শনিবার, ১১ মে, ২০১৯ ০০:০০ টা

বিএনপি নেতা যোগ দিয়েই পেটালেন আওয়ামী লীগ নেতাকে

নিজস্ব প্রতিবেদক, বগুড়া

বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলার গোহাইল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ইউসুফ আলীসহ (৬০) কয়েকজনকে পিটিয়ে আহত করেছেন বিএনপি থেকে আওয়ামী লীগে যোগ দেওয়া একই ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান। আহতরা সবাই প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ আছেন। গতকাল ঘটনার দুই দিন পার হলেও থানায় কেউ অভিযোগ করেননি। জানা যায়, ৮ মে বিকালে শাজাহানপুর উপজেলার গোহাইল ইউনিয়নের ইসলামিয়া স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ মোতাহার  হোসেন মুকুলের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ করেন সিনিয়র শিক্ষক আফজাল হোসেন। অভিযোগ পেয়ে বগুড়া জেলা শিক্ষা অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) আমান উদ্দিন ম ল স্কুলে গিয়ে তদন্ত শুরু করেন। তদন্তকালে অন্য শিক্ষকদের অনুরোধে স্কুলে যান গোহাইল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রবীণ নেতা ইউসুফ আলী, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের আইনবিষয়ক সম্পাদক ফরহাদ হোসেনসহ আরও তিন-চার জন নেতা-কর্মী। তদন্ত চলাকালে কয়েকটি ঘটনা নিয়ে অধ্যক্ষ মোতাহার হোসেন মুকুল ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের আইনবিষয়ক সম্পাদক ফরহাদ হোসেনের বাগ্বিত া শুরু হয়। একপর্যায়ে স্কুল অধ্যক্ষ ফোন করে বিদ্যালয় গভর্নিং বডির সভাপতি ইউপি চেয়ারম্যান আলী আতোয়ার তালুকদার ফজুকে স্কুলে যেতে বলেন। স্কুলে পৌঁছে চেয়ারম্যান ফজু ঘটনা জানতে চান। এতে আওয়ামী লীগ নেতা ফরহাদ ক্ষিপ্ত হয়ে গেলে চেয়ারম্যানের সঙ্গে আওয়ামী লীগ নেতাদের বাগ্বিত া শুরু হয়। খবর পেয়ে উপজেলা যুবলীগ নেতা বাদশার নেতৃত্বে কয়েকজন নেতা-কর্মী মোটরসাইকেলযোগে উপস্থিত হলে পরিবেশ উত্তপ্ত হয় এবং মারপিটের ঘটনা ঘটে। এ সময় চেয়ারম্যান ফজুসহ তার পক্ষের লোকজন সভাপতি ইউসুফ আলী, ফরহাদ হোসেন, আওয়ামী লীগের কর্মী সেলিম হোসেন, আবদুর রশিদ, বাদশা মিয়া, শিপলুসহ আরও কয়েকজনকে গাছের ডাল দিয়ে পিটিয়ে আহত করেন। আহতরা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন। শাজাহানপুর থানার এসআই সুশান্ত জানান, ঘটনার খবর পেয়ে থানা পুলিশ গিয়ে পরিবেশ শান্ত করে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত থানায় মামলা হয়নি। কাউকে গ্রেফতারও করা হয়নি। গোহাইল ইউনিয়ন যুবলীগের সাবেক সভাপতি সেলিম হোসেন জানান, ‘বিএনপি থেকে আওয়ামী লীগে যোগ দিয়েছেন চেয়ারম্যান ফজু। যোগ দেওয়ার তিন বছর পর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতিসহ দলীয় নেতা-কর্মীদের পিটিয়ে আহত করলেন।’

ইউসুফ আলী জানান, তিনি বৃদ্ধ মানুষ। এত বছর আওয়ামী লীগ করেও কখনো কেউ তাকে আঘাত করেনি। অথচ বিএনপি থেকে আওয়ামী লীগে যোগ দিয়ে তার গায়ে হাত তুলল! অভিযুক্ত ইউপি চেয়ারম্যান আলী আতোয়ার তালুকদার ফজু জানান, জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে দায়ের করা অভিযোগ তদন্ত করতে এলে স্থানীয় কয়েকজন দলের নাম ভাঙিয়ে ঝামেলা সৃষ্টি করে। এ ঝামেলা থেকে রক্ষা পেতে তদন্ত কর্মকর্তাকে তদন্তে সহযোগিতা করতে বলা হয়। সেখানে বাইরের লোকজনের উপস্থিতি দেখে তাদের কাছে কারণ জানতে চাইলে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন। এ সময় স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে হাতাহাতি হয়। তার সঙ্গে কারও কোনো মারামারি বা তিনি কাউকে আঘাত করেননি বলে জানান। তিনি আরও জানান, তিনি ২০১৬ সালের ১৬ এপ্রিল বিএনপি থেকে আওয়ামী লীগে যোগ দেন।

শাজাহানপুর থানার অফিসার ইনচার্জ আজিম উদ্দিন জানান, ওই ঘটনায় কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি। সেখানে তেমন কোনো ঘটনাও ঘটেনি।

সর্বশেষ খবর