শনিবার, ১১ মে, ২০১৯ ০০:০০ টা
বসুন্ধরায় ‘পুরান ঢাকার ইফতার বাজার’

মুখরোচক বাহারি আইটেমে ক্রেতার উপচে পড়া ভিড়

জিন্নাতুন নূর

মুখরোচক বাহারি আইটেমে ক্রেতার উপচে পড়া ভিড়

শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত রাজধানীর ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরার ২ নম্বর পুষ্পগুচ্ছ হলে ‘পুরান ঢাকার ইফতার বাজার’ এখন জমজমাট। মুখরোচক বাহারি আইটেমের প্রতি ক্রেতাদের আগ্রহ লক্ষ্য করা যাচ্ছে। ফলে আইটেমগুলো কিনতে উপচে পড়া ভিড় জমছে। রমজানের প্রথম শুক্রবার হিসেবে গতকাল পরিবার-পরিজন নিয়ে ব্যতিক্রমী ও মজাদার ইফতারি খাওয়ার আশায় ভোজনরসিকরা ভিড় করেন এই ‘পুরান ঢাকার ইফতার বাজারে’। এখানে ঐতিহ্যবাহী ‘বড় বাপের পোলায় খায়’ আইটেম ছাড়াও কালাভুনা, কাচ্চি, তেহারি, বিভিন্ন পদের কাবাব, শাহি হালিম, বাদাম শরবতসহ অন্যান্য ইফতারি আইটেম পাওয়া যাচ্ছে। সরেজমিন দেখা গেছে, পরিবারের সদস্য, বন্ধুবান্ধবদের নিয়ে মানুষ বিভিন্ন স্টলে গিয়ে ইফতার আইটেম সম্পর্কে খোঁজ নিচ্ছে। লক্ষ্য করা গেছে, ব্যতিক্রমী আইটেমের প্রতিই মানুষের ঝোঁক বেশি। হরেকরকম ইফতারির মধ্যে উত্তরার জসিম উদ্দিন ক্যাটারিংয়ে পাওয়া যাচ্ছে কালাভুনা, লুচি, ফ্রাইড রাইস, কাচ্চি, তেহারি। এর মধ্যে কাচ্চি ৩৫০ ও তেহারি ২৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর লুচি প্রতি পিস ১৫ টাকা আর এর সঙ্গে কালাভুনা প্রতি কেজি পাওয়া যাচ্ছে ১২০০ টাকায়। প্রিমিয়াম ক্যাটারিংয়ে ইফতারের বিভিন্ন আইটেমের মধ্যে বিক্রি হচ্ছে শাহি জর্দা (বড় বাটি ২০০ টাকা), রেশমি জিলাপি প্রতি কেজি ৪০০, আলুর চপ পিস ২০, চিকেন কিমা চপ পিস ৮০, চিকেন সাসলিক ৮০, রেশমি পরোটা পিস ৪০, বাসবৌসা পিস ৮০, মালাই জিলাপি প্রতি কেজি ১০০০, চিকেন কোফতা পিস ৮০, চিকেস মাফেল ৮০ টাকা।

দেখা গেছে, এক বিক্রেতা ক্রেতা আকর্ষণে ‘বড় বাপের পোলায় খায়’, ‘নান্নার কাচ্চি’, ‘নান্নার তেহারি’ ও ‘নান্নার বোরহানি’র নামগুলো উচ্চারণ করছিলেন। তার হাঁকডাকে অনেক ক্রেতা ভিড় জমাচ্ছিলেন নান্না মিয়ার স্টলের সামনে। সেখানে বিশাল একটি পাত্রে চকবাজারের বিখ্যাত ‘বড় বাপের পোলায় খায়’ আইটেমটি বিক্রি হচ্ছিল। এর পাশাপাশি স্পেশাল কাচ্চি ২৫০, মোরগ-পোলাও ১৮০ ও বোরহানি ২০০ টাকা প্রতি লিটার বিক্রি হচ্ছিল। এ স্টলে বিখ্যাত বাদামের শরবতও বিক্রি হচ্ছে। বাদাম শরবতের বড় বোতলের দাম ২৫০ আর ছোট বোতল ১৫০ টাকা। ভোজনরসিকদের জন্য এ স্টলে আরও বিক্রি হচ্ছে গরুর ঝাল ফ্রাই, কালাভুনা ও কবুতরের মাংস। এর মধ্যে দুই পিস কবুতরের মাংস ৫০০, আর কালাভুনা প্রতি কেজি ১২০০ টাকা। এর সঙ্গে মিষ্টিজাতীয় খাবারের মধ্যে রয়েছে পায়েসের বাটি। বড় বাটি ২৫০, আর ছোট বাটি ১৫০ টাকা। এ ইফতার বাজারে এবার তৈরি করা খাবার ছাড়াও নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যদ্রব্যের একটি স্টল দেওয়া হয়েছে। বসুন্ধরা গ্রুপের স্টলটিতে আটা, ময়দা, নুডলস, সুজি, খাবার তেল ইত্যাদি বিক্রি হচ্ছে। রোজা উপলক্ষে আট প্যাকেটের একটি ফ্যামিলি প্যাক নুডলস কিনলে আরেকটি ফ্যামিলি নুডলস ফ্রি দেওয়া হচ্ছে। এর একটি প্যাকেটের দাম ১৩০ টাকা। এ ছাড়া ৮ লিটারের ৭৮৮ টাকার ভোজ্যতেলের দাম ৭০০ আর ৫ লিটারের ৫০৬ টাকার বোতলের দাম রাখা হচ্ছে ৪৫০ টাকা।

উল্লেখ্য, বসুন্ধরার এ ইফতার বাজারে হঠাৎ প্রবেশ করলে মনে হয় এটি বুঝি বিখ্যাত চকের সেই ইফতার বাজার। কারণ একদিকে নবাবি আমলের খাবারের ম-ম গন্ধ, অন্যদিকে চকের ‘বড় বাপের পোলায় খায়...’-এর হাঁকডাকে এ পরিবেশ তৈরি হয়েছে। তা ছাড়া পুরান ঢাকার ঐতিহ্যবাহী ইফতারি সামগ্রীর প্রায় সব আইটেমই এখানে পাওয়া যাচ্ছে। এর সঙ্গে চাইনিজ, ভারতীয় খাবারসহ বিভিন্ন ধরনের তাজা ফলের জুস ও শরবতও বিক্রি হচ্ছে।

সর্বশেষ খবর