট্টগ্রাম নগরীতে পাহাড়ে অবৈধভাবে বসবাসরতদের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে গিয়ে হামলার শিকার হয়েছেন বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। এ সময় বসবাসরতরা বিদ্যুৎ বিভাগের দুটি গাড়ি ভাঙচুরের পাশাপাশি পর্যটন স্পট সি-ওয়ার্ল্ডের বিভিন্ন স্থাপনাও ভাঙচুর করেছে। শুক্রবার আকবর শাহ থানার ফয়’স লেকের কনকর্ড সি-ওর্য়াল্ডের পেছনে এ হামলার ঘটনা ঘটে। পিডিবি চট্টগ্রাম অঞ্চলের প্রধান প্রকৌশলী প্রবীর কুমার সেন বলেন, সি-ওর্য়াল্ডের পেছনে তিন নম্বর ঝিলপাড়ের বিজয়নগর ও জিয়ানগর এলাকায় অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগের একটি ট্রান্সফরমার অপসারণ করতে গেলে সেখানকার বাসিন্দারা প্রথমে বাধা দেয় এবং পরে হামলা চালায়। এ সময় তারা ইটপাটকেল ছুড়ে পিডিবির দুটি গাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত করে। আকবর শাহ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জসিম উদ্দিন বলেন, ‘পাহাড়ে ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাসরতদের সরানোর জন্য বিদ্যুতের লাইন কাটতে গেলে পিডিবি কর্মীদের ওপর হামলা হয়েছে। আমরা খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে গেলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। এ ঘটনায় পিডিবির সহকারী প্রকৌশলী শোভন ভৌমিক বাদী হয়ে একটি মামলা করেছেন।

সর্বশেষ খবর