শুক্রবার, ১০ মে, ২০১৯ ০০:০০ টা

বন্দরের মদনপুর মদনগঞ্জ সড়কের বেহালদশা

চরম ভোগান্তি

নারায়ণগঞ্জ ও সোনারগাঁ প্রতিনিধি

বন্দরের মদনপুর মদনগঞ্জ সড়কের বেহালদশা

নারায়ণগঞ্জ জেলার বন্দর উপজেলার মদনপুর থেকে মদনগঞ্জ গুরুত্বপূর্ণ সড়কটি খানাখন্দে বেহাল -বাংলাদেশ প্রতিদিন

নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলার মদনপুর থেকে মদনগঞ্জ সড়কটি সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। কারণ ব্যস্ততম এ সড়কের পাশে গড়ে উঠেছে ভারী শিল্পপ্রতিষ্ঠান, স্কুল, কলেজ ও হাসপাতাল। তবে ব্যস্ততম এ সড়কটি চলাচলের অনুপযোগী। ভাঙাচোরা রাস্তা দিয়ে চলতে গিয়ে প্রতিদিনই ঘটছে দুর্ঘটনা। সব মিলিয়ে বন্দরের ১৫ লাখ মানুষ চরম ভোগান্তিতে রয়েছে। সরেজমিন দেখা গেছে, ঘনবসতিপূর্ণ এ রাস্তা দিয়ে প্রতিদিন স্কুল-কলেজের হাজারো শিক্ষার্থীসহ সিমেন্ট কোম্পানির গাড়ি ও শত শত ট্রাক চলছে। দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে পরিবহন খাত। অথচ নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলার মদনপুর থেকে মদনগঞ্জ সড়কটি এখন অচলাবস্থায় নিপতিত। মদনপুর থেকে মদনগঞ্জ পর্যন্ত রাস্তাজুড়ে বড় বড় গর্তের কারণে প্রতিনিয়ত দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সঙ্গে এ রাস্তার সংযোগ থাকায় অন্যান্য রাস্তার তুলনায় এ রাস্তায় ভারী যানবাহন যেমন ট্রাক, লরি, কাভার্ড ভ্যানসহ ২৪ ঘণ্টা পণ্যবাহী গাড়ি চলে। রাস্তা বেহাল থাকায় পণ্যবাহী ট্রাক সময়মতো গন্তব্যস্থলে পৌঁছাতে পারে না। সেই সঙ্গে অফিসগামী কর্মব্যস্ত মানুষকে প্রতিদিনই পড়তে হয় মদনপুর থেকে মদনগঞ্জ রাস্তায় তীব্র যানজটে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বন্দরে আসার সুবাদে রাস্তাটি সংস্কার হয়েছিল। এরপর দীর্ঘ আট বছরে এ রাস্তায় মেরামতের কাজ হলেও তা সঠিকভাবে না করায় এক মাসের মধ্যেই আবারও গর্তের সৃষ্টি হয়ে যান চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। আশপাশে গড়ে ওঠা বিভিন্ন শিল্পপ্রতিষ্ঠানের ৭-৮ লাখ শ্রমিক কর্মক্ষেত্রে যায়। শিল্পপ্রতিষ্ঠানকে কেন্দ্র করে ওই এলাকায় এখন ১৪-১৫ লাখ লোকের বাস। কখনো রিকশা উল্টে, কখনো ভ্যান উল্টে আহত হচ্ছে সাধারণ মানুষ।

স্থানীয় মিষ্টি দোকানি কবির মিয়া ও সিমেন্ট দোকানি নূর মোহাম্মদ জানান, সড়কটি মেরামতে প্রায় সময় গর্তে কিছু লোড়া ও বালু ফেলে যায় কর্তৃপক্ষ। কিন্তু বৃষ্টি ও পণ্যবাহী গাড়ি চলার সময় সেই লোড়া ও বালুর অস্তিত্ব আর খুঁজে পাওয়া যায় না। মদনপুর ডিগ্রি কলেজের ছাত্র সিফাত ইসলাম জানান, ‘গত আড়াই বছরে ২০০-এর বেশি দুর্ঘটনা দেখেছি এই সড়কে। এত দুর্ঘটনা ও দুর্ভোগের পরও সড়কটি মেরামতে কার্যকর কোনো উদ্যোগ দেখতে পাইনি।’

এ রাস্তায় চলা ট্রাকের চালক আবদুর রহিম বলেন, ‘খানাখন্দের কারণে আমাদের প্রতিনিয়ত এ রাস্তায় যানজটে পড়ে থাকতে হয়। সময়মতো গন্তব্যস্থলে পৌঁছাতে পারি না। এ ছাড়া জ্বালানি খরচও লাগে কয়েক গুণ বেশি।’

স্থানীয়রা জানান, রাস্তা ভেঙে গর্তের সৃষ্ট হওয়ায় তাদের চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। অভিযোগ করে তারা বলেন, ঠিকভাবে যদি রাস্তা নির্মাণ করত, ঠিকভাবে যদি রোলিং ও পাইলিং করত তাহলে এ অবস্থা হতো না।

এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ১৯ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ফয়সাল মোহাম্মদ সাগর জানান, সড়কটি সিটি করপোরেশনের হলে নির্মাণকাজ বাকি থাকত না। এটি সড়ক ও জনপথ বিভাগের সড়ক।

ব্যস্ততম এ রাস্তার কাজ কবে নাগাদ শুরু হবে- এমন প্রশ্নের জবাবে নারায়ণগঞ্জ সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আলিউর হোসেন বলেন, ‘এ রাস্তাটি চার লেন করা হবে। বর্তমানে যে ভাঙাচোরা ও খানাখন্দ আছে তা ঈদের আগেই মেরামত করা হবে।’

সর্বশেষ খবর