আগামী বছর এপ্রিলে ঢাকা উত্তর-দক্ষিণ ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনে নির্বাচন করার পরিকল্পনা নিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এপ্রিলের শেষ দিকে এ নির্বাচন করতে মার্চের প্রথম সপ্তাহে তফসিল ঘোষণা করবে ইসি। এ জন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি রাখছে সাংবিধানিক এই সংস্থাটি। এর আগে ২০১৫ সালের ২৮ এপ্রিল তিন সিটিতে একই দিনে ভোট হয়। এদিকে আগামী বছর অনুষ্ঠেয় ঢাকা উত্তর, দক্ষিণ ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনের সব কেন্দ্রে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহার করা হবে বলে জানিয়েছে ইসি। ৫ মে অনুষ্ঠিত ময়মনসিংহ সিটিরও সব কেন্দ্রে ইভিএমে ভোট হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় আগামী বছর অনুষ্ঠেয় তিন সিটি ও পৌরসভার ভোট ইভিএমে গ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইসি। ইসির একজন যুগ্ম সচিব বলেছেন, আগামী বছর এপ্রিলের দিকে ঢাকার দুই সিটি ও চট্টগ্রাম সিটিতে ভোট করার চিন্তা করছে ইসি। এ ক্ষেত্রে ১ মার্চ ভোটার দিবস রয়েছে। তাই ভোটার দিবসের পরপর মার্চের প্রথম সপ্তাহে তফসিল প্রদানের জন্য ইসির কাছে প্রস্তাব দেওয়া হবে। ইসির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ২০১৫ সালের ২৮ এপ্রিল ঢাকা উত্তরে ভোট হওয়ার পর ১৪ মে প্রথম সভা হয়েছিল উত্তর সিটিতে। সে হিসাবে উপনির্বাচনে নির্বাচিত মেয়র ২০২০ সালের ১৩ মে পর্যন্ত দায়িত্ব পালনের সুযোগ পাবেন। আর দক্ষিণ সিটিতে প্রথম সভা হয় ১৭ মে। অর্থাৎ এ সিটির মেয়াদ শেষ হবে ২০২০ সালের ১৬ মে। এ ছাড়া প্রায় কাছাকাছি সময়ে চট্টগ্রাম সিটির মেয়াদও শেষ হবে। ইসির কর্মকর্তারা বলেছেন, ২০১৫ সালের ২৮ এপ্রিল একই দিন ঢাকা উত্তর-দক্ষিণ ও চট্টগ্রাম সিটিতে ভোট গ্রহণ হয়। আর তিন সিটি নির্বাচনের পর ৩৬ ঘণ্টার মধ্যে বিজয়ী প্রার্থীদের নাম-ঠিকানাসহ গেজেট প্রকাশ করে নির্বাচন কমিশন। আর ৬ মে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তিন সিটির মেয়রদের শপথবাক্য পাঠ করান। পরে ২০১৬ সালে নভেম্বরে আনিসুল হকের মৃত্যুতে ঢাকা উত্তরের মেয়র পদ শূন্য হয়। নানা আইনি জটিলতা নিরসনের পর চলতি বছর ২৮ ফেব্রুয়ারি উত্তর সিটির মেয়র পদে উপনির্বাচন হয়। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে মেয়র হন আতিকুল ইসলাম। ৭ মার্চ তিনি মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পালনের শপথ নেন। ২০১৬ সালের নভেম্বরে আনিসুল হকের মৃত্যুতে ঢাকা উত্তরের মেয়র পদ শূন্য হলে উপনির্বাচনের আয়োজন করে নির্বাচন কমিশন। আদালতের স্থগিতাদেশ কাটিয়ে ২৮ ফেব্রুয়ারি সেই নির্বাচন হয়। ঢাকা-চট্টগ্রামের পুরো সিটিতে ইভিএম : আগামী বছর অনুষ্ঠেয় ঢাকা উত্তর, দক্ষিণ ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনের সব কেন্দ্রে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহার করা হবে। এর আগে নির্বাচন কমিশন সভার পর ইসি সচিব (সদ্য বিদায়ী) হেলালুদ্দীন আহমদ এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, আগামী সংসদ নির্বাচনে সবখানে সম্ভব না হলেও অর্ধেক আসনে (১৫০ আসনে) ইভিএম ব্যবহারের পরিকল্পনা রয়েছে ইসির। হেলালুদ্দীন বলেন, স্থানীয় নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার করা হচ্ছে। সব পৌরসভায়ও ইভিএমে ভোটের সিদ্ধান্ত হয়েছে। বর্তমান ইসির অধীনে নতুন ইভিএমে একাদশ সংসদ নির্বাচনে ছয়টি আসনে ভোট হয়। সর্বশেষ ৫ মে ময়মনসিংহ সিটিরও সব কেন্দ্রে ইভিএমে ভোট হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় আগামী বছর অনুষ্ঠেয় তিন সিটি ও পৌরসভার ভোট ইভিএমে গ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইসি। আর সেই লক্ষ্যে ইসি সচিবালয় কাজ করে যাচ্ছে। ইসির নতুন ইভিএম : ২০১৭ সালে বর্তমান ইসির নিজেদের তৈরি নতুন ইভিএম যাত্রা শুরু করে। অধিকাংশ রাজনৈতিক দলের বিরোধিতার মুখে সংসদে ইভিএম চালুও করা হয়। সিটি ভোটে কিছু কেন্দ্রে চালুর পর সংসদে ছয়টি আসনে ইভিএম ব্যবহার করে সমালোচনার মুখেও পড়ে সংস্থাটি। ইতিমধ্যে প্রায় চার হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে দেড় লাখ ইভিএমের জন্য একটি প্রকল্পও (বাস্তবায়নকাল- শুরু জুলাই ২০১৮ থেকে সমাপ্তি জুন ২০২৩) রয়েছে।