শুক্রবার, ১০ মে, ২০১৯ ০০:০০ টা
প্রকৃতি

বসন্তের পাখি ছোট বাউরি

আলম শাইন

বসন্তের পাখি ছোট বাউরি

পাখির বাংলা নাম, ‘ছোট বসন্ত বাউরি’। ইংরেজি নাম, ‘কপারস্মিথ বারবেট (Coppersmith Barbet)’। বৈজ্ঞানিক নাম, Megalaima haemacephala। এরা নানান নামে পরিচিত, যেমন বসন্ত বউরি, বসন্ত বাওড়ি, বসন্ত বৌরি ইত্যাদি। বসন্তকালে এদের দেখা মেলে। গ্রামের নির্জন রাস্তা ধরে হাঁটলে প্রজাতির ‘টুক্-টুক্-টুক..’ আওয়াজ কানে আসে। অনেক দূর থেকে শোনা যায় সে আওয়াজ। হঠাৎ আওয়াজটি কানে গেলে যে কেউ কামারের হাতুড়ি পেটার আওয়াজ মনে করতে পারেন। বিদঘুটে আওয়াজ হলেও সুরে রয়েছে চমৎকার তাল-লয়। শোনার আগ্রহ জাগে। সবচেয়ে মজার বিষয় হচ্ছে এরা আকারে চড়ুই পাখির সমান হলেও অনেক উচ্চস্বরে ডাকতে পারে। পাখি দেখতে ভারী চমৎকার। প্রথম দর্শনেই ভালো লাগে। সাধারণত এরা বসন্তকালে জনসন্মুখে আসে। অন্য সময়ে চলে যায় আড়ালে অবডালে। তাই বলে এরা কিন্তু পরিযায়ী নয়। দেশি প্রজাতির পাখি। হরেক প্রজাতির দেখা মেলে দেশে। তারমধ্যে এরা অতি সুলভ দর্শন। ঢাকা শহরেও হরহামেশাই দেখা মেলে। চোখ-কান খোলা রাখলে রাজধানীর উদ্যানগুলোতে নজরে পড়তে পারে এদের। উঁচু উঁচু গাছে এদের বিচরণ। ঘন পাতার আড়ালে থাকতে পছন্দ করে। বৃক্ষচারী পাখি; পারতপক্ষে মাটিতে নামেনা এরা। প্রজাতির গড় দৈর্ঘ্য ১৬-১৭ সেন্টিমিটার। কপাল, বুক পরিষ্কার লাল। চোখের দু’পাশ থুতনি ও গলা হলুদ। মুখাবয়ব কালো। পিঠ ঘাসরঙা সবুজ। নিচের দিকে খাড়া খাড়া মোটা রেখা। ওড়ার পালক কালচে। বুক উজ্জ্বল লালের সঙ্গে সোনালি হলুদের পট্টি।  লেজ খাটো। লেজের শেষপ্রান্ত সবুজাভ নীল। চোখের মনি কালচে-ধাতব। ঠোঁট শক্ত মজবুত, কালো। ঠোঁটের গোড়ায় ক’টি শক্ত লোম। পা বাদামি-লালচে।  স্ত্রী-পুরুষ পাখি দেখতে একই রকম। প্রধান খাবার : ছোট ছোট বুনোফল। বট-পাকুড়, বকুল, দেবদারু, পেয়ারা, জাম, আতা, সফেদা, জামরুল ইত্যাদি ফলের প্রতি আসক্তি বেশি। ফল সংকটে পোকামাকড়েও ভাগ বসায়। প্রজনন সময় ফেব্রুয়ারি থেকে এপ্রিল। অঞ্চলভেদে সময়ের হেরফের হয়। যেমন ভারত, শ্রীলঙ্কায় ভিন্ন সময়ে বাসা বাঁধে। তবে সব স্থানেই এরা গাছের খোড়লে বাসা বাঁধে। নিজেরাই খোড়ল করে নেয়। ডিম পাড়ে ৩-৪টি। ফুটতে সময় লাগে ১৪-১৫দিন। শাবক উড়তে শেখে ১৫-২০ দিনে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর